নির্বাচনে কারচুপি করতে নির্বাচন কমিশনকে দিয়ে স্পেশাল ইনটেন্সিভ রিভিউ। বিহারের এসআইআর (SIR) প্রক্রিয়া চলার মাঝেই বিজেপি-কমিশ আঁতাঁতে স্পষ্ট সেই কারচুপি। বিজেপি বাংলায় জিততে না পেরে একদিকে বাঙালিদের উপর হামলা ও অন্যদিকে ভোটার তালিকা (voter list) থেকে বাঙালিদের বাদ দেওয়ার যে রাজনীতি শুরু করেছে বিজেপি ও নির্বাচন কমিশন, তার বিরুদ্ধে একের পর এক প্রমাণ তুলে সরব তৃণমূল সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। সেই সঙ্গে বাঙালি অস্মিতায় আঘাত আনা বিজেপির বিরুদ্ধে সংসদে তৃণমূল সাংসদরা যে বাঙলাতেই সরব হতে চলেছেন, অধিবেশনে যোগ দিতে দিল্লি রওনা দেওয়ার আগে স্পষ্ট করে গেলেন অভিষেক।

সংসদে বিরোধীদের পক্ষ থেকে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মুখ হিসাবে সরব হবেন তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তার আগে বিজেপি ও নির্বাচন কমিশনের অশুভ যোগাযোগ নিয়ে ধুইয়ে দিলেন অভিষেক। বিহারে যেভাবে কাজ হচ্ছে তার মুখোশ খুলে অভিষেক বলেন, গতকাল বিহারের ঘটনা। সাধারণ মানুষের নাম বাদ দিয়ে কুকুরের নামে রেসিডেন্সিয়াল সার্টিফিকেট (domicile certificate) বার করে ভোটার আইডি কার্ড (voter id card) হয়েছে। মানুষের ভোটাধিকার ছিনিয়ে নিয়ে কুকুরের নামে রেসিডেন্সিয়াল সার্টিফিকেট হচ্ছে। এই রেসিডেন্সিয়াল সার্টিফিকেট এমন একটি নথি যা এসআইআর-এ নির্বাচন কমিশন (ECI) গ্রহণ করছে। সাধারণ মানুষের অধিকার ছিনিয়ে নিয়ে কুকুরের নামে ভুয়ো ভোটার আইডি কার্ড করে যাতে নির্বাচনের সময়ে ভোট লুঠ করে বিজেপিকে বাড়তি সুবিধা করে দেওয়া যায়।

কীভাবে বিজেপির নির্দেশে এই প্রথম নয়, বছরের পর বছর নির্বাচন কমিশন (ECI) কাজ করেছে, তার উদাহরণ তুলে অভিষেক বলেন, একটা পার্টিকে সুযোগ করে দেবে বলে তার তল্পিবাহকের কাজ করছে। আগেও কোচবিহারে শীতলকুচিতে যখন কেন্দ্রীয় বাহিনী নিরস্ত্র নিরীহ মানুষকে দিনের আলোয় গুলি করে মারল। কোভিড দ্বিতীয় ওয়েভের সময়ে এক দফায় নির্বাচন না করে আট দফায় নির্বাচন করেছে। যতদিন গেছে তত বিজেপির চাটুকারিতা করেছে।

তবে যে বাংলার মানুষকে ‘শায়েস্তা’ করতে বিজেপি এই এসআইআর করছে সেই এসআইআর (SIR) বা নির্বাচনকে যে বাংলার মানুষ ভয় পায় না, স্পষ্ট করে দেন তৃণমূল সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। যে কোনও সময়ে নির্বাচন হলেই যে প্রস্তুত বাংলার শাসকদল। আর সেই কথা বুঝতে পেরেই প্রতিহিংসা পরায়ণ বিজেপি রাজ্যে রাজ্যে বাঙালিদের উপর অত্যাচার করছে। সেই অভিসন্ধি তুলে ধরে অভিষেকের দাবি, বিজেপির নির্লজ্জ রাজনীতি, বাংলায় হেরেছে বলে বাংলার মানুষের টাকা বন্ধ। বাংলার মানুষের ভোটাধিকার ছিনিয়ে নেব। বাঙালিদের উপর অত্যাচার করব। বাংলার মাটি, মাদার টেরেসাকে ধরলে, চারটে নোবেল দিয়েছে। এরা বাংলার ইতিহাস জানে না।

বাংলার মানুষের উপর অত্যাচারে বাংলার সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশের অজুহাত দিচ্ছে বিজেপি। সেখানেই কেন্দ্রের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী থেকে বিএসএফ-এর আধিকারিকদের পদত্যাগ দাবি করেন অভিষেক। সেই সঙ্গে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে ব্যর্থ বিজেপি নিজেদের ব্যর্থতা ঠেকাতেই যে বাংলার উপর দায় চাপানোর চেষ্টা ও বাঙালি হেনস্থা, সেই মুখোশ খুলে অভিষেক বলেন, পহেলগামে ২৬ জন মারা গেল। সেই চারজন জঙ্গি কোথায়। ভারত সরকারের কাছে কোনও জবাব নেই। বিদেশ মন্ত্রকের স্ট্যান্ডিং কমিটির বৈঠকে আমি প্রশ্ন করেছিলাম। তারা আমার প্রশ্ন এড়িয়ে গিয়েছে। লোকসভায় প্রশ্ন করেছি। উত্তর পাইনি। সীমান্ত দিয়ে তারা ঢুকল কোথায়? মশা-মাছি নয়। বড় বড় একে-ফর্টি সেভেন নিয়ে কী করে ঢুকল। এখনকার লেফটেন্যান্ট গভর্নর বলছেন, গোয়েন্দা ব্যর্থতা। তারপরেও গোয়ান্দা প্রধানকে কেন এক্সটেনশন দিলেন।

আরও পড়ুন: নিজে বাঁচতে সচিবকেও ‘প্রতারণা’ মিঠুনের! চিৎপুর থানায় দায়ের FIR-এ পদক্ষেপ দাবি কুণালের

নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে ও বিভাজনের রাজনীতি ঢাকতে যে বাংলা বিরোধিতায় নেমেছে বিজেপি তার বিরুদ্ধে এবার সংসদে সরব হওয়ার পালা। সেই প্রসঙ্গেই অভিষেক জানান, সোমবারই অপারেশন সিন্দুর নিয়ে কেন্দ্রের সরব হবেন সাংসদ সায়নী ঘোষ। তিনি বাংলাতেই বক্তব্য রাখবেন। এর আগেও বাংলার সাংসদরা সংসদের দুই কক্ষে বাংলায় বক্তব্য রেখেছেন। বাংলার উপর পূর্বপরিকল্পিত অত্যাচারের প্রতিবাদ কীভাবে করতে হয়, বাংলার মানুষ তা জানেন, দাবি অভিষেকের।

–
–

–

–
–
–
–