অপদার্থগুলো বলছে বাংলা কোনও ভাষা নয়। ওদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধে নামুন। বৃহস্পতিবার ঝাড়গ্রামে আদিবাসী দিবসের অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে গর্জে উঠলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। তিনি বলেন, বাংলা ভাষা নয় তো, রবীন্দ্রনাথ (Ravindranath Tagore), বিদ্যাসাগর, রামমোহন, বিবেকানন্দ (Swami Vivekananda), নেতাজি সুভাষচন্দ্ররা কোন ভাষায় কথা বলতেন! বিজেপি নেতাদের কথা শুনে এবং ভিন রাজ্যে বাংলার শ্রমিকদের উপর নির্মম অত্যাচার দেখে আমরা মর্মাহত, স্তম্ভিত। এবার সময় এসেছে সকল জনজাতি, সাধারণ মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলার।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আজকে মানুষগুলোর উপর অত্যাচার হচ্ছে বিজেপির রাজ্যে। গুরগাঁও, অসম, রাজস্থানে আটকে রাখা হয়েছে বাংলা শ্রমিকদের। মালদহের আদিবাসী কিশোরীকে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দিয়েছে মধ্যপ্রদেশের সরকার। দরিদ্রের উপর অত্যাচার হচ্ছে। আবার এরাই ভোটের আগে বলবে, টাকা নাও আমাদের ভোট দাও। আমি বলছি, কেউ আপনাদের ঠিকানা দেবেন না, নিজের অস্তিত্বকে বিলিয়ে দেবেন না। সবাই ভোটার লিস্টে নাম তুলুন। ডবল ইঞ্জিনের চক্রান্ত শুরু হয়েছে। ভোটার তালিকা থেকে মানুষের নাম বাদ দিয়ে সবাইকে তাড়িয়ে দেওয়া ওদের লক্ষ্য। কী ভেবেছে ওরা, বাংলা ভাষায় কথা বললেই তুমি রোহিঙ্গা, তুমি বাংলাদেশি? রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলা ভাষায় লিখেছিলেন জাতীয় সংগীত ‘জনগণমন অধিনায়ক’। নজরুল লিখেছিলেন ‘হিন্দু না ওরা মুসলিম ওই জিজ্ঞাসে কোন জন’। তাই বলছি, বিপদের সময় ভেদাভেদ নয়, মানুষকে অস্তিত্ব রক্ষা করতে সম্মিলিত লড়াই করতে হয়।
বাইশে শ্রাবণের প্রাক্কালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে স্মরণ করে মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee) এক্স হ্যান্ডেলে বাংলা ভাষার মাহাত্ম্যের কথা তুলে ধরেছেন। তারপর আদিবাসী দিবসের মঞ্চে ভারতের মহামানবের সাগরতীরে বাংলা ভাষার উপাখ্যান বর্ণনা করলেন। তুলে ধরলেন বিবেকানন্দের শিকাগো ভাষণের কথা, বিদ্যাসাগরের বর্ণপরিচয়ের কথা। ক্ষুদিরাম বসু থেকে শুরু করে সিধু-কানু-ডহর-বিরসা মুন্ডা-রঘুনাথ মুর্মুদের কথা।
মুখ্যমন্ত্রীর সাফ কথা, ভোটার লিস্ট আর ভাষার সম্মান কেউ ছাড়বেন না। মনে রাখবেন এ মাটি সোনার মাটি। এই বাংলাই জন্ম দিয়েছে প্রকৃত সভ্যতার। তাই বাংলার ঘরে ঘরে নতুন প্রজন্মকে হাল ধরতে হবে। আমরা জাগবো নতুন করে, এটাই আমাদের শপথ।
তাঁর কথায়, নিজের ভাষায় কথা বলাটা অপরাধ নয়। যদি কেউ মনে করে বাংলা ভাষায় কথা বললে বিদেশি বলে দেগে দেওয়া হবে, তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ প্রতিরোধ চলবে। যদি সত্যিই অনুপ্রবেশকারী হয়, তাদের ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা হোক। কিন্তু মনে রাখবেন এটা রাজ্য সরকারের দেখার কথা নয়, এটা কেন্দ্রের ব্যর্থতা। অসম কেন চিঠি পাঠাবে? এই জিনিস আমরা বরদাস্ত করব না, মানব না।আমি পরিষ্কার বলছি, আমার কন্যাশ্রী, মা লক্ষ্মীরা রুখে দাঁড়াবেন। সব জনজাতি, সাধারণ মানুষ সবাই এক হয়ে আগামীদিনে জোটবদ্ধভাবে বাংলার মাটি, বাংলার সম্মান রক্ষা লড়াই করবেন।
–
–
–
–
–
–
–
–
–
–
–