নদিয়ার তাহেরপুরের কালীনারায়ণপুর মণ্ডলপাড়ায় ক’দিন আগেই এসআইআর-আতঙ্কে মৃত্যু হয় সত্তরোর্ধ্ব শ্যামলকুমার সাহার। বৃহস্পতিবার মৃত শ্যামল সাহার বাড়িতে যান অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে তৃণমূলের আইটি সেলের প্রধান দেবাংশু ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে এক প্রতিনিধিদল। সঙ্গে ছিলেন নদিয়া দক্ষিণের জেলা তৃণমূল সভাপতি দেবাশিস গঙ্গোপাধ্যায়-সহ তৃণমূল নেতৃত্ব। প্রয়াতের পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দেন তাঁরা।

পরিবারের সঙ্গে দেখা করার পর সংবাদ মাধ্যমের সামনে ক্ষোভ উগরে দিয়ে দেবাংশু ভট্টাচার্য বলেন, এটা পরিষ্কার একটা রাষ্ট্রীয় হত্যা। এই কাজ হয়েছে অমিত শাহের নেতৃত্বে। যতবার দিল্লি থেকে বিজেপি প্ল্যান করে এনআরসি, সিএ আর এসআইআর করেছে ততবারই মৃত্যুমিছিল দেখা গিয়েছে বাংলায়। ওরা তো ক’দিন আগেও বলেছিল যে এসআইআরে কোনও হিন্দু ভোটারের নাম বাদ যাবে না। হিন্দুদের কিছু হবে না। কিন্তু দেখা যাচ্ছে হিন্দুদেরও প্রাণ যাচ্ছে। এখন অবধি বাংলায় ১৪-১৫ জন মারা গিয়েছেন এসআইআর-আতঙ্কে। অসমের মতো এখানকার অধিবাসীদেরও ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠানোর প্ল্যান করেছে বিজেপি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এই কারণেই এসআইআর করতে দিতে চাননি। এই আতঙ্কেই মৃত্যু হয়েছে ৭২ বছরের শ্যামলকুমার সাহার। তিনি মূলত বাংলাদেশের বাসিন্দা হলেও প্রায় তিন দশক ভারতে বসবাস করছিলেন এবং ফেরিওয়ালার কাজ করতেন।

পরিবারের অভিযোগ, নাগরিকত্ব নিয়ে সন্দেহ তৈরি হওয়ায় মানসিক চাপে পড়ে খাওয়াদাওয়া বন্ধ করে দেন শ্যামলকুমার সাহা। প্রায়ই মৃত্যুর আশঙ্কা প্রকাশ করতেন। শেষ পর্যন্ত সেই আতঙ্কই তাঁর জীবনে ইতি টানল। তাঁর কাছে ভোটার কার্ড, আধার, প্যান, এমনকী ২০০২ সালের বাড়ির দলিলও ছিল। তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় তাঁর নাম না থাকায় সার-আওতায় তিনি সন্দেহভাজন হন। এলাকাবাসীরাও অনেকেই এই আতঙ্কে রয়েছেন। কেউ দেশ ভাগের সময়, কেউ বা একাত্তরে বাংলাদেশ ছেড়ে ভারতে এসেছিলেন একটুকরো আশ্রয়ের খোঁজে। এখন তাঁরাই সবচেয়ে বেশি মানসিক অশান্তিতে। এই এসআইআরের কোপে আর কত মানুষের প্রাণ যাবে বলা যায় না। এর দায় সম্পূর্ণ কেন্দ্রীয় সরকারের।

আরও পড়ুন- SIR-এর নামে ষড়যন্ত্রের বিরোধিতায় কোচবিহারে পদযাত্রা অভিষেকের

_

_

_

_

_

_
_


