অপেক্ষার অবসানে শুরু হল ৩১-তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব ২০২৫ (31st Kolkata International Film Festival)। বৃহস্পতিবার আলিপুরের ধনধান্য অডিটোরিয়ামে তারকাখচিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে হাজির পুরো টলিউড (Tollywood) । মঞ্চজুড়ে প্রতিটা দৃশ্যপট যেন চলমান চলচ্চিত্র। দুর্গাপুজো-কালীপুজোর পর এ যেন বাঙালির সিনে পুজোর সূচনা। চলচ্চিত্র উৎসবের কো-চেয়ারপার্সেন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় KIFF নিয়ে বরাবরই আবেগপ্রবণ। অভিনেতা চিরঞ্জিত চক্রবর্তী (Chiranjit Chakraborty) বললেন, এই উৎসবের সঙ্গে সম্পর্ক বহুদিনের। তাই বারবার সিনেমা দেখার আনন্দের শামিল হওয়া।
চলতি বছরে কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে (31st KIFF) বঙ্গবিভূষণ পেলেন বর্ষীয়ান শিল্পী আরতি মুখোপাধ্যায় । দীপ্তিময় মুহূর্তেই ঘোষণা করা হল সিনেমায় অসামান্য অবদানের জন্য বঙ্গবিভূষণ পাচ্ছেন শত্রুঘ্ন সিনহাও। মুখ্যমন্ত্রী নিজে সে পুরস্কার তুলে দিলেন শিল্পীদের হাতে। বঙ্গ রাজনীতির কালারফুল চরিত্র মদন মিত্রর (Madan Mitra) কথায়, এই উৎসবের আলোকে কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। বাংলায় যেমন বিশ্বের সিনেমা দেখার সুযোগ, ঠিক তেমন গোটা বিশ্ব কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব দেখার জন্য মুখিয়ে থাকে। বাস্তবিক অর্থেই কথাটা সত্যি বটে। অদেখা সিনেমা থেকে ফ্ল্যাশব্যাকে ফিরে সাদাকালো সময়ের চলচ্চিত্র দেখার সুযোগ দেয় কিফ (KIFF)। উত্তম কুমারের নাতবউ অভিনেত্রী দেবলীনা কুমার (Debolina Kumar) তাই শুক্রবার সকালেই বড়পর্দায় এবারের ফেস্টিভ্যালের অন্যতম আকর্ষণ ‘অরণ্যের দিনরাত্রি’ দেখবেন বলে ঠিক করে ফেলেছেন। বহু বছর পর ফিল্মোৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পেরে উচ্ছ্বসিত ‘সেদিন চৈত্রমাস’ নায়িকা ইন্দ্রানী দত্ত (Indrani Dutta) । বাবা-স্বামী- শ্বশুরকে নিয়ে বিনোদন জগতের সবথেকে বড় প্রাণোচ্ছল উৎসবের প্রাণবন্ত আলোয় ঝলমলে কোয়েল মল্লিক (Koel Mallick)। ভালো সিনেমা দেখার ব্যাপারে আশাবাদী অভিনেতা শুভাশিস মুখোপাধ্যায় (Subhasish Mukherjee)। টেলিপর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী সোনামনি থেকে রিমঝিম সকলেই বলছেন, এই উৎসবে শামিল হওয়া পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানোর মতো।
পড়ন্ত গোধূলিতে বেজে উঠেছে রাজ্য সংগীতের সুর। মঞ্চে তখন এক ফ্রেমে কিংবদন্তি পরিচালক রমেশ সিপ্পি, বাংলার গর্ব সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়,সুজয় ঘোষ, তিলোত্তমা সোম, জাতীয় পুরস্কারজয়ী পরিচালক ও চলচ্চিত্র উৎসবের চেয়ারম্যান গৌতম ঘোষ, দেব, জিৎ, অভিনেতা চিরঞ্জিৎ চক্রবর্তী, প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, রঞ্জিৎ মল্লিক, ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত (Rituparna Sengupta), কোয়েল মল্লিকরা। আর সেই সঙ্গে উপস্থিত শত্রুঘ্ন সিনহা ও আরতি মুখোপাধ্যায়, যাঁদের অভ্যর্থনায় স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দেশ-বিদেশের জুরি মেম্বাররা অবাক চোখে তাকিয়ে দেখছেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান কীভাবে সকলের সঙ্গে মিশে গেলেন নিজস্ব সাবলীলতায়। ধনধান্য অডিটোরিয়ামের প্রতিটি আসনে তখন উপচে পড়া। সকলে ঢুকে পড়েছেন সিনেমার স্বপ্নলোকে। কেউ বসেছেন, কেউ দাঁড়িয়ে থেকেও মুগ্ধ চোখে তাকিয়ে মঞ্চের দিকে। বাইরে আলগা হিমেল পরশ, কানায় কানায় পূর্ণ প্রেক্ষাগৃহের ভিতরে তখন শিল্প, সৃষ্টি আর আবেগে তৈরি হওয়ার সিনে স্পন্দন মুখরিত। আগামী ৭ দিন শহরে শুধুই সিনেমা দেখার আনন্দ।
–
–
–
–
–
–
–
