ডুরান্ড কাপের(Durand Cup) ফাইনালে পৌঁছে সকলকে চমকে দিয়েছিল ডায়মন্ডহারবার এফসি(DHFC)। বাংলার ফুটবলকে যে দল নতুন স্বপ্ন দেখাচ্ছে, তাদের নিয়েই হঠাত্ করে ব্যাঙ্গ করা শুরু করেছে অনেকে। ব্যক্তিগত আক্রমণ করা হচ্ছে ক্লাব কর্তাদের। আর এটাই মেনে নিতে পারছেন না প্রাক্তন ফুটবলার মানস ভট্টাচার্য। ডায়মন্ডহারবার এফসির(DHFC) সচিবের পদেও রয়েছেন তিনি। কিন্তু কুমন্তব্যের বিরুদ্ধে নিজেকে আটকে রাখতে পারেননি এই প্রাক্তন ফুটবলার। সচিব হিসাবে নয় খারাপ কথা বলা মানুষদের জবাব দিলেন প্রাক্তন ফুটবলার হিসাবেই মানস ভট্টাচার্য(Manas Bhattacharya)।

ইস্টবেঙ্গলকে হারিয়ে সকলকে চমকে দিয়েছিল ডায়মন্ডহারবার এফসি। বাংলার দল হিসাবে ফাইনালে পৌঁছনোর পর, গোটা বাংলা সেদিন পাশে দাঁড়িয়েছিল এই নতুন ক্লাবের। তবে তারা পারেনি। ফাইনালে নর্থইস্টের কাছে হেরে গিয়েছিল ১-৬ গোলে। এরপর থেকেই শুরু হয়েছে এক অদ্ভূত সমালোচনা। না পারফরম্যান্স নিয়ে নয়, সকলেই ব্যক্তিগত আক্রমণ শুরু করেছেন ক্লাব কর্তাদের উদ্দেশ্যে। নানান কটু মন্তব্য করতে শুরু করেছে। চলছে নানান খারাপ ব্যঙ্গ। তাদেরকেই এবার একহাত নিলেন মানস ভট্টাচার্য(Manas Bhattacharya)। তাঁর সাফ বার্তা যারা এমন করছে তাদের মধ্যে আর যাই হোক খেলোয়াড়সুলভ মানসিকতা নেই। খেলার বাইরে গিয়ে ইচ্ছাকৃতভাবে রাজনীতির রং লাগানোর চেষ্টা হচ্ছে বলেও মনে করছেন তিনি। এমন ঘটনা তীব্র নিন্দা করেছেন মানস ভট্টাচার্য।

মানস ভট্টাচার্যের মতে খেলার মাঠে হার-জিত রয়েছে। এমন বড় ব্যবধানে মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গলের মতো দলও হেরেছে। সেখানে এই প্রথমবার এতবড় প্রতিযোগিতায় নেমেছিল ডায়মন্ডহারবার এফসি(DHFC)। সেখানে ফাইনালে পৌঁছেছিল তারা। কিন্তু নর্থইস্টের কাছে হেরে যাওয়ার পরই নানান খারাপ মন্তব্য শুরু হয়ে গিয়েছে। বিশেষ করে ক্লাবের প্রধান কর্তাকেই নিশানা করছেন অনেকে। মুখ খুলতে বাধ্য হয়েছেন মানস ভট্টাচার্য।

এমন ঘটনার প্রতিবাদ করে মানস ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, “আমাদের এই হারটাকে নিয়ে অনেকে হাস্যকর মন্তব্য করছে। যেটা নিয়ে প্রতিবাদ না করে পারছি না। এই প্রথম কিন্তু ৬ গোলে কেউ হারেনি। আমরা বিশ্বকাপে দেখেছি ব্রাজিল ৭ গোলে হেরেছে। গতকাল দেখেছি ওয়েস্টহ্যামকে ৫-১ গোলে হারিয়েছে চেলসি। যরা খেলা বোঝে না তারাই এই ধরণের মন্তব্য করছে। আমাদের ঘরোয়া ফুটবলে মহমেডান যেমন সাত গোল খেয়েছে, তেমন মোহনবাগানও খেলেছে পাঁচ গোল। ইস্টবেঙ্গল চার গোল খেয়েছে। খেলায় তো হারজিত রয়েছে। আমাদের নিয়ে সবাই বলছে মোহনবাগানের কাছে পাঁচ গোল খেল। নর্থইস্টের কাছে ছয় গোল খেল। তারা ইস্টবেঙ্গলকে হারাল কীভাবে। এটা ফুটবল খেলা। যে যেদিন ভালো খেলবে সেই জিতবে। যারা ফুটবল বোঝে তারা বলবে আমরা গোলরক্ষকের জন্য দুটো ম্যাচে হেরেছি। আমি একজন প্রাক্তন হিসাবে বলছি কথাগুলো। আমি লক্ষ্য করছি কয়েকদিন ধরে, বিশেষ করে আমরা হেরে যাওয়ার পরে এই সম্পূর্ন খেলাটাকে একটা রাজনৈতিক মোড়ক দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। এটা খুব নিন্দনীয় এবাং খেলোয়াড়সুলভ নয়”।

সমালোচনা নিয়ে কোনওরকম আপত্তি নেই। তবে সেটা যদি একেবারেই সুস্থ হয় তবে সবসময়ই ডায়মন্ডহারবার তা গ্রহন করবে। তাদের পারফরম্যান্স নিয়ে কাঁটাছেড়ে হলে বা ভুলগুলো ধরিয়ে দিলে অবশ্যই তা মেনে নিতে রাজি ডায়মন্ডহারবার। কিন্তু কাউকে কাউকে উদ্দেশ্য করে ব্যঙ্গটা মেনে নেওয়ার মতো নয় বলেই মনে করছেন তিনি। সেই সমালোচকদেরই একহাত নিলেন এই প্রাক্তন ফুটবলার।

মানস ভট্টাচার্য বলেন, “আমরা ভুল করেছি কোন কোন জায়গায় সেগুলো ধরিয়ে দিক। আমরা নতুন দল। আমরা রোজ জিতব এমন মানে নেই। আমাদের ছেলেরা চেষ্টা করেছি। এটা সকলের বোঝা উচিৎ ডায়মন্ডের যারা মাঠে নেমেছিল সেটাই তাদের প্রথম সবচেয়ে বড় প্রতিযোগিতা ছিল। সেখানে ডুরান্ডের মতো ঐতিহ্যশালী প্রতিযোগিতার ফাইনালে যে আমরা যেতে পেরেছি, আমি মনে করি সেই ফুটববলার থেকে কোচের কৃতিত্ব। কিন্তু একটা ক্লাবকে, একটা মানুষকে ছোট করার জন্য যে ধরণের কথাবার্তা কয়েকজন বলছে, তাদের জন্য আমার খুব কষ্ট হচ্ছে। তাদের ফুটবল বোধ নিয়ে কষ্ট হচ্ছে। পারফরম্যান্সের ভুল ত্রুটি নিয়ে আলোচনা হোক। আমরা অবশ্যই তাকে স্বাগত জানাবো। এগুলোই আমার বলার ছিল। খেলায় এমনটা হতেই পারে”।

এবার আইলিগের মঞ্চে নামবে ডায়মন্ডহারবার এফসি। শেষ তিনবছরে একের পর এক সাফল্য পেয়েছে ডায়মন্ডহারবার। আইলিগ জিতলেই আইএসএলের ছাড়পত্র যোগার করে ফেলবে ডায়মন্ডহারবার এফসি। বাংলার এই নতুন দলকে নিয়ে নতুন স্বপ্ন দেখছে সকলে।

–

–

–

–