নবরাত্রি শুরুর আগে ফের গোবলয়ের ভোটব্যাঙ্ক ধরে রাখতে জিএসটি সংশোধনীর ঘোষণা নিয়ে পর্দায় মুখ দেখাতে এলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আর তার জেরে যে রাজ্যের ২০ হাজার কোটির লোকসান, প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের পরই স্পষ্ট করে দিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। রাজ্য থেকে যে জিএসটি (GST) কেন্দ্রের সরকার তুলে নিয়ে গিয়েছে, তার জন্য কোনও রকম ক্ষতিপূরণ না দিয়েই তুলে নেওয়া হয়েছে জিএসটি। তবে তার জন্য রাজ্যের কোষাগারে ক্ষতি হলেও মানুষের সুরাহা হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ মুখ্যমন্ত্রীর।

বাংলায় দুর্গোৎসব শুরু হলেও তার আগে কোনও জিএসটি ছাড় ঘোষণা হয়নি। নবরাত্রির আগে সেই জিএসটি ছাড়ের ঘোষণা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। গোবলয়েই যে বিজেপির রাজনীতি ঘুরে ফিরে আবর্তিত, আরও একবার স্পষ্ট করে দিলেন দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি জানান, সোমবার থেকে নবরাত্রির প্রথম দিন নেক্সট জেনারেশন জিএসটি-র সুবিধা পাবে দেশের মানুষ। নবরাত্রির উৎসবকে ‘জিএসটি সেভিং উৎসব’ বলে ঘোষণা করেন তিনি।

আদতে বিরোধীদের তীব্র প্রতিবাদ ও মানুষের আন্দোলনের জেরেই যে কেন্দ্রের মোদি সরকার এই ঘোষণা করতে বাধ্য হয়েছে, বুঝিয়ে দিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যে ঘোষণা করে নিজের প্রচার করছেন প্রধানমন্ত্রী, তা যে রাজ্যের কৃতিত্ব তা বলতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা বলেছিলাম কেন মানুষকে বিমার টাকা দিতে গেলে টাকা দিতে হবে। স্বাস্থ্যসাথীর জন্য তো টাকা দিতে হয় না। কাটল টাকা আমাদের আর প্রচার হচ্ছে ওনাদের। এই টাকাটা আমাদের জোগাড় করতে হচ্ছে। আমাদের রাজস্ব আদায় যা দিয়ে রাজ্যের প্রকল্প চলে। শুধুমাত্র বিমায় রাজ্যের লোকসান ৯০০ কোটি টাকা। বাদ বাকি নিয়ে প্রায় ২০ হাজার কোটি।

কেন্দ্রের পক্ষপাতিত্বের হিসাব তুলে ধরে মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন, ইতিমধ্যেই কেন্দ্রের কাছে জিএসটি বাবদ ১ লক্ষ ৯২ হাজার কোটি টাকা বাকি রয়েছে। এবার গেল ২০ হাজার কোটি। বিজেপির রাজ্যগুলিকে তো ওরা কেন্দ্রের টাকায় ভরিয়ে দেবে। এখানে টিকটিকি দৌড়ালে কমিশন চলে আসে। আর উত্তরপ্রদেশ, বিহারে কিছু হলে দেখতে পায় না। আর জিএসটির ক্রেডিট রাজ্যের। আমার রাজ্যের মানুষ যে সুবিধা পাবে তার জন্য রাজ্যের ২০ হাজার কোটি টাকা লোকসান হচ্ছে। এটা রাজ্যের জিএসটি, কেন্দ্রের নয়।

আরও পড়ুন: ‘জাগো দুর্গা’ গানে মাতিয়ে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়: প্রকাশিত ‘জাগোবাংলা’ উৎসব সংখ্যা

তবে শেষ পর্যন্ত কেন্দ্রের সিদ্ধান্তে যে সাধারণ মানুষ উপকৃত হবেন, তা উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রী জানান, কেন্দ্রীয় সরকারের কোনও অবদান নেই ভাষণ দেওয়া ছাড়া। টাকা কেটেছে রাজ্যের জিএসটি (GST) থেকে। তার জন্য আমার দুঃখ নেই। সাধারণ মানুষের কাজটা হচ্ছে। এটাতে আমি খুশি। কিন্তু এর জন্য রাজ্যকে কোনও ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়নি। তাহলে রাজ্যের পাওনাটা দিয়ে দাও। মানুষের ভালো হলে আমরা খুশি হই। এটা আমারই প্রথম দাবি ছিল।

–

–

–

–


