কুণাল ঘোষ
হইচই-তে অ্যাডভোকেট অচিন্ত্য আইচ টু দেখলাম। শুরুতেই বলি, দশে নয় দেব। জাস্ট ফাটাফাটি। একটা এপিসোড দেখলে পরের অংশ না দেখে ছাড়া যায় না, কোর্টরুম ড্রামার আরও একটি সফল রূপায়ণ। পরিচালক জয়দীপ মুখোপাধ্যায় (Joydeep Mukherjee) এবং তাঁর টিম সিজন টুতেও কামাল করে দিয়েছেন।
অচিন্ত্য আইচ এক অতিসাধারণ মোড়কের উপস্থিতির এক আইনজীবী, যার জেদ আর মনের শক্তিটাই তুরুপের তাস। তার নিজের বিয়ের এনগেজমেন্টে, মন্দিরে হাজির হয় ছোট্ট নুপূর। আর্জি, মা দরজা খুলছে না। মাকে বাঁচাও। নুপূরের বাবা ধর্ষণ ও খুনে ফাঁসির আসামী। এই হল গল্পের শুরু। তারপর এক নাটকীয় ঘটনাক্রম পাহাড়ী নদীর মত এগিয়েছে। ক্ষিপ্র গতির, অথচ উগ্রতাহীন সৌন্দর্যময় প্রোডাকশন।
রক্তাক্ত অবস্থায় দেহ উদ্ধার ছাত্রীর। ধর্ষণ ও খুনে অভিযুক্ত, দোষী সাব্যস্ত, ফাঁসির রায়ের মুখে ড্রাইভার। অচিন্ত্য আইচ বহু প্রতিকূলতা টপকে কেস রিওপেন করিয়ে রহস্যের আসল সমাধানের অভিযানে। অচিন্ত্য নায়কোচিত দাপুটে নয়। গুন্ডাদের পেটায় তার হবু স্ত্রী, সে মার খায়। বিপক্ষের বড় উকিলের দাপট দেখলে ঘাবড়ে যায়। তবু, লড়াই ছাড়ে না।
অভিনয়ে সবাই ফাটিয়ে কাজ করেছেন। ঋত্বিক এই অন্যরকম চরিত্রগুলোতে যেন আরও সাতরঙা রামধনু ফোটান। তাঁর অ্যাসিস্ট্যান্ট দেবরাজ ভট্টাচার্য তো এই পর্বের সেরা। বিপক্ষের হেভিওয়েট আইনজীবী সোহিনী সেনগুপ্ত যথাযথ। দুলাল লাহিড়ী তাঁর ছেলে অচিন্ত্যর কান্ডকারখানায় বিরক্ত, আবার সস্নেহে পাশে। বাকিরাও ঠিকঠাক।
হেতাল পারেখ খুনের মামলায় ধনঞ্জয়ের ফাঁসি হয়েছিল। অথচ চর্চায় ছিল এক অকথিত অনার কিলিংয়ের গল্প। এই ছায়া থেকে মোড় নিয়ে এখানেও বলি করার চেষ্টা এক গরীব গাড়িচালককে। কিন্তু অচিন্ত্যর অভিযানে উঠে আসে আর এক মাকড়সার জাল, দুম করে সরলীকৃত উপসংহার টানা যাবে না।
জলি এল এল বিতে (Jolly LLB) অক্ষয় কুমার বা আর্শাদ ওয়ারশি অপূর্ব অভিনয় করেছেন। কিন্তু তাঁরা কোনও কোনও মুহূর্তে অ্যাংরি হিরোর বডি ল্যাঙ্গুয়েজ ছাড়তে পারেননি। ঋত্বিক কিন্তু অচিন্ত্যকে এক আলাদা ঘরানার চরিত্রের উঠোনে সাবলীলভাবে খেলা করিয়েছেন।
জয়দীপ মুখোপাধ্যায় (Joydeep Mukherjee), আপনি কিন্তু এই অচিন্ত্য আইচকে টলিউডে প্রতিষ্ঠিত করেই ফেললেন। এবার নিশ্চিন্তে অচিন্ত্য আইচ তিন নিয়ে ভাবনা শুরু করতে পারেন।
–
–
–