বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের রায়ে দোষী সাব্যস্ত। সেই সঙ্গে বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের সাজা ঘোষণা হল। সেই সঙ্গে মৃত্যুদণ্ডের (death penalty) সাজা শোনানো হল তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী (Home Minister) আসাদুজ্জামান খানকে। আরেক অভিযুক্ত তৎকালীন পুলিশের আইজি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পাঁচ বছরের কারাদণ্ডের (imprisonment) ঘোষণা করা হল। রায় ঘোষণার আগে থেকেই উত্তপ্ত ঢাকা শহরের বিভিন্ন এলাকা। কার্যত স্বৈরাচারী প্রক্রিয়ায় এক পক্ষের বক্তব্যের ভিত্তিতেই রায় ঘোষণা করল বাংলাদেশের আইসিটি, দাবি আওয়ামী লিগ সমর্থকদের। রাজসাক্ষীর বয়ান ও কিছু অডিও ক্লিপের উল্লেখ করে সোমবার এই রায় ঘোষণা করল বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক প্রাইস ট্রাইবুনাল (ICT)।
সোমবার সকাল থেকে ঢাকা জুড়ে একদিকে উত্তেজনা অন্যদিকে উৎকণ্ঠা ছিল রায় ঘোষণার অপেক্ষায়। বিচারপতি গোলাম মোর্তাজার নেতৃত্বে তিন সদস্যের বেঞ্চ মামলার বিভিন্ন অংশ পড়ে শোনানো শুরু করে। সেই সময়ই বিক্ষোভ ও অরাজকতা শুরু হয়ে যায় ঢাকা (Dhaka) শহরে। ধানমণ্ডির শেখ মুজিবর রহমানের (Sheikh Mujibur Rahman) বাড়ির ধ্বংসাবশেষ লক্ষ্য করে ইটবৃষ্টি শুরু হয়। বেঁধে যায় খণ্ডযুদ্ধ।
তারই মধ্যে বিচারপতির বেঞ্চ পড়ে শোনায় শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান ও আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ। সেই অভিযোগের সমর্থনে তথ্য প্রমাণ পেশ তুলে ধরা হয়। সেখানেই কিছু অডিও থেকে পাওয়া বক্তব্য শেখ হাসিনার বক্তব্য বলে তুলে ধরেন বিচারপতি। বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেল (AG) মহম্মদ আসাদুজ্জামান যে তথ্য তুলে ধরেছিলেন, তার ভিত্তিতেই এই বিচার হয়। সেই সঙ্গে তুলে ধরা হয় প্রাক্তন আইজিপি আবদুল্লাহ আল মামুনের বক্তব্যও। তিনিই এই তিন অভিযুক্তের মধ্যে একমাত্র বাংলাদেশে রয়েছেন। তিনি রাজসাক্ষী (approver) হতে সম্মত হন। তাঁর বয়ানের ভিত্তিতে মামলা চালায় বাংলাদেশের আইসিটি (ICT)।
যদিও অভিযুক্ত পক্ষের কোনও সেভাবে তুলে ধরা হয়নি রায় পড়ার আগে। আগেই অবশ্য অভিযুক্ত পক্ষের আইনজীবী দাবি করেছিলেন, অভিযুক্তদের সঙ্গে তাঁর সেভাবে এই মামলার প্রেক্ষিতে যোগাযোগই হয়নি। আর সেখানেই একপক্ষের সওয়ালে রায় ঘোষণা বলে দাবি বাংলাদেশের আওয়ামী লিগ (Awami League) সদস্যদের।
আরও পড়ুন : বাংলাদেশে মৌলবাদী সংগঠন বাড়াচ্ছেন ইউনূস: সাজা ঘোষণার আগে সরব শেখ হাসিনা
রায় ঘোষণার পরে অ্যাটর্নি জেনারেল মহম্মদ আসাদুজ্জামান দাবি করেন, এই শহিদদের প্রতি, দেশের নাগরিকদের প্রতি, গণতন্ত্রের প্রতি, সংবিধানের প্রতি দায়বদ্ধ রায় শোনানো হয়েছে। এর ফলে দেশের পুণরায় শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে। যদিও সেই শান্তির ছবি সোমবার রায় ঘোষণার সময়ই স্পষ্ট হয়ে যায়। ঢাকা জুড়ে যে অরাজকতা ফাঁসির সাজা ঘোষণার সময় শুরু হয়, তাতে বাংলাদেশে নতুন করে অশান্তি ছড়ানোর পূর্বাভাস থেকে গিয়েছে সোমবার।
–
–
–
–
