সুরুচির দেওয়ালে ‘বন্দেমাতরম’ লিখলেন: বাংলার স্বাধীনতা সংগ্রাম স্মরণ করালেন মুখ্যমন্ত্রী

Date:

Share post:

ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রাম বাঙালির মেধা, পরিশ্রম, অনুশীলন ছাড়া সম্ভবই হত না। বারবার বাঙালির প্রতিটি সাফল্যের কাহিনী তুলে ধরতে গিয়ে এই কথা স্মরণ করিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসের একটি বড় অংশকে নিজেদের দুর্গোৎসবের থিমের মধ্যে ফুটিয়ে তুলেছে সুরুচি সংঘ। তাঁদের থিম ‘আহূতি’। বাংলার স্বাধীনতার সংগ্রামীদের আহূতিকে উৎসর্গ করেই তৈরি হয়েছে এই মণ্ডপ। পুজোর উদ্বোধনে সেই মণ্ডপে দাঁড়িয়ে বাংলার অস্মিতায় সরব মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)।

বৃহস্পতিবার সুরুচির পুজো উদ্বোধনে ফিতে কেটে মণ্ডপে প্রবেশ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মণ্ডপে পৌঁছে প্রথমেই গোটা মণ্ডপ ঘুরে দেখেন তিনি। প্রতিমার সামনে প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মধ্যে দিয়ে পুজোর উদ্বোধন করেন। চামর দুলিয়ে দেবীর আরাধনা করেন। সঙ্গে ছিলেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, স্বরূপ বিশ্বাস।

পুজোর উদ্বোধন হতেই তিনি চেয়ে নেন একটি লাল চক। সেই চক দিয়ে প্রতিমার মণ্ডপেই লিখে দেন বন্দেমাতরম (Vandemataram)। তাঁর লেখা শেষ হতেই দুর্গোৎসবের মণ্ডপ যেন স্বাধীনতার ইতিহাসের রোমাঞ্চকে তুলে ধরে। উপস্থিত সকলে আন্দোলনের সাক্ষ্য বহন করে ‘বন্দেমাতরম’ ধ্বনিতে ভরিয়ে তোলেন সুরুচি সংঘের মণ্ডপ।

সুরুচি সংঘের এবারের থিমের শিল্পী অনির্বাণ দাস। সুরুচির অনুশীলন সমিতির মণ্ডপ মুখ্যমন্ত্রীকে ঘুরে দেখান মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। এক একটি ইতিহাসের উদাহরণ দেখে মুখ্যমন্ত্রী উল্লেখ করেন, এখনকার প্রজন্ম এর অনেক কিছুই জানে না। পরে মঞ্চে তিনি বলেন, শহিদ তর্পণে, স্বাধীনতা সংগ্রামে আজকের প্রজন্ম জানে না বাংলার স্বরূপ। তাঁদের দোষ নেই। আমরাই তাঁদের শিখতে দিই না। তাঁদেরও জানতে হবে, বাংলাটা কী? বাংলা না থাকলে স্বাধীনতা আন্দোলন হত না। লাখো কণ্ঠে, উদ্দীপ্ত কণ্ঠে বলব। বাংলা না থাকলে নারী শিক্ষা, নবজাগরণ হত না। মহিলাদের উপর অত্যাচার বন্ধ করতেও বাংলার মনীষীদের অবদান।

সুরুচির মণ্ডপ প্রসঙ্গে প্রশংসার সঙ্গে তিনি (Mamata Banerjee) বলেন, সুরুচি সংঘের মণ্ডপ অনুশীলন সমিতি – নামটা অনুশীলন ছিল কারণ অনুশীলনের মধ্যে দিয়ে তাঁরা স্বাধীনতা সংগ্রামকে তৈরি করেছিলেন। স্বাধীনতার জন্য লড়াই করেছিলেন। ‘বলো বীর বলো উন্নত মম শির’।

আরও পড়ুন: বাংলার স্বাধীনতা সংগ্রাম ভুলিয়ে দিচ্ছে ‘দিল্লি’: সুরুচি সংঘের পুজো উদ্বোধনে তোপ মুখ্যমন্ত্রীর

সেই সঙ্গে তিনি বলেন, এখানে ক্ষুদিরাম, প্রীতিলতা ওয়াদ্দাদার, বিনয়-বাদল-দিনেশ, প্রফুল্ল চাকি, মাস্টারদা সূর্য সেন – তাদের চরিত্রগুলিকে এখানে তুলে আনা হয়েছে। অসাধারণ কাজ। হয়তো গবেষণার জন্য খুব ভালো কাজে লাগবে। যারা পুজো দেখতে আসবেন, তাঁরা কতটা গ্রহণ করবেন তা তাঁরা বুঝবেন। তবে যাঁরা গবেষণা করবেন, তাঁদের জন্য অনেক রসদ এখানে রয়েছে।

spot_img

Related articles

পুজোয় পুরো শহরটাই আমার পরিবার, বিশ্ব বাংলার সম্মান রক্ষাটা দায়িত্ব

দেবাশিস দত্ত, অফিসার ইন চার্জ, মানিকতলা থানা "মা আসছেন, তাই আবার নাহয় একসাথে একযোগে নতুন করে বাঁচি আর একবার.....

বাংলা বলায় ভিনরাজ্যে পিটিয়ে খুন পরিযায়ী শ্রমিক

বারবার ভিন রাজ্যে আক্রমণের শিকার হতে হচ্ছে বাঙালি পরিযায়ী শ্রমিকদের (Bengali Migrant Labour)। এবার কর্ণাটকে বাংলা বলার অপরাধে...

আট তৃণমূল সাংগঠনিক জেলা: চার শাখা সংগঠনের ব্লক ও টাউন সভাপতিদের নাম ঘোষণা

দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের নির্দেশ অনুসারে ঘোষিত হল রাজ্যের আটটি তৃণমূল সাংগঠনিক জেলার কমিটি। মাদার কমিটির পাশাপাশি মহিলা, যুব...

শারদীয়ায় নয়া সমীকরণ! অভিষেকের সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনায় মুগ্ধ শোভন-বৈশাখী

শারদীয়ায় নয়া সমীকরণ রাজ্য রাজনীতিতে? পুজো যখন দোরগোড়ায়, তখন তৃণমূলের (TMC) সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee)...