রাজআমলের প্রথা মেনে কোচবিহারের মদনমোহন মন্দিরে শুরু হল রাস উৎসব। এদিন সন্ধ্যায় দেবত্র ট্রাস্ট বোর্ডের সভাপতি ও কোচবিহারের জেলাশাসক রাজু মিশ্র রাসচক্র ঘুরিয়ে উৎসবের সূচনা করেন। উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপারও। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতিনিধি হিসেবে তাঁরা পুজো দেন মদনমোহন ঠাকুরের চরণে।
রাসচক্র ঘোরানোর পর জেলাশাসক মন্দিরের গেটের উদ্বোধন করেন। আর সেই মুহূর্ত থেকেই মন্দির প্রাঙ্গণে শুরু হয় দর্শনার্থীদের ভিড়। মদনমোহন ঠাকুরের দর্শন ও রাসযাত্রাকে কেন্দ্র করে শুধু কোচবিহার নয়, নেপাল, ভুটান ও অসম থেকেও প্রতি বছর হাজার হাজার মানুষ এই উৎসবে অংশ নেন।
এবছর প্রায় আড়াই হাজার ব্যবসায়ী রাসমেলা মাঠে দোকান বসিয়েছেন। মেলার আয়োজনে লাগামহীন সরগরম পরিবেশ। খেলনা, পিঠে-পুলি, হস্তশিল্প, নাগরদোলা— সব মিলিয়ে জমজমাট রাসমেলা।
ইতিহাস বলছে, কোচবিহারের মহারাজাদের কুলদেবতা মদনমোহন ঠাকুরের রাসযাত্রা আগে হত রাজবাড়িতে। প্রথমে ভেটাগুড়ি, পরে রাজপ্রাসাদ। ১৮৮৯ সালে মহারাজা নৃপেন্দ্রনারায়ণ মন্দির প্রতিষ্ঠা করার পরে রাসউতসব স্থায়ীভাবে স্থান পায় বর্তমান মন্দির প্রাঙ্গণে।
উল্লেখযোগ্য ভাবে, রাজআমলের পরম্পরা মেনে আজও রাসচক্র তৈরি করেন কোচবিহারের এক মুসলিম পরিবার। প্রজন্মের পর প্রজন্ম সেই দায়িত্ব পালন করে চলেছে তারা। মন্দিরের বারান্দায় এবছরও বিগ্রহ স্থাপন করা হয়েছে, যাতে ভক্তরা কাছ থেকে দর্শনের সুযোগ পান। প্রথম দিনেই ভক্তদের ঢল সামলাতে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছে প্রশাসন। মদনমোহন ঠাকুরের নামজপ ও উৎসবের আমেজে বুধবারের সন্ধ্যা রঙিন হয়ে উঠল কোচবিহার জুড়ে।
আরও পড়ুন – বিজেপির এসআইআর ষড়যন্ত্র: ব্য়র্থ করে দিতে স্লোগান মুখ্যমন্ত্রীর
_
_
_
_
_
