শহিদ তর্পণের মঞ্চ থেকে বার্তা দেবেন নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। তাঁর বার্তা শোনার জন্য কোচবিহার থেকে কাকদ্বীপ – জনপ্লাবনে পরিণত হবে কলকাতা। আর কলকাতার সব পথ এসে মিলবে ধর্মতলায় শহিদ স্মরণ মঞ্চে। প্রস্তুতি চূড়ান্ত। তার আগে ১৯৯৩ সালের ২১শে জুলাইয়ের (Ekushe July) স্মৃতিচারণ ও টুকিটাকি পরামর্শ মহানায়ক উত্তম মঞ্চে ‘চায়ের আড্ডা’য়। উপস্থিত ছিলেন তৃণমূল রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ, কলকাতা পুরসভার কাউন্সিলর অরূপ চক্রবর্তী, তৃণমূল সোশ্যাল মিডিয়া ও আইটি সেল রাজ্য সভাপতি দেবাংশু ভট্টাচার্য, তৃণমূল ছাত্র পরিষদ সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য, মৃত্যুঞ্জয় পাল, তারকেশ্বর চক্রবর্তী প্রমুখ।

রবিবার তৃণমূল কংগ্রেস শিবিরে চূড়ান্ত ব্যস্ততা। শহিদ স্মরণ অনুষ্ঠান উপলক্ষে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি চলছে শহরে। তার আগে উত্তম মঞ্চের চায়ের আড্ডায় (Chayer Adda) কুর্নিশ বর্তমান কর্মী সমর্থকদের লড়াইকেও। ১৪ জন শহিদের রক্তের বিনিময়ে পাওয়া সচিত্র পরিচয়পত্র শুধুমাত্র বাংলা নয়, ভারতের ইতিহাসে যে বিশেষ গুরুত্ব বহন করে, তা তুলে ধরলেন তৃণমূল রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। সেই সঙ্গে বর্তমান কর্মীদের সামনে তুলে ধরলেন সেদিনে জনসমুদ্রে বাম হার্মাদ ও সিপিআইএম-এর (CPIM) পুলিশের আক্রমণের কাহিনী।

বামেদের অপপ্রচারকে উড়িয়ে দিয়ে তুলে ধরা হল সেদিনের প্রকৃত চিত্র। কুণাল ঘোষ বর্ণনা করেন, সেদিন যাঁরা সচিত্র পরিচয়পত্রের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছিলেন তাঁরা একজনও সমাজ বিরোধী ছিলেন না। সিপিআইএম বলে সেদিন পুলিশকে আক্রমণের জন্য হামলা হয়েছিল। অথচ সেদিন পুলিশ হাসপাতাল থেকে কলকাতার কোনও হাসপাতালে একজনও পুলিশ কর্মী ভর্তি ছিলেন না। একজন পুলিশের আক্রান্ত হওয়ার রেকর্ড ছিল না। একতরফা হত্যার, গণহত্যার রাজনীতি হয়েছিল। যাতে কেউ সিপিআইএমের বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস না করতে পারে।

ঐতিহাসিক গণহত্যার সকাল থেকে দিনপঞ্জী বর্ণনা করতে গিয়ে কুণাল ঘোষ মনে করিয়ে দেন সেই রক্তাক্ত দিনের কথা। বড় সমাবেশের ঘোষণা থাকলেও কোনও মঞ্চ করতে দেওয়া হয়নি সেদিন মেয়ো রোডে। প্রশাসনিক দৃষ্টিতে একদিক জনসমাবেশ থাকে। অন্যদিকে পুলিশ। মাঝে মঞ্চ থাকে, যা জন সমাবেশ ও পুলিশের মধ্যে ব্যারিকেড থাকে। প্রশাসনিকভাবে পরিকল্পিত গণহত্যার মঞ্চ সেখানেই তৈরি করেছিল সিপিআইএম, বর্ণনা করেন কুণাল।

তবে সেই লড়াই যে শুধু সিপিআইএম-এর বিরুদ্ধে ছিল তা নয়। সেদিন থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লড়াই ছিল কংগ্রেসের ভিতর থেকেই। জাতীয় রাজনীতিতে সিপিআইএম-কে সমর্থন করা কংগ্রেসের ভিতরে থেকে যে রাজ্যের মানুষের জন্য কোনও দাবি আদায় এই রাজ্যে সম্ভব হবে না, তাও স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল তৃণমূল নেত্রীর কাছে। নির্বাচনী লড়াইতেও অংশ গ্রহণ কীভাবে ভারতের রাজনীতির ইতিহাসে তৃণমূলকে প্রতিষ্ঠা দিয়েছে তুলে ধরা হয় একুশের প্রাক্কালের আড্ডা-এ। সেই সঙ্গে কীভাবে এই একুশে জুলাইয়ের মঞ্চ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Mamata Banerjee) আত্মবিশ্বাস দিয়েছে সেই কথা বলতে গিয়ে কুণাল বলেন, কখনও কঠিন, কখনও নির্বাচনী সংখ্যায় তৃণমূল কমে গিয়েছে। সাংসদ কমে গিয়েছে, বিধায়ক কমে গিয়েছে। কিন্তু যখন নির্বাচনী অঙ্কে সিপিআইএমের জালিয়াতিতে তৃণমূলের জন প্রতিনিধি কম, তখনও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আত্মবিশ্বাস দিয়েছে এই একুশে জুলাই। সামনের জনগর্জন দিয়েছে সেই আত্মবিশ্বাস।

আরও পড়ুন: সোমে শহিদ সমাবেশে উত্তম ব্রজবাসি: জানাবেন হেনস্থার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের কথা

সমাজ থেকে রাজনীতি – বারবার সমাজের সমস্যার ঊর্ধ্বে উঠে লড়াইয়ের বার্তা দেবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেনাপতিত্বে থাকবেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায় (Abhishek Banerjee)। সর্বাত্মকভাবে বিজেপির বিরোধিতা করার পাশাপাশি সিপিআইএম-কে এক কণা জমি না ছাড়তে সতর্ক করা হয় আড্ডা থেকে। বিষাক্ত সাপের জন্য কার্বলিক অ্যাসিড তৈরি রাখারও বার্তা দেওয়া হয়।

–

–

–
–
–
–
–