একটা বয়সে পর বাবা-মায়ের সঙ্গে সন্তানের সম্পর্কটা বন্ধুর মত হয়ে যায়, কাব্যে ও পদ্যে পড়া এই লাইনগুলো বাস্তবে কি সত্যি হয়ে উঠতে পারে? মা নেই, বয়স্ক বাবার আবদার কখনও কি মেয়ের কাছে অসহ্য অত্যাচার বলে মনে হতে পারে? আমাদের চারপাশে প্রত্যেকদিন ঘটতে চার দেওয়ালের ভেতরের এমন অনেক পরিস্থিতি আর প্রশ্নের মুখোমুখি দাঁড় করাতে এবার নতুন চ্যালেঞ্জ নিলেন অভিনেত্রী রুক্মিণী মৈত্র (Rukmini Maitra)। রবির সকালে প্রকাশ্যে এল তার আগামী ছবি ‘হাঁটি হাঁটি পা পা’র টিজার। যেখানে অভিনেত্রীর বাবার ভূমিকায় দেখা গেল চিরঞ্জিত চক্রবর্তীকে (Chiranjit Chakraborty)। প্রথম ঝলকে ধরা দিল, ব্যস্ত আধুনিক জীবনের পরিসরে বাবা-মেয়ের সম্পর্কের ভীষণ চেনা সমস্যা থেকে সমীকরণ সবটাই।
টলিউডের ‘বিনোদিনী’ বাস্তবে নিজের বাবাকে হারিয়েছেন। তাই হয়তো সেই যন্ত্রণাকে মনের মধ্যে রেখে চিত্রনাট্যের ডায়লগের সঙ্গে নিজের অনুভূতি মিশিয়ে বলতে পেরেছেন, “মা চলে যাওয়ার পর আমি তোমাকে হারাতে পারবো না বাবা।” এই সেই অভিনেত্রী যাঁকে এত বছর ধরে ইন্ডাস্ট্রি শুধু একজন নায়কের ‘বান্ধবী’ বলে তকমা দিয়ে রেখেছিল। যাঁকে কারণে অকারণে, প্রসঙ্গে বা অপ্রাসঙ্গিকতায় সমালোচনা আর কটাক্ষের শিকার হতে হয়েছে। কিন্তু ‘ককপিট’ বা ‘সুইজারল্যান্ড’ যে অভিনেত্রীর জাত চিনিয়ে ছিল, ‘বিনোদিনী’র পর অর্ণব মিদ্যা পরিচালিত ‘হাঁটি হাঁটি পা পা’র টিজারেও তার ১০০ শতাংশ ধরা পড়ল।
এ ছবি আমাদের ভীষণ চেনা পরিসরের সবথেকে অনবদ্য সম্পর্কের গল্প বলে। বয়স বাড়লে বাবা হয়ে যান ছোট শিশুর মতো, চাকুরীরত অবিবাহিত মেয়ে দায়িত্ব সামলাতে সামলাতে কোথাও গিয়ে ক্লান্ত হয়ে পড়েন। সামান্য ঠোকাঠুকি থেকে বড় ভাঙনের আভাস মিলতে থাকে। সত্যিই কি কেউ দোষী নাকি সব ক্ষেত্রে অনুভূতিরা বাধ্যতামূলক থাকে না, সেই ভাবনাকে উসকে দিয়েছেন রুক্মিণী। সিনেমার নামের মধ্যেই সন্তানের প্রথম পদক্ষেপে তাঁর জন্মদাতার হাত ধরে এগিয়ে চলার মিষ্টি ঘটনার স্পষ্ট উপস্থিতি রয়েছে। কিন্তু সময় বাড়লে সম্পর্কের সমীকরণ যে বদলে যায় তাও যেন বুঝিয়ে দিল ৫৭ সেকেন্ডের টিজার। শুরুতে চিরঞ্জিতের কথা অনুযায়ী, বাবা মেয়ের সম্পর্কের সঙ্গে ‘টম অ্যান্ড জেরি’র তুলনা বেশ মিষ্টি লাগে।কিন্তু বাবাকে সামলাতে সামলাতে ধৈর্য হারিয়ে ফেলে মেয়ে। ভালোবাসা ভুলে ঠাঁই হয় অভিমানের, দায়িত্ব হয়ে যায় বোঝা। তারপর? উত্তর মিলবে এই শীতে।
–
–
–
–
–
–
–
–
