সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন রাজ্যে বসবাসকারী বাংলাভাষী মানুষদের উপর যে হারে আক্রমণ, অত্যাচার ও সন্দেহের পরিবেশ তৈরি হয়েছে, তা নিয়ে উদ্বেগের সুর চড়িয়েছে নাগরিক সমাজ ও মানবাধিকার সংগঠনগুলি। অভিযোগ উঠছে—বাংলা ভাষা বললেই ‘বাংলাদেশি’ তকমা লাগিয়ে শরণার্থী শিবিরে পাঠানো হচ্ছে বহু নিরপরাধ মানুষকে। কেন্দ্রীয় সরকারের মদতে এনআরসি-সদৃশ পদক্ষেপ এবং বাংলা ভাষাভাষীদের নিশানা বানানোর বিরুদ্ধে জোরালো প্রতিবাদে নামল সংবিধান বাঁচাও দেশ বাঁচাও মঞ্চ।

সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, “দেশের মুসলমান ও বাংলাভাষী জনগোষ্ঠীকে পরিকল্পিতভাবে কোণঠাসা করার এক গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলোতে প্রবাসী বাঙালিদের উপর হামলা ও নির্যাতনের ঘটনা বেড়ে চলেছে।” গুরগাঁও, বেঙ্গালুরু, আমেদাবাদ—প্রতিটি শহর থেকেই উঠে আসছে উদ্বেগজনক ভিডিও, যেখানে দেখা যাচ্ছে শুধুমাত্র বাংলা বলার অপরাধে মহিলাদের পর্যন্ত বেধড়ক মারধর করা হচ্ছে। হামলাকারীদের অনেকেই বিজেপি ঘনিষ্ঠ বলেই অভিযোগ।

সংবিধান বাঁচাও দেশ বাঁচাও মঞ্চ- এর বক্তব্য, “এটা SIR নয়, এটা হল পিছনের দরজা দিয়ে এনআরসি চাপিয়ে দেওয়ার চক্রান্ত। বাংলাভাষী মানেই বাংলাদেশি—এই ধারণা মিথ্যে ও বিভ্রান্তিকর। নাগরিকদের ধর্ম, ভাষা ও সংস্কৃতির ভিত্তিতে বিভাজন ঘটানো সংবিধানের মূল চেতনার বিরোধী। অবিলম্বে এই নিপীড়ন বন্ধের দাবি জানিয়ে মঞ্চের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে—”ভারতবর্ষ একটি বহুভাষিক, বহু-ধর্মের, বহু-জাতির দেশ। এই গৌরব ও বৈচিত্র্য আমাদের সাংবিধানিক পরিচয়ের ভিত্তি। কিন্তু বর্তমানে শাসকেরা এই বহুত্ববাদকে আক্রমণ করে একচেটিয়া মতাদর্শ চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে। এর বিরুদ্ধে প্রতিটি রাজনৈতিক দল ও সচেতন নাগরিকের এগিয়ে আসা প্রয়োজন।

অবিলম্বে সমস্ত রাজ্যে বসবাসকারী বাংলাভাষীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা, রাজ্য সরকারকে সক্রিয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা এবং সংবিধান রক্ষা করার দাবিতে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ধারাবাহিক আন্দোলনের ডাক দিয়েছে সংবিধান বাঁচাও দেশ বাঁচাও মঞ্চ। তাদের বক্তব্য, এ দেশ সকলের, শুধু এক শ্রেণির মানুষের নয়। ধর্ম বা ভাষার পরিচয়ে বিভেদ নয়, ভারতবর্ষ গড়ে উঠেছে সহাবস্থানের ভিত্তিতে। সংবিধান রক্ষা করাই এখন প্রথম ও প্রধান কর্তব্য।

আরও পড়ুন – প্রাথমিক শিক্ষায় কুর্মালি ভাষা চালুর উদ্যোগ! তপশিলি জাতি উপদেষ্টা পরিষদের মত চাইল রাজ্য

_

_

_

_

_

_
_
_
_
_