ধুঁকছে স্ট্যাটিসটিকাল ইনস্টিটিউট! মোদি সরকারের ‘বঙ্গ-বিরোধী’ নীতির অভিযোগে উত্তাল অধ্যাপক ও ছাত্রমহল 

Date:

Share post:

শুধু বাংলা তথা বঙ্গবাসীর প্রতি নয়, মোদি সরকারের বিমাতৃসুলভ আচরণের শিকার হচ্ছেন এ রাজ্যে থাকা বিভিন্ন কেন্দ্রীয় সংস্থাও—এমনই অভিযোগ উঠেছে একাধিক মহল থেকে। স্টেট ব্যাঙ্ক-সহ একাধিক কেন্দ্রীয় সংস্থার সদর দফতর কলকাতা থেকে সরানোর চেষ্টার বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই পথে নেমেছে তৃণমূল কংগ্রেস। এবার কেন্দ্রীয় বঞ্চনার নতুন শিকার, প্রশান্ত চন্দ্র মহলানবিশ প্রতিষ্ঠিত কলকাতার খ্যাতনামা পরিসংখ্যান শিক্ষা প্রতিষ্ঠান—ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিসটিকাল ইনস্টিটিউট (ISI)।

একদিকে চরম আর্থিক অনটন, অন্যদিকে কর্তৃপক্ষের একগুঁয়ে প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত—দুয়ের মাঝে পড়ে সংকটে শতাব্দীপ্রাচীন এই প্রতিষ্ঠান। অধ্যাপক, কর্মী এবং ছাত্রছাত্রীদের একাংশের অভিযোগ, প্রশাসনিক অব্যবস্থার জেরে দ্রুত অবনতি ঘটছে শিক্ষার মান ও গবেষণার পরিবেশে। প্রতিষ্ঠানের প্রধান সমস্যা হিসেবে উঠে এসেছে স্থায়ী অধ্যাপকের অভাব। বহু অধ্যাপক অবসরে যাওয়ার পরেও দীর্ঘদিন ধরে নতুন নিয়োগ করা হয়নি, ফলে একাধিক বিভাগে গবেষণা ও পঠনপাঠন কার্যত স্তব্ধ। আর্থিক অনটনের কারণে বিদ্যমান অধ্যাপক ও গবেষকদের প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো ও সুযোগ-সুবিধাও বিঘ্নিত হচ্ছে।

একজন অধ্যাপক জানান, লাইব্রেরি ও সংগ্রহশালার সংস্কার না হলে গবেষণার ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। পাশাপাশি, নতুন একাডেমিক ভবনের নির্মাণ থমকে রয়েছে, কম্পিউটার ডেস্কের মতো বুনিয়াদি পরিকাঠামোতেও দেখা দিয়েছে ঘাটতি। প্রতিষ্ঠান সূত্রে খবর, বিদেশি ছাত্রছাত্রীদের ভর্তি উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। আন্তর্জাতিক স্তরে স্টুডেন্ট এক্সচেঞ্জ, যৌথ গবেষণা ও প্রকাশনার মতো গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রগুলিও আজ প্রায় স্থবির। অধ্যাপকদের মতে, এই ধারা চলতে থাকলে আগামী শিক্ষাবর্ষে ভর্তিচ্ছুদের সমস্যায় পড়তে হবে।

প্রশাসনিক স্তরেও একাধিক গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। পরিচালন পর্ষদের ভূমিকা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। তাঁদের অভিযোগ, ডিরেক্টরের একতরফা সিদ্ধান্ত, দীর্ঘদিন নির্বাচন না হওয়া, এবং মনোনীত সদস্যদের আধিক্য—এসবই মিলিয়ে প্রতিষ্ঠানটিতে গণতান্ত্রিক ও স্বচ্ছ প্রশাসনের পরিবর্তে চলছে এক গোষ্ঠীকেন্দ্রিক শাসন। পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে, ভবিষ্যতে পড়ুয়াদের স্টাইপেন্ড প্রদান নিয়েও অনিশ্চয়তার আশঙ্কা করা হচ্ছে। নতুন একাডেমিক ভবন আইনি জটিলতায় আটকে থাকায় বি-স্ট্যাট বিভাগের পড়ুয়াদের ক্লাস নিতে হচ্ছে সেমিনার রুমে, যা দীর্ঘমেয়াদি সমাধান নয়।

আরও এক অধ্যাপক বলেন, “মহালানবিশ যে দর্শন ও মানদণ্ড রেখে গিয়েছিলেন, তা থেকে অনেক দূরে সরে এসেছে এই প্রতিষ্ঠান। প্রশাসনিক স্বচ্ছতা, উচ্চমানের গবেষণা এবং আন্তর্জাতিক মর্যাদা বজায় রাখতে অবিলম্বে কেন্দ্রের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন। না হলে এই ঐতিহ্য ধ্বংসের মুখে পড়বে।” এই পরিস্থিতিকে কেন্দ্রের ‘বঙ্গ-বিরোধী’ নীতিরই আরেকটি দৃষ্টান্ত হিসেবে দেখছে তৃণমূল কংগ্রেস। দলের অভিযোগ, বাংলা ও তার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে পরিকল্পিতভাবে পিছিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে।

আরও পড়ুন – নবজাতকের মৃত্যুর মামলায় তদন্ত বন্ধের আবেদন খারিজ করল কলকাতা হাই কোর্ট

_

 

_

 

_

 

_

 

_

 

_

 

_

 

_

 

_

spot_img

Related articles

দক্ষিণেশ্বরের পরিকাঠামো উন্নয়নের খতিয়ান তুলে রানি রাসমণির জন্মদিবসে শ্রদ্ধার্ঘ্য মুখ্যমন্ত্রীর

আজ লোকমাতা রানী রাসমণির ২৩৩তম জন্মদিন। দক্ষিণেশ্বর (Dekkhineswar) কালীমন্দিরের প্রতিষ্ঠাত্রী রানি রাসমণি ১৭৯৩ সালের ২৬শে সেপ্টেম্বর, বাংলা ১২০০...

”মায়ের স্নেহভরা মুখের উন্মোচনে আলোকিত হয় জগৎ”, মহাষষ্ঠীর শুভেচ্ছা অভিষেকের

রবিবার বোধনের মধ্য দিয়ে বাঙালির প্রাণের উৎসবের সূচনা হল।  এই দিনটার অপেক্ষায় বছরভর দিন গুণতে থাকে  দিন গোনার...

”শিউলি এলো, মাদল এলো, ধামসা এলো ঘরে”, গানের মধ্যেই ষষ্ঠীর শুভেচ্ছা মুখ্যমন্ত্রীর

শুরু হয়ে গিয়েছে বাঙালির প্রাণের প্রিয় দুর্গা পুজো। আজ মহাষষ্ঠী।  বোধনের মধ্য দিয়ে পুজোর সূচনা। আকাশে বাতাসে আনন্দের...

মুর্শিদাবাদে কুপিয়ে খুন জমি ব্যবসায়ীকে, এলাকায় তীব্র চাঞ্চল্য

মহা পঞ্চমীর দিনে ব্যবসায়ী খুন মুর্শিদাবাদে। মৃত ব্যবসায়ীর নাম জিন্নাত আনসারি। বয়স ৫৭ বছর।শনিবার দুপুরে ব্যবসায়ী খুনের ঘটনায়...