কারো নাম নেই ভোটার তালিকায়, কারো পরিচয়ে ভুল। এই সব আতঙ্কে যখন রাজ্যে একের পর এক সহনাগরিকদের মৃত্যু হচ্ছে সেই সময় নির্বাচন কমিশনের (Election Commission) বেধে দেওয়া সময়সীমার মধ্যে বাড়ি বাড়ি ফর্ম পৌঁছে দিতে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে কাজ করছেন রাজ্য সরকারের কর্মী বিএলও-রা (BLO)। সেই কাজের চাপ নিতে না পেরে এবার মৃত্যু হল পূর্ব বর্ধমানের (East Burdwan) এক বিএলও-র। মেমারির অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী (ICDS worker) ওই প্রৌঢ়ার পরিবারের দাবি, একদিকে চাকরি অন্যদিকে এসআইআরের (SIR) কাজ নিয়ে অত্যন্ত মানসিক চাপে ছিলেন তিনি। তাই ফর্ম বিলি করার সময়ই মৃত্যু হয় তাঁর।

নির্বাচন কমিশন বিএলও-দের ফর্ম বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে। যে সময় শেষ হচ্ছে মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর। অথচ বিএলও-রা প্রাণ পাত চেষ্টা করেও সম্পূর্ণ করে উঠতে পারছেন না সেই কাজ। প্রথম থেকেই ইনিউমারেশন ফর্ম (enumeration form) দেরিতে পৌঁছানোয় কাজ শুরু করতেই রাজ্যের বহু এলাকায় সমস্যা হয়েছে। অন্য়দিকে নির্বাচন কমিশন বিএলও-দের চাকরির ক্ষেত্রে কোনও সুরাহা দিতে পারেনি। নিজেদের চাকরি করে ফর্ম বিলির কাজের মতো অমানুষিক কাজ করতে হচ্ছে বিএলও-দের।

সেইভাবেই মেমারির চক বলরাম গ্রামের অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী নমিতা হাঁসদা নিজের কাজের জায়গা ও ফর্ম বিলির কাজ সমান তালে করছিলেন। তা সত্ত্বেও তিনি আশঙ্কায় ভুগছিলেন, কমিশনের বেঁধে দেওয়া নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তিনি ফর্ম বিলির কাজ সম্পূর্ণ করতে পারবেন না। কারণ তিনি নিজের অঙ্গনওয়াড়ির কাজ কোনওভাবেই ক্ষতিগ্রস্থ হতে দিতে পারতেন না। পরিবারের লোকেরা তাঁকে সান্ত্বনা দিয়েছিলেন, দেরিতে শেষ করলেও হবে, এমন জানিয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু তাতে শান্ত থাকতে পারেননি নমিতা।

আরও পড়ুন: SIR আতঙ্কে সন্তানকে নিয়ে বিষ খেলেন মা! পরিবারের পাশে তৃণমূল

শনিবার রাতে ইনিউমারেশন ফর্ম (enumeration form) বিলি করার সময়ই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে মৃত ঘোষণা করা হয়। চিকিৎসক মৃত্যুর কারণ হিসাবে জানিয়েছেন ব্রেন স্ট্রোক। এরপরই পরিবারের সদস্যদের দাবি, নির্বাচন কমিশনের কাজের চাপে তিনি মানসিকভাবে অস্থির ছিলেন। এই মৃত্যু কমিশনের সময়সীমার মধ্যে কাজ শেষ করার জন্যই, দাবি পরিবারের।

–

–

–

–

–


