আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন থেকে ভারতীয় নভোচর শুভাংশু শুক্লর প্রত্যাবর্তনের পরপরই ফের এক নয়া মহাকাশ মিশন ঘিরে উৎসাহ ও কৌতূহলের ঝড়। বুধবার বিকেল পাঁচটায় শ্রীহরিকোটার সতীশ ধাওয়ান মহাকাশ কেন্দ্র থেকে উৎক্ষেপণ হতে চলেছে নিসার উপগ্রহ। ভারত ও আমেরিকার যৌথ উদ্যোগে নির্মিত এই কৃত্রিম উপগ্রহ বিশ্বের প্রথম উপগ্রহ, যা একইসঙ্গে এল-ব্যান্ড ও এস-ব্যান্ড রেডার ফ্রিকোয়েন্সি ব্যবহার করে পৃথিবীর ভূপৃষ্ঠ ও পরিবেশগত পরিবর্তনের বিশ্লেষণ করবে।

প্রায় দুই হাজার আটশো কেজি ওজনের এই উপগ্রহকে জিএসএলভি-এফ১৬ রকেটের মাধ্যমে পৃথিবী থেকে ৭৪৩ কিলোমিটার উচ্চতায় একটি সান-সিনক্রোনাস কক্ষপথে স্থাপন করা হবে। এই উচ্চপ্রযুক্তির উপগ্রহ দিন ও রাত, যে কোনও আবহাওয়ায় ছবি তুলতে সক্ষম। এমনকি মাটির কয়েক মিলিমিটার পরিবর্তনও ধরতে পারবে নিসার, যা জলবায়ু পরিবর্তন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, হিমবাহ গলন, বনাঞ্চলের রূপান্তর এবং বাস্তুতন্ত্রের উপর নজরদারিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে।

এই প্রকল্পে যুক্ত হয়েছে দুই দেশের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা। এল-ব্যান্ড রেডার সরবরাহ করেছে নাসা এবং এস-ব্যান্ড রেডার তৈরি করেছে ইসরো। এই যৌথ প্রযুক্তির মাধ্যমে উপগ্রহে যুক্ত হয়েছে ডুয়াল ফ্রিকোয়েন্সি রাডার, যা নিসারকে করেছে এই শ্রেণির প্রথম এবং অনন্য উপগ্রহ।

ইসরোর তরফে জানানো হয়েছে, উৎক্ষেপণের সঙ্গে সঙ্গে নিসার কাজ শুরু করবে না। সম্পূর্ণরূপে সক্রিয় হতে প্রায় নব্বই দিন সময় লাগবে। তার পরই পৃথিবীজুড়ে পর্যবেক্ষণ চালাবে এই উপগ্রহ। নিসার প্রকল্পের সূচনা হয় ২০১৪ সালে ভারত-আমেরিকার মধ্যে স্বাক্ষরিত একটি চুক্তির মাধ্যমে। দীর্ঘ এক দশক ধরে চলেছে সফটওয়্যার ও যন্ত্রাংশের যৌথ গবেষণা ও নির্মাণ। এই প্রকল্প শুধুমাত্র মহাকাশ প্রযুক্তির অগ্রগতির নিদর্শন নয়, একইসঙ্গে ভারত-আমেরিকার বৈজ্ঞানিক সহযোগিতারও এক নতুন অধ্যায়। এই উৎক্ষেপণ ঘিরে বিজ্ঞানীমহল ও সাধারণ মানুষের মধ্যে চূড়ান্ত উত্তেজনা। নিসার সফল হলে, এই যুগ্ম মহাকাশ অভিযান বিশ্ব দরবারে ভারত ও আমেরিকার বৈজ্ঞানিক সহযোগিতাকে এক অন্য উচ্চতায় পৌঁছে দেবে।

আরও পড়ুন – সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়ল চোর, কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ইন্দাসে চুরির কিনারা পুলিশের

_

_

_

_

_
_
_
_
_
_
_