বিজেপি কর্মী অভিজিৎ সরকার হত্যা মামলায় জামিনের আবেদন করা বিধায়ক পরেশ পালের মামলার ফের কলকাতা হাই কোর্টের ভর্ৎসনার মুখে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই (CBI)। পাঁচ বছর ধরে তদন্তকারী সংস্থা কোন অতিরিক্ত তথ্য সংগ্রহ করতে সমর্থ হয়েছে, প্রশ্ন আদালতের। এই ঘটনায় জামিনের (bail) আবেদন করা সব অভিযুক্তের মামলা নিয়ে সিদ্ধান্ত কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court) সোমবার শোনাবে বলে শনিবার পর্যবেক্ষণে জানানো হয়।

এই মামলায় বারবার আদালতের প্রশ্নের মুখে পড়েছে সিবিআই। ২০২১ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর মৃত্যু হয় অভিজিতের। গত ২ জুলাই নিম্ন আদালতে এই মামলায় দ্বিতীয় অতিরিক্ত চার্জশিট জমা দেয় সিবিআই। অভিযুক্ত পরেশ পাল ও পুলিশ আধিকারিক রত্না সরকারের তরফে সাংসদ তথা আইনজীবী কল্যাণ বন্দোপাধ্যায় শনিবারের শুনানিতে প্রশ্ন তোলেন, সিবিআইয়ের চার্জশিট (chargesheet) ফাইল করতে চার বছর লেগে গেল? তিনি আরও বলেন, সিবিআই বলে তারা যা ইচ্ছে করতে পারে না। সিবিআই কোনো রামকৃষ্ণ মিশন বা কালীঘাটের মন্দির নয়। সিবিআই মানেই নাকি স্পেশাল? কারা যায় সিবিআইয়ের কাছে।

সিবিআই-এর তথ্যের গাফিলতি তুলে ধরে কল্যাণের দাবি, মৃতের ভাইয়ের জবানবন্দী দেখুন। কেউ মামন্থা ঘোষ নামে তারা রক্তের দাগ মুছেছে। সহমত প্রকাশ করে আদালতও জানিয়েছে, তিন রকম ভার্সান রয়েছে। সিবিআই জানায়, একমাসের মধ্যে আমরা চার্জশিট দিয়েছিলাম। আমরা সত্য উদ্ঘাটন করতে চাইছিলাম। ২ মে ও ৬ মে তথ্য তুলে ধরে দাবি, এঁদের বিরুদ্ধে তথ্য প্রমাণ নষ্ট করার অভিযোগ রয়েছে। মামলা তুলে নেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়।

সেখানেই সিবিআই-এর (CBI) অভিযোগ সম্পর্কে কলকাতা হাই কোর্টের (Calcutta High Court) বিচারপতি সেনগুপ্তর পর্যবেক্ষণ, আপনারা খুব তাড়াহুড়ো করেছেন। অতিরিক্ত তথ্যগুলি দেননি। পার্টি অফিসে কি হলো? আর অভিযুক্তদের নাম এল কিনা সেটা উল্লেখ করার কথা। একই সঙ্গে মামলার নথি নিয়েও একাধিক প্রশ্ন তোলে আদালত। এরপরই কল্যাণ বলেন, আমরা ট্রায়ালের পর্যায়ে নেই। রত্না সরকার এবং দীপঙ্কর দেবনাথের ক্ষেত্রে আমরা তাঁদের বিরুদ্ধে যে চার্জ আছে তার বাইরে যেতে পারি না। রত্না সরকারের বিরুদ্ধে কি চার্জ? তিনি ব্ল্যাঙ্ক পেপারে সিগনেচার করিয়েছেন। কোনও প্রমাণ নষ্ট করা হয়নি। সমস্ত প্রমাণ তাদের হাতে রয়েছে বলেও দাবি করা হয়।

আরও পড়ুন: নবজাগরণ-এর ২৬তম প্রতিষ্ঠা দিবসে মুখরিত শিশির মঞ্চ, সম্মানিত ব্রাত্য-প্রচেত-ঝুলনরা

একাধিক মামলার প্রসঙ্গ টেনে কল্যাণ বলেন, সিবিআইকে সুপ্রিম কোর্ট রোজ ভর্ৎসনা করছে। তারা শুধু গ্রেফতারের জন্য রয়েছে। রিজানুর রহমান, তাপসী মালিক সহ একাধিক মামলা দেখুন। তাদের উদ্দেশ্য শুধু গ্রেফতার করা আর কিছু না। ইতিমধ্যেই এই আগাম জামিনের আবেদনের সঙ্গে অন্তর্বর্তী জামিনের আদেন জানিয়েছেন পুলিস কর্মী রত্না সরকার এবং হোমগার্ড দীপঙ্কর দেবনাথ। শনিবার বিচারপতি জয় সেনগুপ্তর এজলাসে মামলার এই দুই পুলিস কর্মীর জামিন সংক্রান্ত মামলার শুনানিতে সবক’টি জামিন মামলার একসঙ্গে নিষ্পত্তির কথা জানিয়েছেন বিচারপতি। সোমবার মামলার পরবর্তী শুনানি।

–

–
–

–

–
–
–
–