বর্ষা জাঁকিয়ে বসতেই রাজ্যে ফের ডেঙ্গির থাবা। ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়ে বৃহস্পতিবার নবান্নে জরুরি বৈঠক সারলেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। জেলার জেলাশাসকদের নিয়ে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে মুখ্যসচিব স্পষ্ট জানিয়ে দেন, কোথায় কতটা সংক্রমণ, কী কী পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি এবং কোন কোন এলাকায় বিশেষ নজরদারি প্রয়োজন—সেসব নিয়ে একগুচ্ছ নির্দেশিকা দিয়েছে রাজ্য সরকার।

সরকারি রিপোর্ট অনুযায়ী, রাজ্যের দু’তিনটি জেলায় ডেঙ্গির প্রভাব তুলনামূলক ভাবে বেশি। শহর এবং শহরতলি এলাকাগুলিতে সংক্রমণের আশঙ্কা থাকায়, সেগুলিকে বিশেষ নজরদারির আওতায় আনার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পুরসভাগুলিকে বলা হয়েছে, দ্রুততার সঙ্গে এবং নিয়মিতভাবে নিকাশি নালা পরিষ্কার করতে হবে। কোথাও যেন জল জমে না থাকে, তা নিশ্চিত করতে হবে। কারণ জমা জলেই মশার লার্ভা জন্ম নিচ্ছে এবং সেখান থেকেই ছড়িয়ে পড়ছে ডেঙ্গি।

নবান্ন সূত্রে খবর, চলতি জুলাই মাসেই রাজ্যে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা হাজার ছাড়িয়েছে। কলকাতা শহরের বেশ কয়েকজন আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। রাজ্যের মুর্শিদাবাদ জেলা ডেঙ্গি-প্রবণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে স্বাস্থ্যদফতরের রিপোর্টে। যদিও কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, “পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। আগের তুলনায় সংক্রমণ কম। জনসচেতনতা, পরিচ্ছন্নতা এবং পুরসভার ধারাবাহিক কর্মসূচির কারণেই তা সম্ভব হয়েছে।”

তবে বর্ষার মাঝপথে ফের বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ তৈরি হওয়ায় আগামী কয়েকদিন রাজ্যজুড়ে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস মিলেছে। ফলে ডেঙ্গি সংক্রমণের আশঙ্কাও আরও বাড়ছে। কারণ প্রবল বৃষ্টির ফলে শহর ও গ্রামাঞ্চলের বহু জায়গায় জল জমে যেতে পারে, যা ডেঙ্গি ছড়ানোর বড় কারণ হয়ে উঠতে পারে।

এই পরিস্থিতিতে মুখ্যসচিব স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন—প্রতিটি জেলা প্রশাসনকে নিয়মিত ডেঙ্গি সংক্রান্ত আপডেট দিতে হবে। কোথায় কতজন আক্রান্ত, কোথায় চিকিৎসা পরিকাঠামো কেমন, এবং পুর ও পঞ্চায়েত স্তরে কী কী প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে—সবকিছুর নির্দিষ্ট রিপোর্ট নবান্নে পাঠাতে হবে। রাজ্য সরকারের বার্তা স্পষ্ট, সচেতনতা ও দ্রুত পদক্ষেপ ছাড়া ডেঙ্গি পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যেতে পারে। তাই আগেভাগেই সতর্ক হয়েছে প্রশাসন। এখন দেখার, বর্ষা-পূর্ব সতর্কতা বর্ষার শেষে কতটা কাজে দেয়।

আরও পড়ুন – রাজ্যে বন্যা পরিস্থিতি! কেন্দ্র ও সিকিমকে তোপ সেচমন্ত্রীর, ডিভিসি নিয়েও বিস্ফোরক মানস

_

_

_

_

_
_
_
_
_