পরিবেশগত দায়বদ্ধতা বজায় রেখে বালি উত্তোলনের লক্ষ্যে রাজ্য সরকার (WB Govt) একটি নতুন উদ্যোগ নিচ্ছে। রাজ্য জুড়ে বিভিন্ন বালি খাদানে (Sand Pit) পরিবেশ ও আইনি মানদণ্ড মানা হচ্ছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে এবার পেশাদার সংস্থাগুলিকে নিযুক্ত করা হবে। পশ্চিমবঙ্গ খনিজ উন্নয়ন ও বাণিজ্য নিগম লিমিটেড ডব্লিউবিএমডিটিসিএল-এর (WBMDTCL) সূত্রে জানা গিয়েছে, এই কাজে উপযুক্ত সংস্থাগুলির প্যানেল তৈরির জন্য ইতিমধ্যেই আগ্রহপত্র আহ্বান করা হয়েছে।
২০২১ সালের নতুন বালি খাদান (Sand Pit) নীতিমালার আওতায় এই প্রকল্প রূপায়ণ করা হচ্ছে। বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে এবং পরিবেশ-বান্ধব উপায়ে বালি উত্তোলন করা ও বেআইনি খাদান কার্যকলাপ বন্ধ করা এই নীতির মূল লক্ষ্। বাড়তি নজরদারি ও আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে এই উদ্দেশ্য পূরণ করা হবে।
শিল্প, বাণিজ্য ও উদ্যোগ দফতরের অধীনস্থ ডব্লিউবিএমডিটিসিএল (WBMDTCL) রাজ্যের বালি খাদান সংক্রান্ত প্রধান নোডাল সংস্থা হিসেবে কাজ করে। তাদের দায়িত্ব হল—নির্দিষ্ট খাদানগুলিতে সমস্ত খনন কার্যক্রম আইনি অনুমোদন ও পরিবেশগত ছাড়পত্র মেনে হচ্ছে কি না, তা নিশ্চিত করা। এই অনুমোদনের মধ্যে রয়েছে খনন পরিকল্পনা, পরিবেশগত ছাড় (ইসি), স্থাপন অনুমতি (সিটিই) ও পরিচালনার অনুমতি (সিটিও) ইত্যাদি।
নোডাল সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, তালিকাভুক্ত সংস্থাগুলি মাটির স্তরে নেমে প্রত্যক্ষ পরিদর্শন করবে এবং তা থেকে একটি পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট প্রস্তুত করবে। এই রিপোর্টে উল্লেখ থাকবে—পরিবেশ ছাড়পত্রে উল্লিখিত শর্ত মানা হয়েছে কি না, নদীতীর ক্ষয়, সড়ক রক্ষণাবেক্ষণ, যান চলাচলের নিয়ন্ত্রণ, বালি পুনঃভরণ হার পর্যবেক্ষণ প্রভৃতি বিষয়ে তথ্য। কোথাও অসামঞ্জস্য ধরা পড়লে, তা চিহ্নিত করে পরিবেশ ও আইনি দিক থেকে মূল্যায়ন করতে হবে এবং সেই সঙ্গে সংশোধনমূলক সুপারিশও করতে হবে।
বালিখাদান পরিদর্শনের কাজ ঘুরিয়ে ফিরিয়ে বিভিন্ন সংস্থার মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হবে এবং তা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শেষ করতে হবে। পরিদর্শনের জন্য সময়সীমা ও দায়িত্ব বন্টন ডব্লিউবিএমডিটিসিএল এবং নিযুক্ত সংস্থাগুলির যৌথ আলোচনায় স্থির হবে।এই ব্যবস্থা আগামী তিন বছরের জন্য কার্যকর থাকবে এবং প্রয়োজনে সময়সীমা বাড়ানো যেতে পারে বলে শর্তে জানানো হয়েছে।
রাজ্য সরকারের (WB Govt) এই পদক্ষেপের মাধ্যমে বালি খাদান সংক্রান্ত কার্যক্রমে স্বচ্ছতা আরও মজবুত হবে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল। একদিকে যেমন পরিবেশ সংরক্ষণ নিশ্চিত হবে, তেমনই পরিকাঠামো নির্মাণের জন্য অপরিহার্য কাঁচামাল সরবরাহও সুনিয়ন্ত্রিত হবে। রাজ্যের এই দৃষ্টিভঙ্গি অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও পরিবেশ সচেতনতার মধ্যে ভারসাম্য স্থাপনের এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
–
–
–
–
–
–
–
–
–
–