আর্থিক অভাবে থেমে থাকবে না মেধা। সেই লক্ষ্যেই গত এক দশক ধরে উদ্যোগ নিয়ে আসছে সুকিয়া স্ট্রিটের বৃন্দাবন মাতৃমন্দির। এ বছর একাদশ বর্ষে পা দিয়ে ৪০ জন আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া মেধাবী পড়ুয়ার হাতে তুলে দেওয়া হল দশ হাজার টাকা করে স্কলারশিপ।

শুধু দুর্গাপুজো আয়োজন নয়, বৃন্দাবন মাতৃমন্দির কলকাতার অন্যতম পুজো মণ্ডপ হলেও এর সামাজিক দায়বদ্ধতার পরিচয়ও বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। প্রতিবছরই মেধাবী অথচ আর্থিক অভাবে বিপর্যস্ত ছাত্রছাত্রীদের পাশে দাঁড়ায় তারা। এবার নিট পরীক্ষায় সাফল্য পাওয়া মুর্শিদাবাদের এমবিবিএস প্রথম বর্ষের ছাত্র সইদ আনোয়ার পেলেন ‘ডাঃ কল্যাণ কুমার ঘোষ স্মৃতি স্কলারশিপ’। মাধ্যমিকে কৃতিত্বের জন্য ট্যাংরার হেয়ার স্কুলের প্রত্যুশ ধারাকে দেওয়া হল ‘মনিকা ঘোষ স্মৃতি স্কলারশিপ’। দু’টি বৃত্তিই প্রাক্তন রাজ্যসভার সাংসদ কুণাল ঘোষের বাবা-মায়ের নামে প্রবর্তিত।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে কুণাল ঘোষ বলেন, বাবা-মা মারা যাওয়ার পর বাৎসরিক কাজ হয়েছে। সময়ের সঙ্গে ব্যস্ততার সঙ্গে সেগুলো আর হয়ে ওঠে না হয়তো অনেকেরই। কিন্তু বৃন্দাবন মাতৃমন্দির এই যে আয়োজন করে দিয়েছে তাতে ওই মন্ত্র পড়ে বাৎসরিক কাজ, এখানে স্কলারশিপ দেওয়ার মধ্যে দিয়ে পূরণ হয়ে গিয়েছে। আমরা অনেক কাজ স্বেচ্ছায় করি, অনেক কাজ হাসতে হাসতে করি, অনেক কাজ কর্তব্য থেকে করি। কোনও কাজ ইচ্ছা না থাকলেও করি। সেই সব কাজের মধ্যে বাঁচিয়ে যদি এই কর্মসূচিকে একটু ঠেলে নিয়ে যাওয়া যায়, তাহলে যারা বিভিন্ন প্রতিকূলতার মধ্যে মেধার পরিচয় দিয়েছে ভালো ফলাফল করেছে, আগামী দিন এইসব চারাগাছ যদি একটু জল পায়, ঠিকঠাক সার পায়, সমাজের এক একটি জায়গায় এরা প্রতিষ্ঠিত হবে। এই চারা গাছ একদিন অন্য চারা গাছকে ছায়া দান করবে। এই স্কলারশিপ কর্মসূচিকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে আর বৃন্দাবন মাতৃমন্দিরের যে টিম নিঃশব্দে নিঃস্বার্থে এ কাজকে সংঘটিত করেন তাদের প্রণাম।

আয়োজকদের দাবি, দশ বছর আগে মাত্র চল্লিশ হাজার টাকার বৃত্তি দিয়ে এই কর্মসূচি শুরু হয়েছিল। আজ প্রায় ৩০০ মেধাবী পড়ুয়া এই প্রকল্প থেকে উপকৃত হয়েছে। এ বছরই ৪০ জনকে সাহায্য করা সম্ভব হয়েছে।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মেয়র পারিষদ সন্দীপন সাহা, বিধায়ক বিবেক গুপ্তা, মেয়র পারিষদ অসীম বসু, কাউন্সিলর অরূপ চক্রবর্তী, বালিগঞ্জ কালচারালের অঞ্জন উকিল ও টালা প্রত্যয়ের শুভজ্যোতি বসুসহ বিশিষ্টরা। সাংবাদিক সুমন ভট্টাচার্য এবং সন্দীপন সাহা আগামী বছর থেকে দুটি নতুন স্কলারশিপ চালুর ঘোষণা করেন। বৃন্দাবন মাতৃমন্দিরের দাবি, শুধু পুজোর আয়োজন নয়, সমাজের দায়িত্ববোধ থেকেই তাদের এই উদ্যোগ আগামী দিনেও চলতে থাকবে।

আরও পড়ুন – যুবভারতীতে জ্বলল মশাল, দিয়ামনতাকসের জোড়া গোল ডার্বি ইস্টবেঙ্গলের

_

_

_

_
