নাবালিকা ও কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে সম্মতিমূলক সম্পর্কের ক্ষেত্রে বয়সসীমা কমিয়ে আনা যাবে না—এই মর্মে সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) কঠোর অবস্থান নিল কেন্দ্রীয় সরকার। বৃহস্পতিবার একটি গুরুত্বপূর্ণ মামলায় কেন্দ্র জানায়, ‘age of consent’ অর্থাৎ সম্মতিমূলক যৌনতায় বয়সসীমা ১৮-র নিচে নামালে দেশে শিশু নির্যাতনের ঝুঁকি বহুগুণ বেড়ে যাবে। ফলে আইন পরিবর্তনের পথে হাঁটা উচিত নয়।

সরকারের যুক্তি, বর্তমানে POCSO (Protection of Children from Sexual Offences) আইনের আওতায় ১৮ বছরের কম বয়সিদের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক শিশু নির্যাতনের সমান। এই আইন বহু আলোচনার ভিত্তিতে তৈরি এবং শিশুদের সর্বোচ্চ সুরক্ষা দেওয়ার লক্ষ্যেই ১৮ বছর বয়স নির্ধারণ করা হয়েছে। সরকার দাবি করেছে, বয়সসীমা কমালে ‘শিশুদের উপর মনস্তাত্ত্বিক ও সামাজিক চাপে’ নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে, এবং অপরাধীরা এই আইনকে ঘুরপথে অপব্যবহার করতে পারে।

বিগত কয়েকমাস ধরেই সমাজকর্মী ও আইনজীবীদের একাংশ ‘close-in-age’ ছাড় দেওয়ার পক্ষে সওয়াল করছেন। অর্থাৎ, যদি দুই কিশোর-কিশোরীর বয়সের পার্থক্য খুব সামান্য হয়, তবে সেই সম্পর্ককে অপরাধ হিসেবে না দেখা হোক। কিন্তু কেন্দ্র জানায়, এমন ছাড় দিলে ‘আইনের মূল উদ্দেশ্য ক্ষুণ্ণ হবে।’ সরকারের বক্তব্য, এই ছাড় প্রয়োগের সুযোগে অভিযুক্তরা নিজেদের বাঁচাতে বয়স গোপন বা বিকৃত তথ্য পেশ করতে পারেন।

প্রবীণ আইনজীবী ও অ্যামিকাস কিউরি ইন্দিরা জয়সিং কেন্দ্রের অবস্থানের বিরোধিতা করে জানান, ১৬-১৮ বছর বয়সিদের মধ্যে সম্মতিমূলক সম্পর্ককে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা মৌলিক অধিকারের লঙ্ঘন। তাঁর যুক্তি, বর্তমান আইন অনুযায়ী বহু কিশোরের বিরুদ্ধে অপরাধমূলক মামলা দায়ের হচ্ছে, যা ভবিষ্যতের পক্ষে ক্ষতিকর।

এই মুহূর্তে দেশের ১৮ বছরের কম বয়সিদের সম্মতিমূলক যৌন সম্পর্ক এখনও অপরাধ হিসেবে গণ্য হয়। কেন্দ্রের স্পষ্ট মত, আইন বদল নয়, বরং তার কঠোর বাস্তবায়নেই শিশুদের সুরক্ষা সম্ভব। তবে আদালতের রায় এবং সমাজে এই নিয়ে তৈরি হওয়া আলোচনা আগামী দিনে দেশজুড়ে নতুন দৃষ্টিভঙ্গির জন্ম দিতে পারে। আরও পড়ুনঃ কবি রাহুল পুরকায়স্থের প্রয়াণে শোকস্তব্ধ সাহিত্য মহল
–

–

–

–
–
–

–

–
–
–