কেরলে মহেশতলার গণধর্ষিতা তরুণীর সঙ্গে দেখা করতে বরাদ্দ ১ মিনিট! কী লুকোতে চাইছে বামসরকার

Date:

Share post:

বামশাসিত কেরালায় (Kerala) গণধর্ষণের শিকার বাংলার পরিযায়ী শ্রমিক! নির্যাতিতা পাশে দাঁড়াতে টিম পাঠিয়েছিলেন তৃণমূলের (TMC) সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। আর বাংলা থেকে যাওয়া সেই টিমকে নির্যাতিতার সঙ্গে দেখা করতে মাত্র ১ মিনিট সময় দিল বিজয়ন প্রশাসন। প্রশ্ন উঠছে লুকোনোর কী আছে বামপ্রশাসনের।

অভিযোগ, ১৮ অগাস্ট কেরলে (Kerala) গণধর্ষণের শিকার হন দক্ষিণ ২৪ পরগনার মহেশতলা এলাকার বাসিন্দা তরুণী পরিযায়ী শ্রমিক। সন্তোষপুর ১৬ বিঘা বস্তির ওই তরুণী দাদু দিদার কাছে কেরলে থাকার জন্য গিয়েছিলেন। কেরালা রামা নাট্যু এলাকায় তাঁরা থাকতেন। দেড় মাস আগে একটি শপিংমলে জামা কাপড় ভাঁজ করবার কাজ পান। পরিবারের অভিযোগ, যখন কাজে বের হন, তারপর থেকে তিনি আর বাড়িতে ফেরেননি।  মেয়ে বাড়ির না ফেরায় পরিবারের তরফ থেকে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। বিকেলে নির্যাতিতা বাড়িতে ফেরেন রক্তাক্ত বিধ্বস্ত অবস্থায়। পরিবারের অভিযোগ, মেয়েটি তাঁর পরিবারকে জানান, শপিংমলে কাজ থেকে ফেরার সময় তাঁকে নাকের মধ্যে রুমাল চেপে অজ্ঞান করে অপহরণ করা হয়। যখন তাঁর জ্ঞান ফেরে তখন তিনি একটি ঘরের মধ্যে বন্দি এবং তাঁর ঘরে প্রায় কুড়িজন লোক ছিল বলে দাবি। তাঁর অভিযোগ, তাঁকে বারে বারে অজ্ঞান করে গণধর্ষণ করা হয়। শরীরে একাধিক জায়গায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। অভিযোগ, নির্যাতনের পর যখন তরুণীর জ্ঞান ফেরে তখন তাঁকে কেরালা ছেড়ে চলে যেতে হুমকি দেওয়া হয়। যদিও পরিবারের তরফ থেকে ইতিমধ্যে সিরকা থানায় মামলা রুজু হয়েছে। এই খবর যায় ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। তাঁর নির্দেশে ৪ সদস্যের প্রতিনিধি দল কেরলের যান। দলে কাউন্সিলর দীপিকা দত্ত-সহ রয়েছেন আরও তিনজন। রয়েছেন মহেশতলা থানার দুজন পুলিশ অফিসার।

সেই নির্যাতিতার সঙ্গে দেখা করার সময়সীমা বেঁধে দেয় কেরল সিপিএমের পুলিশ-প্রশাসন। সময় বরাদ্দ মাত্র এক মিনিট। কিন্তু কিসের এত ভয়? কী লুকোতে চাইছে কেরল সিপিএম প্রশাসন? কী লুকানোর জন্য মাত্র এক মিনিট দেখা করার সময় বরাদ্দ হলো বাংলার প্রতিনিধি দলের একজন মাত্র মহিলার?

প্রথমে কোঝিকোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মেয়েটি রয়েছে বলে জানানো হলেও পরবর্তীকালে দেখা যায় সেখানে সে নেই। পাশের ইনস্টিটিউট অফ মেটেরিয়া চাইল্ড হেলথ বিল্ডিং এ তাকে রাখা হয়েছিল। এখানেই দেখা করার অনুমতি চাইতে গেলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড় করিয়ে রাখা হয় প্রতিনিধি দলের সদস্যদের। কেরল পুলিশের রীতিমতো জিজ্ঞাসাবাদের পর্ব চলে সেখানে দাঁড়িয়েই। এরপর অনুমতি দেওয়া হয় একজন মহিলা যাবেন, কিন্তু  মাত্র এক মিনিটের মধ্যে কথা বলে নেমে আসবেন। সেই মতোই কাউন্সিলর দীপিকা দত্ত ওই বিল্ডিং এর ভিতর ঢোকেন কথা বলতে। সঙ্গে সঙ্গে মেয়েটিকে ঘিরে ফেলে ডাক্তার এবং নার্সেরা। তার মধ্যেই দীপিকা দত্ত কথা বলেন এক মিনিট। তার শারীরিক খোঁজখবর নেন।

নির্যাতিতাকে জানানো হয়, সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলা থেকে তাদের পাঠিয়েছেন তাঁর পাশে থাকার জন্য। এখানে তাঁরা সাহায্য করতে এসেছেন এবং সবরকম ভাবে তাঁর পাশে আছেন। কথা শেষ হতে না হতেই দীপিকা দত্তকে নামিয়ে দেয়া হয়। এখন এই বাংলা প্রতিনিধি দল চেষ্টা করছে কেরালার চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কেয়ারের তরফে সাহায্য নিয়ে কথা বলে পরবর্তী পদক্ষেপ করার। গোটা বিষয়টি জানানো হয়েছে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দফতরে।

কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে কেরল পুলিশের প্রশাসনের এই ধরনের অস্বাভাবিক আচরণ নিয়ে। বাংলার একটি মেয়ে গণধর্ষিতা হল সেখানে এবং তারপরেও পুলিশ প্রশাসনের এই ভূমিকা অত্যন্ত নক্কারজনক বলছেন বাংলা থেকে যাওয়া প্রতিনিধি দলের সদস্যরাই।

spot_img

Related articles

সমীক্ষার নামে তথ্য পাচার! বিজেপির চক্রান্ত ফাঁস, বাসন্তীতে জালে তরুণী

সমীক্ষার নাম করে ছাব্বিশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে এরাজ্যের সাধারণ মানুষের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। বিজেপির এই...

দুর্গাপুজো ঘিরে সতর্ক কলকাতা পুলিশ, বৃষ্টি মাথায় মণ্ডপ পরিদর্শন নগরপালের

দুর্গাপুজোয় (Durga Puja) শহরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও আঁটসাঁট করতে কোমর বেঁধে নেমেছে কলকাতা পুলিশ (Kolkata Police)। বৃষ্টি উপেক্ষা...

দুর্গাপুজোর মণ্ডপে মোদির ছবিতে ‘না’ দিল্লির, ‘ট্রেলার’ কটাক্ষ তৃণমূলের

বাংলা ভাষা ও বাংলার সংস্কৃতিকে অপমানই কেন্দ্রের বিজেপি ও ডবল ইঞ্জিন রাজ্যগুলির একমাত্র লক্ষ্য। বারবার সেটা প্রমাণ হওয়ার...

পুজোর আনন্দ কি পণ্ড করবে বৃষ্টিঅসুর? কী জানাল হাওয়া অফিস

হাতে মোটে আর একদিন। তারপরেই পিতৃপক্ষের অবসান। দেবীপক্ষের সূচনা। কিন্তু মুখ গোমড়া আকাশের দিকে তাকালে মন খারাপ আম...