যোগীরাজ্যে স্কুলশিক্ষকের ফ্যান্টাসির চূড়ান্ত নমুনা! স্ত্রীকে হতে হবে রোগা ছিপছিপে চেহারার। আর সেই চেহারা বানাতে গিয়েই স্বামীর নির্মম নির্যাতনের শিকার হলেন এক গৃহবধূ। দিনে তিন ঘণ্টা শরীরচর্চা করতে বাধ্য করতেন স্বামী। শরীরচর্চা না করলে, খাবার খেতেও দিতেন না। অতিরিক্ত ওজন তাঁর একেবারেই ছিল না কিন্তু এত শারীরিক কসরতের কারণ ছিল অভাবনীয়। তাঁর স্বামী চেয়েছিলেন তিনি বলিউড অভিনেত্রীদের মতোই ফিগার বানাবেন। যেহেতু নোহা ফতেহির ফিগার তাঁর সবচেয়ে পছন্দ তাই নোরার মতো শরীরের জন্যে স্ত্রীকে জোর করে গর্ভপাতের ওষুধও খাইয়েছেন স্বামী।

উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদে গত ৬ মার্চ সানুর সঙ্গে শিবম উজ্জ্বল নামে এক শিক্ষকের বিয়ে হয়। বিয়েতে সানুর পরিবার প্রায় ৭৭ লক্ষ টাকা খরচ করেছিল বলে জানা গিয়েছে। পণ হিসেবে ১৬ লক্ষ টাকার সোনার গয়না, ২৪ লক্ষ টাকার স্করপিও গাড়ি, নগদ ১০ লক্ষ টাকা শিবমের পরিবারকে দেওয়া হয়েছিল। গৃহবধূর অভিযোগ, বিয়ের কয়েক সপ্তাহ পরেই সমস্যা শুরু হয়। স্বামীর সঙ্গে বাইরে বেরোতে দিতেন না শাশুড়ি এবং সারাদিন বাড়ির কাজে তাঁকে ব্যস্ত রাখতেন। স্বামীর সঙ্গে বাড়িতেও সময় কাটাতে দিতেন না। শিবম একটি সরকারি স্কুলের ফিজিক্যাল এডুকেশন বিভাগের শিক্ষক। বাড়িতে থাকলে তিনি অকথ্য গালিগালাজ করতেন সানুকে। এমনকী পরিবারের সামনেই তাঁকে মারধর করতেন বলেও অভিযোগ করেন সানু।

গৃহবধূর অভিযোগ, তাঁর স্বামী তাকে নিয়মিত শারীরিক নির্যাতন ও বডি শেমিং করতেন। লাস্যময়ী কোনও তরুণী তাঁর জীবনসঙ্গী হবেন বলে আশা করতেন তিনি। একাধিকবার বলেছিলেন, এই বিয়ে করে তিনি সুখী নন একেবারেই। বডি শেমিংয়ের শিকার হয়েছেন তিনি। এছাড়া মহিলাদের অশ্লীল ভিডিও, ছবি দেখতেন শিবম। ইউটিউব ও ইনস্টাগ্রামে অশ্লীল ভিডিও দেখেই বেশিরভাগ সময় কাটাতেন। দিনে তিন ঘণ্টা করে শরীরচর্চা করতে বাধ্য করা হত। কোনও একদিন শরীরচর্চা না করলে, বা কম সময় এক্সারসাইজ করলে, পরপর কিছুদিন খেতেও দিতেন না। অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার খবর জানালে তিনি মনে করেন শ্বশুরবাড়ির লোকজন হয়তো খুশি হবে কিন্তু উল্টে কয়েক দিনের মধ্যেই ননদ রুচি তাঁকে একটি গর্ভপাতের ওষুধ খেতে দেন।

গৃহবধূর আরও অভিযোগ, গর্ভবতী হওয়ার পর তাঁকে এমন কিছু খাবার দেওয়া হত, যাতে তাঁর স্বাস্থ্যের ক্ষতি হয়। গত ৯ জুলাই অতিরিক্ত রক্তপাত ও অসহ্য যন্ত্রণা নিয়ে তিনি হাসপাতালে ভর্তি হন। চিকিৎসকরা স্পষ্ট জানান, মানসিক ও শারীরিক অত্যাচারের কারণেই তাঁর গর্ভপাত হয়েছিল। গত ১৮ জুন অসুস্থ অবস্থায় ওই গৃহবধূকে বাপের বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়। ২৬ জুলাই শ্বশুরবাড়ি ফিরে গেলে ওই গৃহবধূকে ভেতরে ঢুকতে দেয়নি ও তাঁর গয়না ও জামাকাপড়ও ফেরত দেওয়া হয় নি। ১৪ আগস্ট শিবম ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। ইচ্ছাকৃতভাবে গর্ভপাত, পণের অভিযোগ দায়ের করেছেন তিনি।

আরও পড়ুন- গান-কবিতায় সংসদে সরব তৃণমূল! বয়কট রাজ্যসভার চা-চক্র

_

_

_

_

_

_