Thursday, November 6, 2025

“তাহলে এখন বিমান স্কোয়ারের সঙ্গে বসে কুণাল!” হেসে সরস মন্তব্য বিমান বসুর (Biman Bose)। পাশে বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh) বলেন,” বিরল ফ্রেম। ছবিটা থাকুক।”

স্বাধীনতা দিবসের বিকেল। রাজ্যপালের আমন্ত্রণে রাজভবনে রীতিমাফিক চায়ের আমন্ত্রণ। অন্য কর্মসূচি সেরে কুণাল ঘোষ ঢোকেন একেবারে শুরুর মুখে। ততক্ষণে অতিথিরা এসে পড়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী আসতে তিনিই কার্যত মধ্যমণি। জাতীয় সঙ্গীতের পর সকলের সৌজন্যবিনিময়। বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু মুখ্যমন্ত্রীকে দেখে এগিয়ে গিয়ে নমস্কার করেন। মুখ্যমন্ত্রীও তাঁর শারীরিক খোঁজখবর নেন। মুখ্যমন্ত্রী এরপর উত্তরের অলিন্দের দিকে এগোন। ওদিকেই যাচ্ছিলেন প্রাক্তন সাংসদ কুণাল ঘোষ। নজরে পড়ে বসে আছেন বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় (Biman Banerjee)। কুণাল তাঁর দিকে এগোতেই দেখেন পাশ ফিরে সামনে দাঁড়িয়ে বিমান বসু (Biman Bose)। একদা অনিল-বিমানের স্নেহধন্য ছিলেন সাংবাদিক কুণাল। তিনি প্রণাম করেন বিমান বসুকে। হেসে বিমান বলেন,” পায়ে হাত কেন আবার!” কুণাল বলেন,” পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করার লোক ক্রমশ কমে যাচ্ছে, তাই।” পাশ থেকে একজন বলেন,” সে কী কুণালবাবু, বিমান বসুকে প্রণাম।” কুণাল বলেন,” একটা সময় নিত্য যোগাযোগ। ওঁর স্নেহ পেয়েছি। আজ অন্য পরিস্থিতি। যোগাযোগ হয় না। তা বলে দেখা হলে প্রণাম করব না?” বিমান বসুর মুখে সস্নেহ হাসি। এরপর বিমান ব্যানার্জিকে প্রণাম করেন কুণাল। দুজনের সঙ্গেই তাঁর দীর্ঘ পরিচয়। তিনজন একটু গল্প করেন। কুণাল বিমান বসুকে বলেন,” বিমানদা, এই বয়সেও আপনার হাঁটা কিন্তু অবাক করে দেয়।” বিমান তাঁর হাঁটার অভ্যেসের কথা বলেন। কুণাল বলেন,” কিন্তু সাধারণ হাঁটার আর রাজনৈতিক কর্মসূচির হাঁটায় তফাৎ আছে। মিছিলের হাঁটা চাপের।” বিমান বসু বলেন,” সেটা ঠিক। আমার এখন ৮৬ প্লাস বয়স। ডাক্তার বলেছেন হাঁটা চলুক। কিন্তু এবার একটা বিধিনিষেধ চাপিয়েছেন। বলেছেন, হাঁটুন, কিন্তু আর একদম বৃষ্টিতে ভিজবেন না। ছিয়াশি পার হলেন। কিছু তো মানতে হবে।”

দুই বিমানের সঙ্গে গল্পের মধ্যেই কুণাল বলেন,” বিরল ফ্রেম। একটা ছবি হয়ে যাক।” সবাই সানন্দে সহমত। তিনজনকে পাশাপাশি বসার আয়োজন করে দেন উপস্থিত বাকিরা। অনেকেই ছবি তুলে রাখেন। আই এফ এর শীর্ষকর্তা সুব্রত দত্ত ও আরেক পদাধিকারী সুদেষ্ণা মুখোপাধ্যায় ওখানে ছিলেন। তাঁরা আন্তরিকভাবে এই মুহূর্তটি ফ্রেমবন্দি করে দেন। বিমান বসু বলেন ,” বিমান স্কোয়ারের সঙ্গে কুণাল।”

উল্লেখ্য, একসময় সাংবাদিকতার কাজে বিমান বসু খুব পছন্দ করতেন কুণালকে। কিন্তু এখন রাজনৈতিক দূরত্ব। বিমানের বিরুদ্ধে বিবৃতি শুধু নয়, মামলাও করেছেন কুণাল। কিন্তু এদিন এই সময়টা সিনিয়র-জুনিয়র দুজনেই অতীতে ফিরে গিয়েছিলেন কিছুক্ষণের জন্য। দুতরফেই সৌজন্য। অন্যদিকে বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও কুণালের দীর্ঘ পরিচয়। একসময় সাংবাদিক কুণালের মানহানির মামলার আইনজীবী ছিলেন বিমানবাবু। পরে তিনি স্পিকার হয়ে যান। কুণাল গভীর শ্রদ্ধা করেন। দুই বিমানের সঙ্গে গল্প সেরে কুণাল চলে যান উত্তরের বারান্দায়, মুখ্যমন্ত্রী যেখানে বসেছিলেন।

Related articles

সুপ্রিম নির্দেশে রাজ্যে ফের শুরু ১০০ দিনের কাজ, নবান্নে তৎপরতা তুঙ্গে 

প্রায় তিন বছর পর ফের রাজ্যে শুরু হতে চলেছে কেন্দ্রীয় ১০০ দিনের কাজ (এমজিএনআরইজিএ) প্রকল্প। সুপ্রিম কোর্ট কলকাতা...

রাত পোহালে প্রথম দফার নির্বাচন বিহারে: হিংসা ঠেকানোই চ্যালেঞ্জ

নির্বাচনের এক সপ্তাহ আগে পরপর খুন। রাজনৈতিক নেতা থেকে সমর্থক। বিহার বিধানসভা নির্বাচনে তাই শান্তি বজায় রাখাই চ্যালেঞ্জ...

বাংলা কথায় দক্ষতা, কোন পদে পান তৃপ্তি? দীপ্তিকে নিয়ে স্মৃতির ঝাঁপি খুললেন ‘অভিভাবক’ মিঠু

সন্দীপ সুর বাংলার প্রথম ক্রিকেটার হিসাবে আইসিসি একদিনের বিশ্বকাপ জিতেছেন রিচা ঘোষ কিন্তু ভারতীয় দলের আরও এক ক্রিকেটারের সঙ্গে...

দিঘার জগন্নাথ ধামে প্রথম রাস উৎসবে ভক্তদের ঢল 

দিঘার জগন্নাথ ধামে এবারই প্রথম পালিত হল রাস উৎসব, আর সেই উপলক্ষে সকাল থেকেই উপচে পড়েছে ভক্তসমুদ্র। উৎসবের...
Exit mobile version