হাওড়ায় বৃদ্ধ খুনের নেপথ্যে চাঞ্চল্যকর তথ্য। হাওড়ার গোলাবাড়ি থানার সালকিয়ার অরবিন্দ রোডের বাসিন্দা অসীম দে (Asim de) খুন হন। তাঁর ফ্ল্যাট থেকে দেহ উদ্ধার হয়। তদন্তে নেমে পুলিশ ওই এলাকার সিসিটিভিতে সন্দেহজনক এক ব্যক্তিকে ওই আবাসনে ঢুকতে ও বেরতে দেখে। ভিডিও ফুটেজ দেখেই একজনকে গ্রেফতারও করে পুলিশ। তদন্তে উঠে এসেছে খুনের নেপথ্যে রয়েছে সমকামী সম্পর্ক! বৃদ্ধের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল অভিযুক্ত ধৃত প্রসেনজিৎ চৌধুরীর (Prosenjit Chowdhury)। অভিযোগ, ছবি তুলে ব্ল্যাকমেইল করতেন অসীম।

প্রসেনজিৎ চৌধুরী উত্তর ২৪ পরগনার গোবরডাঙার বাসিন্দা। পেশায় কাপড়ের ব্যবসায়ী। ব্যবসার কাজে প্রায়ই হাওড়া যেতেন তিনি। স্যোশাল মিডিয়ায়তেই অসীম দে-র সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয় । মাস চারেক আগে প্রথম কথা শুরু হয় অসীম ও প্রসেনজিৎ চৌধুরীর।

মাসখানেক আগে প্রসেনজিৎ চৌধুরী ও অসীম সালকিয়ার বাঁধাঘাটে সাক্ষাৎ করেছিলেন। এরপর প্রায়ই তাঁরা নিজেদের মধ্যে মোবাইলে কথা বলতেন। তাদের কথাবার্তা অনেক সময়ই যৌনধর্মী হত। এরপর তাদের মধ্যে ভিডিও কল হতে শুরু করে।

পুলিশ সূত্রে খবর, দু’জনের মধ্যে ভিডিও কল চলার সময় অসীম-প্রসেনজিতের বেশ কিছু গোপন ছবির স্ক্রিনশট রেখে দেন। যা দেখিয়ে তিনি প্রসেনজিৎকে ব্ল্যাকমেইল করতে থাকেন বলে অভিযোগ। সম্পর্ক ক্রমশ গভীর হয়। এরপর বৃদ্ধের ফ্ল্যাট যায় প্রসেনজিৎ।

শনিবার প্রসেনজিৎ ফ্ল্যাটে যাওয়ার আগে মদ ও খাবার কিনে আনেন। এরপর সেই ফ্ল্যাটেই তাদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক হয়। এরপরেই গোপন ছবি নিয়ে তাঁর সঙ্গে অসীমের বচসা শুরু হয়। অসীমের অত্যাচারে গভীরভাবে ক্ষত তৈরি হয় প্রসেনজিতের শরীরে। শেষপর্যন্ত রাগের মাথায় বৃদ্ধে মাথা ফ্ল্যাটের দেওয়ালে ঠুকে দেন প্রসেনজিৎ। আঘাতের জেরে অভ্যন্তরীণ রক্তপাতের জন্য মৃত্যু হয় বলে প্রাথমিকভাবে অনুমান পুলিশের। বৃহস্পতিবার রাত ১০টা নাগাদ সালকিয়া অরবিন্দ রোডের একটি আবাসনের ফ্ল্যাটে খুন হন অসীম দে। তারপরের দিন পরিবারের লোকেরা গোলাবাড়ি থানায় খবর দিলে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। পুলিশ পাশের ফ্ল্যাট থেকে সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে। তাতে দেখা যায় বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ এক যুবক একটি লাল ব্যাগ হাতে ওই ফ্ল্যাটে ঢুকছে। রাত দশটা কুড়ি নাগাদ সে ফ্লাট থেকে বেরিয়ে যায়।

অভিযোগ, মূলত রাগ থেকেই বৃদ্ধকে খুন করে অভিযুক্ত। পুলিশ সূত্রের খবর, বৃদ্ধের মোবাইল এবং দুটি সোনার আংটি নিয়ে চম্পট দেন অভিযুক্ত প্রসেনজিৎ। রবিবার গোবরডাঙায় তার বাড়ি থেকে তাঁকে গ্রেফতার করে। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে খুনের মামলা রুজু করা হয়েছে।

–

–

–

–

–