রবিবার মানেই জনপ্রিয় ফ্যামিলি ড্রামা ‘হাম আপকে হ্যায় কৌন’। আর সেই ছবি মানেই রেণুকা সাহানে (Renuka Shahane)। কিন্তু এই সরল মিষ্টিভাষী রেণুকাকে ঠিক তাঁর ক্যারিয়ারে কতটা ভয়ঙ্কর ঘটনার মুখোমুখি হতে হয়েছে সেই কথাই এবার তিনি জানালেন। কাস্টিং কাউচের সেই অভিজ্ঞতার কথা বলতে গেলে এখনও গায়ে কাঁটা দেয় রেণুকার।

এক সাক্ষাৎকারে রেণুকা বলেন, একজন প্রযোজক তাঁর বাড়িতে এসে ভয়ানক প্রস্তাব দেন। বলেন, তিনি বিবাহিত, কিন্তু চান রেণুকা যেন এক শাড়ির কোম্পানির ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর হন। এই পর্যন্ত ঠিক ছিল। কিন্তু পরিবর্তে কী পারিশ্রমিক দেবেন, সেটাই ভয়ানক। রেণুকা বলেন তিনি প্রস্তাব দেন, প্রতি মাসে একটা ‘স্টাইপেন্ড’ দেবেন, যদি তিনি তাঁর সঙ্গে একসাথে থাকেন। রিল দুনিয়ায় সাধারণত এমন প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলে অনেক সময় তার ফল হয় মারাত্মক। প্রতিশোধস্পৃহা জেগে ওঠে। ক্ষমতার জোরে অন্যদের বলে দেওয়া হয় কাস্টিং না করতে। অনেকের কাজ বন্ধ হয়ে যায়, অনেকে টাকা পর্যন্ত পান না। রেণুকা বলেন, “এটা এক ধরনের ক্লাব— যারা মিলে ভুক্তভোগীকে আরও অত্যাচার করে।”

MeToo আন্দোলন নিয়ে প্রশ্ন করা হলে রেণুকা সাহানে বলেন, “#MeToo আন্দোলনের পরে কিছুদিন পরিবর্তন এসেছিল। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল, ৫-৬ বছর পর তাঁরা আবার কাজ পাচ্ছেন, যেন কিছুই হয়নি। অভিযোগের পিছনে পুলিশি প্রমাণ না থাকে, তাহলে মানুষ উলটে যে অভিযোগ করেছিলেন তাঁকেই প্রশ্ন করছে।” রেণুকা জানান, অভিনেত্রী রবিনা ট্যান্ডনও তাঁকে বলেছিলেন কীভাবে তিনি সাবধান থাকতেন। আউটডোর শুটিংয়ে প্রতিদিন রুম বদলাতে হত যাতে কেউ বুঝতে না পারে কোন ঘরে তাঁরা আছেন।”

প্রসঙ্গত, খুব অল্প বয়সেই রেণুকার বাবা-মা আলাদা হয়ে যান। তাঁর বাবা বিজয় সাহানে ছিলেন ভারতীয় নৌবাহিনীর আধিকারিক, আর মা শান্তা গোখেল একজন লেখিকা। বাবা-মায়ের বিচ্ছেদ রেণুকার জীবনে গভীর প্রভাব ফেলে। প্রথমদিকে লোকের মন রেখে চলার চেষ্টা করতেন তিনি কারণ সবাই ডিভোর্সড বাবা-মায়ের সন্তান হিসাবেই দেখত। স্কুলেও এই নিয়ে কটাক্ষ শুনতে হয়েছে। শিক্ষকরাও পরিস্থিতির সুযোগ নিয়েছেন। মায়ের পদবি কী, জিজ্ঞাসা করে আলাদা ভাবে মজা পেত তথাকথিত সমাজ।

অন্যদিকে রেণুকার প্রথম বিয়ে ভেঙে যায় খুব অল্প সময়ে। সেই অভিজ্ঞতার পর বিয়ে ও সম্পর্কের প্রতি একপ্রকার তাঁর বিশ্বাস উঠে গিয়েছিল। কিন্তু তিরিশের কোঠায় এসে আবার অভিনেতা আশুতোষ রানার প্রেমে পড়েন তিনি। ৩৫ বছর বয়সে দ্বিতীয়বার বিয়ে করেন রেণুকা। এখন দুই সন্তান —শৌর্যমান ও সত্যেন্দ্রকে নিয়ে সুখেই দাম্পত্য জীবন কাটাচ্ছেন তিনি।

–

–

–

–



