ভিনরাজ্যে বাংলাভাষীদের শুধু হেনস্থাই নয়, রাজ্যের কাছে রীতিমতো চিঠি দিয়ে তথ্য চাইছে ডবলইঞ্জিন সরকার। এই নিয়ে মঙ্গলবার নবান্ন থেকে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। সম্প্রতি ৫২ শ্রমিকের বিষয়ে তথ্য চেয়ে রাজ্যকে চিঠি পাঠায় হরিয়ানা সরকার। তীব্র আক্রমণ করে মমতা বলেন, এরা কি বাংলাটাকে দখল করতে চাইছে? এই ভাবে রাজ্যের কাজ নাক গলানো অসংবিধানিক-বেআইনি বলে অভিযোগ করেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, বিজেপি সরকার (BJP) সীমালঙ্ঘন করছে!

এদিন মমতা জানান, হরিয়ানা (Haryana) থেকে চিঠি দিয়ে ৫২জনের সম্পর্কে জানতে চাইছে। পরিযায়ী শ্রমিকদের আশ্বস্ত করতে বললেন, “কেউ ভয় পাবেন না। আমরা আমাদের কাজ করব। এভাবে বাংলা দখল করতে পারবে না।”

মুখ্যমন্ত্রী জানান, হরিয়ানা সরকারের তরফ থেকে বেছে বেছে পশ্চিমবঙ্গের বেশ কয়েকটি জেলা-উত্তর দিনাজপুর, দক্ষিণ দিনাজপুর, মালদহ, মুর্শিদাবাদ, কোচবিহার, উত্তর চব্বিশ পরগনা-র পুলিশ সুপার এবং জেলাশাসকদের চিঠি পাঠানো হয়েছে। চিঠিতে কিছু নাম উল্লেখ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, ওই নামগুলি যাচাই করে জানাতে হবে। এই কথা জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ”ওরা কী চাইছে, বাংলা দখল করতে? এখানে কি ভাষা সন্ত্রাস চলছে? এ বার জেলা বেছে বেছে মানুষদের সঙ্কটে ফেলার চেষ্টা চলছে। তবে আমরা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি আমরা আমাদের কাজ আমাদের মতো ঠিক করব। কেউ ভয় পাবেন না। এই সব করে ভোটার লিস্ট থেকে নাম বাদ দিয়ে মহারাষ্ট্র ও দিল্লির মতো বাংলা জিতব, তবে বিজেপি ভুল করছে।”

বাংলার বিষয় নিয়ে কীভাবে ভিনরাজ্য হস্তক্ষেপ করে- প্রশ্ন তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, এটা অসাংবিধানিক এবং অনৈতিক। মমতা (Mamata Banerjee) বলেন, ”আমরা ডবল ইঞ্জিন বিজেপি সরকারকে বলব নিজের চরকায় তেল দিন। আপনা যদি মনে করেন এ ভাবে দেশ চালাবেন, তবে দেশ বিভক্ত হয়ে যাবে।” পহেলগামের জঙ্গিদের এখনও ধরতে পারলেন না কেন? প্রশ্ন তুলে মোদি সরকারকে নিশানা করেন মমতা। মণিপুরের অশান্তি ঘিরে অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মাকেও কটাক্ষ করে মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্ন তোলেন, বাংলার ব্যাপারে কী ভাবে অসম হস্তক্ষেপ করে? এটা অসাংবিধানিক এবং অনৈতিক। তিনি বলেন, ”আমরা ডবল ইঞ্জিন বিজেপি সরকারকে বলব নিজের চরকায় তেল দিন। আপনা যদি মনে করেন এ ভাবে দেশ চালাবেন, তবে দেশ বিভক্ত হয়ে যাবে।আমাদের দিক না তাকিয়ে আগে নিজের ঘর সামলান। আগুন লাগলে ঘর বাঁচাবেন কীভাবে ভাবুন।”

সরাসরি বিজেপিকে আক্রমণ করে তাঁর মন্তব্য, “বাংলার উপর অত্যাচার বরদাস্ত করব না। বাংলা আগে এক নম্বরে ছিল, এখনো আছে, ভবিষ্যতেও থাকবে।”এই ইস্যুতে কেন্দ্রের নীরবতাও প্রশ্নের মুখে তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেছেন, “জাতি-ধর্ম-ভাষা বিভাজনের রাজনীতি করছে বিজেপি। এবার পরিযায়ী শ্রমিকদের নিশানা করছে। ওদের রুখতেই হবে।” নবান্ন সূত্রে খবর, ওই ৫২ জন শ্রমিকের সুরক্ষা এবং তথ্য যাচাইয়ের কাজ শুরু করেছে রাজ্য সরকার। প্রয়োজনে হরিয়ানা সরকারের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগের পথে হাঁটবে প্রশাসন।

–

–

–

–

–

–
–
–