সৌভিক মহন্ত

ছবিঃ দেবস্মিত মুখোপাধ্যায়

“আপনারা ওয়েব সিরিজে তো সচিবজিকে দেখেছেন, বাস্তবে এই গ্রামের সচিব কিন্তু আমি”। রিলের ফুলেরা (Phulera) অর্থাৎ বাস্তবের মহোরিয়ায় যখন প্রথমবার সচিবজির সঙ্গে দেখা হল, প্রথম আলাপে এই কথাই বললেন তিনি। না তিনি অভিষেক ত্রিপাঠি (Abhishek Tripathi) নন, মহোরিয়া (Mahodiya) গ্রামের সচিবজির নাম হরিশ যোশী (Harish Joshi)। পঞ্চায়েত ফুলেরার সঙ্গে মধ্যপ্রদেশের মহোরিয়ার কিন্তু বহু মিল রয়েছে। সেখানেও যেমন সচিবজিকে সবকিছু দেখতে হয়, এখানেও সচিবজির কাঁধেই সবচেয়ে বেশি দায়িত্ব।

ওয়েব সিরিজে পঞ্চায়েত (Panchayat) ফুলেরা (Phulera) ছিল উত্তরপ্রদেশের এক প্রত্যন্ত গ্রাম। কিন্তু মজার ঘটনা হল সেই ওয়েব সিরিজের গোটা শুটিংটাই হয়েছে মধ্যপ্রদেশে। সেখানকারই আরও এক প্রত্যন্ত গ্রাম মহোরিয়ায়। চার চারটে সিজিন এসে গিয়েছে। আর সবকটিই সুপার হিট। এই মুহর্তে পঞ্চায়েতের (Panchayat) নাম জানে না কিংবা দেখেনি এমন লোকের সংখ্যা খুব কমই রয়েছে। সেই কারণেই আমরাও চলে গিয়েছিলাম পঞ্চায়েতের (Panchayat) সেই বিখ্যাত গ্রামে। আর সেখানেই আমাদের সঙ্গে দেখা হল সচিবজি থেকে ম্যাডামজির। গ্রামে ঢুকেই সবার প্রথমে চোখ পড়ল সেই আইকনিক ট্যাঙ্ক। আর তাররপরই সেই পঞ্চায়েত অফিস।

পঞ্চায়েতে বাইকে করেই অফিসে এসেছিলেন সচিবজি অভিষেক ত্রিপাঠি। এখানে বাইক নয়, স্কুটি করে এলেন সচিবজি। রিলের সচিবকে এবার আমাদের সামনে বাস্তবের মাটিতে। তাঁর চোখের সামনেই হয়েছে গোটা পঞ্চায়েতের চারটি মরসুমের শুটিং। প্রতিটা মুহূর্তের স্বাক্ষীও তিনি। তাঁর চরিত্রেই তো ওয়েব সিরিজে অভিনয় করেছেন জীতেন্দ্র কুমার অর্থাৎ আমাদের সকলের পরিচিত অভিষেক ত্রিপাঠি। গোটা গ্রামটা জুড়ে যেন রিল আর বাস্তবের এক অভিনব সাদৃশ্য। মহোরিয়ার সচিবজি হরিশ যোশীও (Harish Joshi) অত্যন্ত আপ্লুত।

তিনি আমাদের নিয়ে গেলেন পঞ্চায়েতের অফিসের অন্দরমহলে। পঞ্চায়েতের অন্দরেই ঢুকতেই বললেন, “এই যে দড়জাটা দেখছেন এটা কিন্তু শুটিংয়ের সময় বদলে যান। তবে ওয়েব সিরিজে সচিবজি যেখানে বসেন, আমার বসার জায়গাটা কিন্তু সেরকম নয়। দেখেছেন বেশ সাজানো রয়েছে কিন্তু”।

বাস্তবের সচিবজিই আমাদের নিয়ে পঞ্চায়েতের অফিস ঘুরে দেখালেন। তিনিই আমাদের জানালেন যে শুটিংয়ের সময় তাদের মিটিংয়ের ঘরটা সম্পূর্ণ বদলে যায়। কাজ হয় অন্য জায়গায়। তাদের মিটিংয়ের টেবিল থেকে চেয়ার সরিয়ে, সেখানেই আসে অভিষেক ত্রিপাঠির জন্য টেবিল এবং চেয়ার। বাস্তবের মহোরিয়ায় কিন্তু কোনও সিসিটিভি নেই, কিন্তু ওয়েব সিরিজে রয়েছে। তিনিই আমাদের ঘুরে দেখালেন সচিবজির সেই আইকনিক ঘরটা। এখনও সেখানে সেভাবেই রাখা রয়েছে সচিবজির খাটটা। সেই দুটো চেয়ার একইরকমভাবে রয়েছে গ্রামে। কারণ কয়েকদিন পরেই তো ফের শুটিংয়ের জন্য গ্রামে আসবে পঞ্চায়েতের সচিবজি থেকে প্রধানজিরা।

এখানে শুটিং হওয়া নিবেশ উচ্ছ্বসিতই বাস্তবের সচিবজি হরিশ যোশী (Harish Joshi)। তিনি বলছিলেন, “আমার অভিনয় যখন অন্য কেউ করছে দেখছি, সেটা সত্যিই খুব ভালো লাগে। আর এই শুটিং হওয়ার ফলে একটা ভালো জিনিস এর ফলে সকলে বুঝতে পারছে ভারতে পঞ্চায়েতের কাজ কেমনভাবে হয়। পঞ্চায়েত সচিবের কাজ কী, কতটা কষ্ট করে কাজ করতে হয়। সবথেকে বড় বিষয় পঞ্চায়েত সচিব বলে যে কোনও পদ রয়েছে সেটা সকলে জানতে পেরেছে”।
তবে হ্যাঁ বাস্তবের সচিব এবং রিলের সচিবের কাজের মধ্যে খানিকটা পার্থক্য রয়েছে, সেটা কিন্তু জানাতে ভোলেননি মহোরিয়ার সচিব। তিনি বললেন, “না রিলের থেকে আমার কাজটা খানিকটা আলাদা। আর হ্যাঁ আপনাদের রিলের সচিবজির সঙ্গে দেখা তো হয়েছেই, কাজের ফাঁকে কথাবার্তাও হয়েছে বেশ কিছু”।

চতুর্থ সিজিনে হেরে গিয়েছেন ম্যাডামজি। এবার পঞ্চায়েতের প্রধানের চেয়ারে বসতে চলেছেন ক্রান্তি দেবী। পঞ্চম সিজিনে আবারও এই গ্রামে ফিরবেন সচিবজি অভিষেক ত্রিপাঠি। কিন্তু মহোরিয়ার সচিবজি হরিশ যোশী কিন্তু আর থাকবেন না এখানে। তাঁর কাজ মহোরিয়ায় শেষ। তিনি বদলি হয়ে গিয়েছেন। রিলের সচিবজি এক থাকলেও, এবার বদলে যাচ্ছে মহোরিয়ায় সচিবজি।

–
–
–
–
–
–
–
–