Sunday, November 16, 2025

মার্কিন শুল্কের দেড় মাস: দক্ষিণের শহরে কাজ হারালো ৬ লক্ষ পোশাক শ্রমিক

Date:

মার্কিন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের ৫০ শতাংশ শুল্ক চাপানোর পরে ভারতের একাধিক শিল্প ব্যাপক ক্ষতির মুখে। তার মধ্যে হিরেসহ গয়না শিল্প যেমন রয়েছে, তেমনই রয়েছে পোশাক শিল্পও। মার্কিন বহু ব্র্য়ান্ডের পোশাকই (branded garments) ভারতে তৈরি হয়ে আমেরিকায় গিয়ে শুধুমাত্র লোগো লাগিয়ে আবার ভারতেই এসে বিক্রি করে মুনাফা লুটত মার্কিন পোশাক বিক্রেতারা (garment merchant)। তবে তাতে দক্ষিণ ভারতের একাধিক শহরের বহু ছোট বড় কারখানা থেকে পোশাক শিল্পের (garment industry) সঙ্গে যুক্ত শ্রমিক, কর্মী, মালিকদের স্থায়ী রোজগারের দিশা মিলত। ছবিটা বদলে গেল মাত্র দেড় মাসে। তামিলনাড়ুর তিরুপুরের (Tiruppur) মতো শহরে পোশাক শিল্পের সঙ্গে যুক্ত অন্তত ৬ লক্ষ কর্মী কাজ হারালেন। পরিযায়ী শ্রমিকদের (migrant labour) ফিরে যেতে হল নিজেদের রাজ্যে।

তামিলনাড়ুর (Tamilnadu) তিরুপুর পুরোপুরিভাবে পোশাক তৈরির হাব। এখানে তৈরি পোশাক ওয়ালমার্ট, টার্গেট থেকে হফম্যানের মতো ব্র্য়ান্ডের কাছে বিক্রি হয়। ফলে রোজগার এখানে ডলারে। যে কারণে এই শহরকে ডলারের শহর বলেও অভিহিত করা হয়। শহরের বছরে সর্বমোট রোজগার আনুমানিক ৩২ হাজার কোটি। ২৭ অগাস্ট ট্রাম্প ৫০ শতাংশ শুল্ক (tariff) আরোপ করার পর গোটা ছবিটাই এখন বদলে গিয়েছে। গোটা শহরে উৎপাদন কমে গিয়েছে ২৫ শতাংশ।

তিরুপুরে পোশাক শিল্পে কাজ করতে স্থানীয় মানুষের পাশাপাশি ভিন রাজ্য়ের পরিযায়ী শ্রমিকরাও যোগ দেন। তবে স্থানীয় বা পরিযায়ী – কোনও শ্রমিকের সঙ্গেই কোনও চুক্তিপত্র স্বাক্ষরিত হয় না। কার্যত অসংগঠিত শ্রমিক হিসাবেই তাঁরা কাজ করেন। তাতে মাসে প্রায় ২০ হাজার টাকা রোজগার হত তাঁদের। কিন্তু মার্কিন শুল্ক (US tariff) আরোপ হওয়ার পরে মালিকপক্ষ এক ধাক্কায় কাজের সময় কমিয়ে দিয়েছেন। সেই সঙ্গে মজুরিও (salary)। তাঁদের দাবি, এভাবে ব্যয় সংকোচন না করলে তাঁরা টিকে থাকতে পারবেন না। অন্যদিকে প্রতিটি পোশাকে কাজের উপর রোজগার করতেন শ্রমিকরা। কাজের সময় কমিয়ে দেওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই রোজগারও কমেছে। গত দেড়মাসে ২০ হাজার টাকার রোজগার কমে প্রায় ১০ হাজারেরও কম প্রতি মাসে হয়ে দাঁড়িয়েছে।

তবে এভাবেও বহু শ্রমিক কাজে টিকে রয়েছেন। কিন্তু এদের থেকেও দুরবস্থা প্রায় ৬ লক্ষ শ্রমিকের। যাদের কোনও নোটিশ না দিয়েই কাজ থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। মালিক পক্ষ দাবি করছে, এই পরিস্থিতিতে লাভ তো দূরের কথা, ব্যবসা টিকিয়ে রাখতেই তাদের কর্মী ছাঁটাইয়ের (recession) পথে যেতে হয়েছে। এমনকি তাঁরা পরিকল্পনা করেই ফেলেছেন, আমেরিকায় রফতানির (export) জন্য যে পোশাক তারা বানাতেন, সেই পোশাকের পরিমাণ ৭০ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়ে দেবেন। তবে অন্তত কোম্পানিগুলির আয় ও ব্যয়ের মধ্যে সামঞ্জস্য বজায় রাখতে পারবেন।

আরও পড়ুন: ভারতে হামলা চালিয়েছিল পাকিস্তান: শাহবাজের মুখোশ খুলে দিলেন ট্রাম্প

যে শ্রমিকরা আচমকাই কাজ হারালেন, তাঁরা সেই মূল্যের তো বটেই, ন্যূনতম মজুরির কাজও পাচ্ছেন না। পোশাক শিল্প তো দূরের কথা, তাঁদের রাজমিস্ত্রির কাজ করতে হচ্ছে। এক একটি ইউনিটে একসঙ্গে ৬০ জন করে শ্রমিকেরও (garment worker) কাজ গিয়েছে এই পরিস্থিতিতে। এই পরিস্থিতিতে সরকার শ্রমিকদের দিকে ফিরেও তাকাচ্ছে না, অভিযোগ শ্রমিকদের। এমনকি মালিক পক্ষও অভিযোগের আঙুল তুলছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের দিকে। প্রায় দেড় মাস ধরে লাগাতার অস্তিত্ব সংকট কাটাতে চাওয়া শিল্পের জন্য এখনও কোনও ভাবনা চিন্তা করে উঠতে পারেনি কেন্দ্রের বিজেপি সরকার।

Related articles

২৪ ঘণ্টা পার: উত্তরপ্রদেশে পাথরখনি ধসে আটকে ১৫ শ্রমিক! মৃত ২

নিয়ম না মেনে খনিতে বিস্ফোরণ ঘটানো। তার জেরে বড় সড় ধস উত্তরপ্রদেশের শোনভদ্রের পাথর খনিতে (stone quarry)। শুক্রবার...

লালকেল্লার কাছে বিস্ফোরণস্থলে সেনা কার্তুজ উদ্ধার! উৎস নিয়ে বাড়ছে ধোঁয়াশা 

দিল্লির লালকেল্লার কাছে গাড়ি বিস্ফোরণের ঘটনায় (Car blast near Red fort) এবার এক চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ্যে এল। রবিবার...

বিহারে হঠাৎ বাড়ল ৩ লক্ষ ভোটার! কমিশনের তথ্যেই কারচুপি প্রমাণিত

বিহার নির্বাচনে বিজেপির অস্ত্র নির্বাচন কমিশন। বারবার নির্বাচনের আগে বিরোধী দলগুলি সেই অভিযোগেই সরব ছিল। বিহারে এসআইআর (Bihar...

বাংলাদেশের জেলে কাকদ্বীপের মৎস্যজীবীর রহস্যমৃত্যু, পরিকল্পনা করে খুন! অভিযোগ পরিবারের

'ভুলবশত' বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক জলসীমা (Bangladesh water border) অতিক্রম করে প্রতিবেশী রাষ্ট্রে ঢুকে পড়েছিল কাকদ্বীপের মৎস্যজীবী। ৩২ বছরের বাবলু...
Exit mobile version