ব্যক্তিগত মত প্রকাশ সাংবিধানিক অধিকার, তা খর্ব করা যায় না। এমনই পর্যবেক্ষণ দিয়ে রামকৃষ্ণ মিশন রেসিডেনসিয়াল কলেজে ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক পদে তমাল দাশগুপ্ত নামে এক গবেষককে অবিলম্বে নিয়োগ করার নির্দেশ দিল কলকাতা হাই কোর্ট।

কলেজ সার্ভিস কমিশনের সুপারিশ থাকার পরও ওই ব্যক্তিকে নিয়োগ দিতে অস্বীকার করেছিল কর্তৃপক্ষ। তাদের যুক্তি ছিল, সমাজ মাধ্যমে তাঁর কিছু ব্যক্তিগত পোস্ট মিশনের ভাবাদর্শকে আঘাত করেছে। সেই কারণেই নিয়োগ দেওয়া যায় না বলে দাবি করা হয়েছিল।

এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতের দ্বারস্থ হন তমাল দাশগুপ্ত। বুধবার বিচারপতি পার্থ সারথি চ্যাটার্জী স্পষ্ট পর্যবেক্ষণে জানান, ব্যক্তিগত মতামত প্রকাশ করা একজন নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার। মিশনের ভাবাদর্শের সঙ্গে না মিললেও তা নিয়োগে বাধা হতে পারে না। আদালতের ভাষ্যে, “এই ধরনের অস্বীকার একজনের গণতান্ত্রিক অধিকার খর্ব করার শামিল।”

২০১৫ সালে ইংরেজিতে পিএইচডি করার পর তমালবাবু কলেজ সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। মেধাতালিকা মেনে ২০২০ সালে কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে নরেন্দ্রপুরের মিশন কলেজকে বেছে নেন। কিন্তু কর্তৃপক্ষ দাবি করে, অটোনমাস কলেজ হিসেবে তারা কমিশনের সুপারিশ মানতে বাধ্য নন।

হাই কোর্ট সেই যুক্তি খারিজ করে জানিয়ে দিয়েছে, কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী নিয়োগ করতেই হবে। ফলে আদালতের নির্দেশ, অবিলম্বে ইংরেজি বিষয়ে সহকারী অধ্যাপক পদে নিয়োগপত্র দেওয়া হোক তমাল দাশগুপ্তকে। বিচারালয় সূত্রে খবর, কমিশনের সুপারিশ উপেক্ষা করার ক্ষমতা কোনও প্রতিষ্ঠানকেই দেওয়া হয়নি। আদালতের নির্দেশে তাই স্বস্তি তমালবাবুর কাছে, অস্বস্তি রামকৃষ্ণ মিশনের কর্তৃপক্ষের।

আরও পড়ুন – গরমিল কাগজে-কলমে! কেন্দ্রের ভুল রিপোর্টেই আলিপুর চিড়িয়াখানায় প্রাণী ‘গায়েব’
