সুদীপ্ত বন্দ্যোপাধ্যায়

কথায় আছে রূপ হচ্ছে বাহ্যিক অলংকার সময়ের সঙ্গে যা পরিবর্তনশীল। কিন্তু প্রতিমার রূপের ছটা থেকে মুখের আদল দীর্ঘ সময় ধরে মনে থেকে যায়। তাই সেই রূপের বদল হলে তা চোখে তো লাগবেই। এত কথার কারণ, উত্তর কলকাতার ঐতিহ্যবাহী কালীপুজোয় মাতৃমূর্তির আদলে বদল এবং অপর পুজোয় সেই আদলের আবির্ভাব। সোমবারই মাতৃমূর্তি চলে এসেছে মণ্ডপে আর সেই সঙ্গে সমাজমাধমে ভাইরাল সেই ভিডিও, তারপরই শুরু হয়েছে জোর চর্চা। কথা হচ্ছে কলকাতার অন্যতম ঐতিহ্যবাহী কালীপুজো ‘নব রবীন সংঘ’ ওরফে ‘বুচিয়াদা’র কালীপুজো নিয়ে।

ইতিমধ্যেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে যে নব যুবক সংঘ অর্থাৎ ফাটাকেষ্ট কালীপুজোয় প্রতিমার মুখের আদলে বদল ঘটেছে। দীর্ঘ ৬৮ বছরের ঐতিহ্যবাহী প্রতিমার সেই মুখের আদল পরিবর্তনের কারণ হিসেবে তাঁদের পটুয়া বদল। এরই মধ্যে সোমবার প্রকাশ্যে এলো ‘নব রবীন সংঘ’ কালীপুজোর কালীমূর্তি। এদিন মণ্ডপে প্রতিমা আসতেই নেটপাড়ায় গুঞ্জন, ফাটাকেষ্টর কালী প্রতিমার হুবহু রূপ এবারে বুচিয়াদার কালীপুজোর প্রতিমায়। আবেগপ্রবণ নেটিজেনদের একাংশের কথায় ফাটাকেষ্ট কালীপুজোর ঐতিহ্যবাহী প্রতিমার রূপ ফিরে এসেছে ‘নব রবীন সংঘ’-এ। হুবহু সেই সুবিশাল দেবীপ্রতিমা, গাঢ় নীলবর্ণা, পটল চেরা চোখ, আর সেই মায়াবী মুখ।

কিন্তু ঘটনাটা ঠিক কী? সেটা জানতেই ‘বিশ্ববাংলা সংবাদ’ ঘুরে দেখল উত্তর কলকাতা কলেজ স্কোয়ার চত্বরের ঐতিহ্যবাহী সেই নব রবীন সংঘের পুজোর মণ্ডপ। এই সাদৃশ্য কি কাকতালীয় নাকি ইচ্ছাকৃত? উত্তরে ক্লাবের অন্যতম প্রবীণ সদস্য তথা পুজো আয়োজক পার্থ বসু জানান ‘বুচিয়াদা’-র পুজোয় শুরুর সময় থেকে পটুয়া শিল্পী কালীপদ পাল প্রতিমা তৈরি করতেন, সেই ঘরানাতেই আজও তাঁদের প্রতিমা হয়ে আসছে, অর্থাৎ ‘ফাটাকেষ্ট কালীপুজো’র মাতৃ প্রতিমার আদলের সঙ্গে তাঁদের পুজোয় প্রতিমার আদল পরিবর্তনের কোনো সম্পর্ক নেই বলে দাবি তাঁর। তবে এবার তাঁদের ঠাকুর গড়েছেন মাধব পাল। এই ইনি এতদিন ফাটাকেষ্টর পুজোর কালী প্রতিমা গড়েছিলেন। কিন্তু এবার তাঁকে সেখান থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেই কারণে তিনি ‘বুচিয়াদা’-র পুজোয় ঠাকুর করেছেন। তবে ক্লাবের সদস্য জয়নারায়ণ সিংহ জানান, নিজেদের ক্লাবের পুজো নিয়ে তাঁরা এতটাই ব্যস্ত থাকেন যে অন্য কোথায় কোনও পটুয়া বদল হচ্ছে বা পুজোয় ঠিক কী পরিবর্তন হচ্ছে সেই নিয়ে মাথা ঘামানোর সময় তাঁদের নেই। তারা প্রতিযোগিতায় নয় পুজোয় বিশ্বাসী।

তবে সব কিছুর মধ্যেও পুজোর আড়ম্বর বা ভোগ খাওয়ানো, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান থেকে হুল্লোড়, আনন্দ-আয়োজনে এতটুকুও খামতি থাকে না তাঁদের পুজোয় বলে দাবি ‘নব রবীন সংঘ’ পুজোর আয়োজকদের। তাঁদের কথায় তাঁদের পুজো আগেও সেরা ছিল আজও সেই একই রকম জায়গায় রয়েছে।

আরও পড়ুন- সুপ্রিম নির্দেশে বাতিল প্যানেলের চাকরিহারাদের ফিরবে পুরোনো চাকরি! ২৫ অক্টোবর কাউন্সেলিং এসএসসির

_

_

_

_
_