বাংলাভাষীদের আক্রান্ত বিজেপিশাসিত রাজ্যে। বাংলাভাষাকে কখনও বাংলাদেশী ভাষা বা কখনও কোনও ভাষাই না এই তকমা দিচ্ছেন কেন্দ্রের অধীনস্থ পুলিশ ও বিজেপির নেতা। এর প্রতিবাদে গর্জে উঠেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। বৃহস্পতিবার, কন্যাশ্রী দিবসে মাতৃভাষাকে সম্মানের বার্তা দিলেন তিনি। ধনধান্য স্টেডিয়ামে কন্যাশ্রী দিবসের অনুষ্ঠানে মমতা বলেন, “সব ভাষাই জানা উচিত। যত ভাষা শিখবেন তত উন্নত হবেন।। দয়া করে মাতৃভাষাকে (Mother Tongue) ভুলবেন না”।

বাংলাভাষার অপমানে গর্ডে উঠেছেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান তথা তৃণমূলের (TMC) সভানেত্রী। প্রত্যেক শনি-রবিবার রাজ্যের ব্লকে ব্লকে বাংলাভাষীর উপর আক্রমণ ও বাংলাভাষার অপমানের প্রতিবাদে ভাষা আন্দোলন করছেন তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। এই পরিস্থিতিতে কন্যাশ্রী দিবসের অনুষ্ঠান থেকে বাংলাভাষাকে সম্মান করার বার্তা দেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ”আপনাদের সকলকে বলবো বিশ্বের মুকুট আপনার মাথায় করুন। বিশ্ব জয় করুন। নাসা থেকে ভাষা সবটাই বাংলা নিয়ে। আমাদের বাংলার মাটি সোনার চেয়েও খাঁটি। আমি মনে করি দেশের সেরা বাংলা, বিশ্বসেরা বাংলা। উৎসবে সেরা বাংলা। উন্নয়নে সেরা বাংলা। নাসা থেকে ভাষা বাংলা। এটা আমি গতকাল লিখছিলাম। বাংলা ভাষার মতো মাধুর্য কোথাও পাবেন না। প্রয়োজনে অবশ্যই ইংরেজি শিক্ষা দরকার। কিন্তু বাংলা ভুলে নয়। সব ভাষাই জানা উচিত। যত ভাষা শিখবেন তত উন্নত হবেন। দয়া করে মাতৃভাষাকে ভুলবেন না মাটি তাকে ভুলবেন না মাকে ভুলবেন না।”

বাংলা মণীষীদের স্মরণ করে মমতা (Mamata Banerjee) বলেন, ”এই মাটি স্বামীর রামকৃষ্ণ, নেতাজি সুভাষচন্দ্র, রবীন্দ্রনাথ, নজরুল ইসলাম, দেশবন্ধুর মাটি। বিদ্যাসাগরের মাটি। ক্ষুদিরাম, প্রফুল্ল চাকি, বিনয়, বাদল, দীনেশ, মাতঙ্গিনী হাজরাদের মাটি। রবীন্দ্রনাথ পাঞ্জাব থেকে শুরু করে বাংলায় শেষ করেছিলেন জাতীয় সংগীত। বাংলা না থাকলে ভারত স্বাধীনতা পেত না। রাজা রামমোহন রায় বাংলা থেকে সতীদাহ প্রথা রদ করেছেন। বাবাসাহেব আম্বেদকর নির্বাচিত হয়েছিলেন এই বাংলা থেকে। যেদিন স্বাধীন ভারত শপথ গ্রহণ করছে সেদিন গান্ধীজি ছিলেন এই বাংলায় বেলেঘাটায়।”

এর পরেই বিজেপির নাম না করে মমতা বলেন, যারা একদিন এক কাপড়ে খালি পায়ে চলে এসেছিলেন তাঁরা তো নাগরিক বলে গণ্য হয়েছিলেন। কিন্তু অযথা বাংলা ভাষায় কথা বলার জন্য বিদেশী তকমা দেওয়া হচ্ছে। তোমরা বাংলা ভাষাকে অপমান করবে কেন! রবীন্দ্রনাথ নজরুলরা কোন ভাষায় কথা বলতেন? রবীন্দ্র লিখেছিলেন জাতীয় সংগীত। বন্দেমাতরম বঙ্কিমচন্দ্রের। জয় হিন্দ সুভাষ চন্দ্রের। আমরা জয় বাংলা বলি কারণ চাই বাংলা বিশ্ব বাংলা হোক।”
আরও খবর: মুখে নারী ক্ষমতায়নের কথা বলি না, কাজে করে দেখাই-‘কন্যাশ্রী’ দিবসে পোস্ট মুখ্যমন্ত্রীর

–

–

–

–

–

–
