শহরের বুকে ছড়িয়ে থাকা ইতিহাসকে নতুন প্রজন্মের কাছে আরও সহজবোধ্য ও আকর্ষণীয় করে তুলতে অভিনব উদ্যোগ রাজ্য সরকারের। কলকাতার প্রাণকেন্দ্র ময়দান এলাকায় থাকা ২৬টি ঐতিহাসিক মূর্তিতে এবার কিউআর কোড বসাল রাজ্যের পূর্ত দফতর। মোবাইলে স্ক্যান করলেই মিলবে ঐতিহাসিক তথ্য, মনীষীদের জীবনকথা এবং মূর্তিগুলির নির্মাণ-সম্পর্কিত বিশদ বিবরণ।

পূর্ত দফতর সূত্রে খবর, এই উদ্যোগের মাধ্যমে পর্যটক ও সাধারণ মানুষের কাছে বাংলার গৌরবোজ্জ্বল অতীতকে প্রযুক্তির মাধ্যমে তুলে ধরা হচ্ছে। স্ক্যান করলেই মিলবে মূর্তির উচ্চতা, নির্মাণ খরচ, শিল্পীর নাম, উন্মোচনের দিন, উদ্বোধকের নামের মতো নানা তথ্য। এর পাশাপাশি থাকবে মনীষীদের জীবনী ও তাঁদের কীর্তির সংক্ষিপ্ত বিবরণ।

মহাত্মা গান্ধী, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু, স্বামী বিবেকানন্দ, রাজা রামমোহন রায়, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, ক্ষুদিরাম বসু, মাস্টারদা সূর্য সেন, প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার, গোষ্ঠ পাল-সহ বাংলার ইতিহাস ও সংস্কৃতির প্রতিনিধিত্বকারী মনীষীদের মূর্তি রয়েছে এই তালিকায়। ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল, ইডেন গার্ডেন, ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ড ঘিরে ছড়িয়ে রয়েছে এই মূর্তিগুলি, যা রোজ হাজার হাজার পর্যটক ও শহরবাসীর আগমনের কেন্দ্রবিন্দু।

এই উদ্যোগের পাশাপাশি রাজ্য সরকার প্রকাশ করেছে একটি আকর্ষণীয় গ্রন্থ—‘ময়দান ক্রনিকলস: ডিজিটাল রোডম্যাপ অব স্ট্যাচুজ ইন ময়দান এরিয়া’। বইটিতে প্রতিটি মূর্তির উচ্চ রেজোলিউশন ছবি, নির্মাণ তথ্য, ইতিহাস ও প্রেক্ষাপট একসঙ্গে তুলে ধরা হয়েছে। পূর্তমন্ত্রী পুলক রায়ের নির্দেশে প্রতিটি বিধায়কের কাছে বইটি পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

প্রশাসনের বক্তব্য, শুধুমাত্র ছবি তুলে চলে যাওয়ার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে এসে মূর্তির সামনে দাঁড়িয়ে মানুষ যেন তাঁদের কীর্তির গভীরে প্রবেশ করতে পারেন, সেটাই এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য। ইতিহাস জানার দরজা খুলে দিতে শহরের মূর্তিগুলিকে ঘিরে তৈরি হল এক আধুনিক, ডিজিটাল জানালা—যা বাংলার গর্বিত অতীতকে নতুন প্রজন্মের সামনে উপস্থাপন করতে এক বড় পদক্ষেপ বলে মনে করছেন বিশিষ্ট মহল।
আরও পড়ুন- সেতুর উপর আটকে ট্রেন! প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে ভাল্ব জুড়লেন সহ-চালক

_

_

_
_
_

_

_
_
_
_