Saturday, November 22, 2025

SIR আতঙ্কে অস্বাভাবিক মৃত্যু: পরিযায়ী শ্রমিকের দেহ ফিরল গ্রামে

Date:

Share post:

বিজেপির স্বৈরাচারী মনোভাবে বাংলায় এখন আতঙ্কের নাম এসআইআর। এই আতঙ্কের বলি এবার এক পরিযায়ী শ্রমিক। পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরের এক পরিযায়ী শ্রমিক বিমল সাঁতরার দেহ শনিবার সন্ধ্যায় ফিরল ঘরে। পরিবারের দাবি, এসআইআর আতঙ্কে অসুস্থ হয়ে মৃত্যু হয়েছে তাঁর।

জামালপুরের নবগ্রামের বাসিন্দা বিমল সাঁতরা (৫১) তামিলনাড়ুর তাঞ্জাভুরে পরিযায়ী শ্রমিক হিসাবে কাজ করতেন। মৃতের ছেলে বাপি সাঁতরার দাবি, ‘এসআইআর আতঙ্কে বাবা অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। ওই আতঙ্কেই বাবার মৃত্যু হয়েছে।’ বাপি তামিলনাড়ুর তাঞ্জাভুর জেলার ওরাতানাডু থানায় অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা দায়ের করেন। শুক্রবার সেখানকার স্থানীয় হাসপাতালে দেহের ময়নাতদন্তও হয়।

তামিলনাড়ু পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত ২৬ অক্টোবর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন বিমল সাঁতরা। সেখানে কয়েক দিন ভর্তি থাকার পরে বৃহস্পতিবার বিমলের মৃত্যু হয়েছে। জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় শনিবার সন্ধ্যায় দেহ গ্রামে আসে। দেহ গ্রামে আসার সময় উপস্থিত ছিলেন জামালপুরের বিধায়ক অলোক মাঝি-সহ তৃণমূলের নেতৃত্ব।

মৃতের ছেলের দাবি, বিমল সাঁতরা ধান রোয়াতে তামিলনাড়ুতে গিয়েছিলেন। পরিযায়ী শ্রমিক হওয়ার জন্যে নথি নিয়ে চিন্তায় ছিলেন। এসআইআর হলে ভোটার তালিকায় নাম থাকবে কি না, সে নিয়ে চিন্তা করতেন। ওই আতঙ্কেই তিনি অসুস্থ হয়ে মারা গেলেন।

তবে স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি এসআইআর ঘোষণা হওয়ার পরে এই একই রকম আতঙ্কে ভুগছেন গ্রামের বহু মানুষ। এই গ্রাম থেকে বহু মানুষ তামিলনাড়ু ও অন্যান্য রাজ্যে পরিযায়ী শ্রমিকের কাজ করেন। তাঁরাও মূলত ধান রোয়ার কাজ করেন। মৃতের পড়শি সোমনাথ শীল দাবি করেন, ‘কাজ করবে না নথি জোগাড়ের চিন্তা করবে? ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় কার নাম আছে আর কার নাম নেই, সেটা কী পরিযায়ী শ্রমিকদের পক্ষে জানা সম্ভব। ফলে, সবার মনেই আতঙ্ক তৈরি হচ্ছে।’

আরও পড়ুন: নাগরিকত্ব দেওয়ার নামে ব্যবসা বিজেপির! জমিদারদের মুখোশ খুলে দেওয়ার ডাক তৃণমূলের

এই মৃত্যুর সঙ্গে স্পষ্ট হয়েছে রাজ্যে একশো দিনের কাজ বন্ধ হওয়ায় সাধারণ মানুষের চরম দুর্ভোগের ছবিটাও। বিধায়কের দাবি, ‘প্রায় আড়াই বছর ধরে ১০০ দিনের কাজ বন্ধ। সে কারণে ধান রোয়াতে পটুরা ভিন রাজ্যে কাজে যাচ্ছেন। এসআইআর নিয়ে উনি (বিমল) ভয়ে ছিলেন। বাড়িতে ফোন করে আলোচনা করেছিলেন। চিন্তায় অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন।’

spot_img

Related articles

রিল-রিয়েল একাকার! ‘লক্ষ্মীকান্তপুর লোকাল’-এ থানায় ছুটলেন মদন

একেই বোধহয় বলে, "ঢেঁকি স্বর্গে গিয়েও ধান ভাঙে"। "দাদা একটু আসুন, আপনি না এলে হবে না", "আমার নির্দোষ...

প্রিমিয়ারেই জমজমাট গৃহকর্মীদের রোজনামচার ‘লক্ষ্মীকান্তপুর লোকাল’

শর্মিষ্ঠা ঘোষ চক্রবর্তী ওঁরা রোজ আসেন, রোজ কাজ করেন, সমস্ত রকম নাগরিক স্বাচ্ছন্দ্যের পরিষেবা দেন। কিন্তু ওঁদের নিয়ে গল্প...

টেকনিশিয়ানদের টাকা বাকি রেখে কুৎসা রটাচ্ছেন রুদ্রনীল! তথ্য দিয়ে ধুয়ে দিলেন স্বরূপ

নিজে টাকা বাকি রেখে উল্টে ফেডারেশনের নামে সোশ্যাল মিডিয়ায় কুৎসা ছড়াচ্ছেন অভিনেতা রুদ্রনীল ঘোষ (Rudranil Ghosh)! শুক্রবার সাংবাদিক...

কাজের চাপে শীতলকুচিতে মর্মান্তিক মৃত্যু বিএলও-র! পরিবারের পাশে রাজ্য

অতিরিক্ত কাজের চাপ এবং মানসিক অস্থিরতা—এই দুইয়ের মাঝেই শেষ হল শীতলকুচির বিএলও ললিত অধিকারীর জীবনযাত্রা। বেশ কয়েকদিন ধরেই...