একদিকে রাজ্যের সরকার ডুয়ার্স এলাকার চা বাগান ও শ্রমিকদের উন্নয়নে লাগাতার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে ক্রমশ অবনমনের দিকে নেমে যাচ্ছে কেন্দ্র সরকার পরিচালিত মাত্র চারটি চা বাগান (tea garden)। বিদেশের শিল্পের গিয়ে দেশে শিল্পের উন্নতির ঢেঁড়া পেটানো মোদি সরকার যে বিদেশের প্রতিনিধিদের কাছে কতটা অসত্য তুলে ধরছেন দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে, তা সংসদে কেন্দ্রীয় বৃহৎ শিল্প মন্ত্রকের মিথ্যাচার থেকেই প্রমাণিত। সামান্য চা শ্রমিকদের সন্তানদের জন্য ক্রেশ (creche) বানিয়ে দিতে পারে না যে মোদি সরকার, তাদের মিথ্যাচারের ভিডিও ফাঁস করলেন তৃণমূল সাংসদ তথা আইএনটিটিইউসি সভাপতি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় (Ritabrata Banerjee)।

রাজ্যসভায় কেন্দ্রীয় বৃহৎ শিল্প মন্ত্রকের কাছে সাংসদ ঋতব্রত প্রশ্ন করেন, কেন্দ্র সরকারের অধীন চারটি চা বাগান – বানারহাট, কারবালা, নিউ ডুয়ার্স ও চুনাহাট্টিতে মোটি কতগুলি ক্রেশ রয়েছে। যদি সেগুলি চালু অবস্থায় না থাকে, তবে তার কারণই বা কী। উত্তরে কেন্দ্রের মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়, চারটি চা বাগানে পাঁচটি ক্রেশ রয়েছে। মন্ত্রকের দেওয়া হিসাবে খাতায় কলমে যে তথ্য উঠে আসে, তার থেকে বাস্তবতা যে অনেক দূরে তা জানতেন তৃণমূল সাংসদ। ফলে স্থানীয় চা বাগান কর্মীদের থেকে সেই ক্রেশগুলির ছবি ও ভিডিও চেয়ে পাঠান তিনি। আর সেই ছবিতেই ফাঁস হয়ে যায় কেন্দ্রের মোদি সরকারের মিথ্যাচার।

আগের সমস্যা থেকে শিক্ষা নিয়ে কেন্দ্রের অধীনস্ত চা বাগান গুলি ও তার শ্রমিকদের উন্নয়ন নিয়ে ঋতব্রত জানান, এই চারটি শ্রমিকদের সমস্যা নিয়ে কনভেনশন করেছিলাম। সেখান থেকে যে বাস্তবতা উঠে আসে সেখানে নানা সমস্যার মধ্য়ে উঠে আসে এই চা বাগানে কোনও অপারেটিং ক্রেচ হাউস নেই।

তা সত্ত্বেও যে মিথ্যাচার কেন্দ্রীয় মন্ত্রকের তরফে করা হয়েছে তা সাফ তুলে ধরে ঋতব্রত বলেন, কেন্দ্রীয় বৃহৎ শিল্প মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে চারটি চা বাগানে পাঁচটি অপারেটিং ক্রেশ হাউস রয়েছে। সেই পাঁচটি ক্রেশ হাউসের ভিডিও করেছেন চা বাগানের শ্রমিকরা। এগুলোকে কীভাবে সরকার অপারেটিং ক্রেশ হাউস বললেন। কীভাবে সংসদে সরকার অসত্য কথা বললেন। চা বাগানের শ্রমিকরা জানেন তাঁদের ক্রেশ হাউস নেই। যে ভয়ানক ছবি, ভিডিও এসেছে। এই চা বাগানগুলির (tea garden) মালিক মোদি সরকার। এগুলো মানুষের থাকার জন্য নয়। এখানে জানোয়ার রাখাও কঠিন। টিনের গোয়াল ঘরের মতো।

আরও পড়ুন: কেন্দ্রবিরোধী আন্দোলনে তৃণমূলকে সর্বাধিক গুরুত্ব: কংগ্রেসের মন বদলে ব্রাত্য বাম!

এই চার চা বাগানে কেন্দ্রের ধারাবাহিক বর্ণনা করে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে এই চা বাগানগুলির দায়িত্ব নেওয়ার আবেদন জানান ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানান, একদিকে এটা রয়েছে। অন্যদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন গোটা ডুয়ার্সে ক্রেশ হাউস তৈরি করার সিদ্ধান্ত। মুখ্যমন্ত্রীকে অনুরোধ করব এই চা বাগানগুলিতে ক্রেশ হাউস তৈরি করে দেওয়ার। যদিও বাগানের মালিক যেহেতু মোদি সরকার, সেক্ষেত্রে তাঁরা অনুমতি দেন কি না দেখা যাবে। এই চা বাগানগুলিতে ধারাবাহিক বঞ্চনা। এই বাগানগুলিতে পিএফ নেই। এই বাগানগুলিতে সপ্তাহের পর সপ্তাহ শ্রমিকরা মজুরি পাচ্ছেন না। অপারেটিং ক্রেশ (operating creche) নেই। ট্রাক্টরে বাঁশ বেঁধে শ্রমিকদের ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠানো হচ্ছে। এবং সবথেকে বড় কথা – কেন্দ্রের সরকার অম্লাম বদনে সংসদে মিথ্যা কথা বলছেন।

–

–

–

–

–
–
–
–