বছরে দু’কোটি চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় আসা মোদি সরকার বাস্তবে কর্মসংস্থানের প্রশ্নে সম্পূর্ণ ব্যর্থ—এমনই বিস্ফোরক অভিযোগ তুললেন রাজ্যের মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা তথা বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. অমিত মিত্র। কেন্দ্রীয় সরকারের বেকারত্ব সংক্রান্ত পরিসংখ্যানকে “চালাকি ও বিভ্রান্তিকর” বলে দাবি করলেন তিনি।

সোশ্যাল মিডিয়ায় অমিত মিত্র লেখেন, “এটা অত্যন্ত আশ্চর্যজনক যে, মোদি সরকারের বেকারত্ব সংক্রান্ত সমীক্ষা বাস্তবতা আড়াল করার উদ্দেশ্যে তৈরি। সম্প্রতি এক সরকারি সমীক্ষায় বেকারত্বের হার দেখানো হয়েছে ৪ শতাংশের কাছাকাছি। অথচ আন্তর্জাতিক অর্থনীতিবিদদের মতে, এই তথ্য ভুল এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।”

তিনি অভিযোগ করেন, বিজেপি সরকার বেকারত্ব কম দেখানোর জন্য কৌশলে পরিসংখ্যানের সংজ্ঞাই বদলে দিয়েছে। যেমন অবৈতনিক পারিবারিক শ্রমকে কর্মসংস্থান হিসেবে দেখানো হয়েছে, এমনকী সপ্তাহে মাত্র এক ঘণ্টা কাজ করা মানুষকেও ‘নিযুক্ত’ হিসেবে ধরা হয়েছে। এতে প্রকৃত বেকারদের একাংশ পরিসংখ্যানের বাইরে চলে গিয়েছে।

ড. মিত্র আরও লেখেন, “সরকার বলছে দেশে বেকারত্ব ৪.৯ শতাংশ, অথচ নিরপেক্ষ গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর মনিটরিং ইন্ডিয়ান ইকোনমি (CMIE) বলছে, বেকারত্বের হার ৮.০৫ শতাংশ। বাস্তবে দেশে ৪ কোটির বেশি মানুষ বেকার, যা স্পেনের মোট জনসংখ্যার কাছাকাছি। শুধু তাই নয়, দেশের ৮৩ শতাংশ যুবক-যুবতী কর্মহীন।”

উল্লেখযোগ্যভাবে, কেন্দ্রীয় কর্মিবর্গ মন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী, গত ১১ বছরে সারা দেশে মাত্র ২২ লক্ষ সরকারি চাকরি হয়েছে। জুন ২০২৫-এ যুবসমাজের মধ্যে বেকারত্বের হার বেড়ে হয়েছে ১৫.৩ শতাংশ, যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক।

অমিত মিত্র বলেন, “বেকার সমস্যা নিয়ে মোদি সরকারের প্রচার ও পরিসংখ্যানের মধ্যে ফারাক ক্রমেই প্রকট হচ্ছে। এই গোপনীয়তা ও বিভ্রান্তির রাজনীতি থেকে সরকার সরে এসে প্রকৃত চিত্র তুলে ধরুক—এটাই সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা।”

অর্থনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই মুহূর্তে ভারতের সামনে অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ হল কর্মসংস্থানের ব্যাপক ঘাটতি। কেন্দ্রীয় সরকার যদি এই সমস্যার কার্যকর সমাধানে মন না দেয়, তাহলে আগামী দিনে আরও তীব্র সামাজিক ও অর্থনৈতিক সংকটের মুখোমুখি হতে পারে দেশ।

আরও পড়ুন – এত দুঃসাহস কি করে হয়? স্টুডিও পাড়ার মামলায় প্রশ্ন বিচারপতির

_

_

_
_
_
_
_
_