Tuesday, November 18, 2025

যেন কোনও যাদুকাঠির ছোঁয়ায় এক মাসের মধ্যে এসআইআর প্রক্রিয়ার খসড়া ভোটার তালিকা তৈরির কাজ হয়ে যাবে। ঠিক এভাবেই সহজ কাজ বলে এসআইআর-এর (SIR) প্রাথমিক প্রক্রিয়াকে বর্ণনা করেছিলেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমার (Gyanesh Kumar)। আর তার ফল – ইতিমধ্যেই বাংলায় মৃত্যু হয়েছে একজন বিএলও-র। কেরলে আত্মঘাতী হয়েছেন এক বিএলও (BLO)। কাজের চাপে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি বহু বিএলও। এবার নির্দিষ্ট কাজের বাইরে অপারেটর হিসাবেও কাজের জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে বিএলও-দের। প্রতিবাদে রাজ্যের সিইও (CEO, West Bengal) দফতরে সোমবার আন্দোলনে রাজ্যের বিএলওদের সংগঠন।

নির্বাচন কমিশন বাড়ি বাড়ি ফর্ম (enumeration form) বিলি করার জন্য যে সময়সীমা দিয়েছিল তা যে অবাস্তব, তা প্রমাণিত হয়েছে সেই সময়সীমা কমিশনেরই বাড়ানোর পদক্ষেপে। এরপর ফর্ম সংগ্রহ করার সময় সীমাও বাড়াতে বাধ্য হয়েছে নির্বাচন কমিশন (Election Commission)। কিন্তু তাতেও কুলিয়ে ওঠা সম্ভব হচ্ছে না। কারণ বহু ক্ষেত্রে অনুপস্থিত ভোটার (absentee voter)। কোথাও ফর্ম ফিলাপে দীর্ঘ সময় নিচ্ছেন ভোটাররা। আবার কোথাও তথ্যগত গরমিলে সমস্যায় ভোটার ও বিএলও উভয়পক্ষ। ফলে এখনও ফর্ম জমার প্রক্রিয়া শেষ হতেই অনেক সময় লাগবে।

এরই মধ্যে নির্বাচন কমিশনের তরফে বিএলও-দের ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে বিএলও অ্যাপ (BLO App)। সংগ্রহ করা ফর্মের সব তথ্য ওই অ্যাপে তুলতে হবে। ফর্ম বিলি ও জমা নেওয়ার ক্ষেত্রে কিছুটা সমস্যার মধ্যেও কাজ করেছেন বিএলও-রা। কিন্তু এবার ডিজিটালাইজেশনের কাজ করতে গিয়ে চরম সমস্যায় তাঁরা। তার থেকেও বড় কথা, বিএলওদের দাবি বিএলও (BLO) হিসাবে নিয়োগ করার সময় নির্বাচন কমিশনের (Election Commission) তরফে জানানোই হয়নি এই ডিজিটালাইজেশনের কাজও তাঁদের করতে হবে।

সোমবার সিইও দফতরের (CEO Office) বাইরে বিক্ষোভ জানাতে এসে বিএলও-রা দাবি করেন, মূলত ডেটা এন্ট্রির কাজ করতে বাধ্য করা হচ্ছে বিএলওদের। সেক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের উচিত ডেটা এন্ট্রি অপারেটর (data entry operator) নিয়োগ করা, কারণ বিএলওরা এই ব্যাপারে প্রশিক্ষিত (trained) নন। প্রয়োজনে তাঁরা অপারেটরদের সাহায্য করতে পারেন। দ্বিতীয়ত, যে সময়সীমার মধ্যে ফর্ম পূরণের কাজ করতে বলা হয়েছে তাতে নির্ভুল কাজ হওয়া সম্ভব নয়। আবার ডেটা এন্ট্রির ক্ষেত্রেও অপারেটর ছাড়া নির্ভুল কাজ হওয়া সমস্যাজনক।

আরও পড়ুন : অবাস্তব কাজের চাপ: বাংলার পর কেরল, আত্মঘাতী BLO, কাঠগড়ায় কমিশন

আর সেখানেই উঠে আসছে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর হুমকি। পাশের রাজ্য বিহারে যখন এসআইআর (Bihar SIR) হয়েছিল তখন কাজে ভুল করার জন্য অপরাধী হিসাবে চিহ্নিত বিএলও-রা এখনও শাস্তি ভোগ করছেন। এই প্রসঙ্গ তুলে এসআইআর প্রক্রিয়ার শুরুতেই হুমকি দিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। এবার বিএলও-দের দাবি কমিশনের তাড়াহুড়ো এবং চাপিয়ে দেওয়া কাজের কারণে কোনও ভুল হলে তার দায় সম্পূর্ণভাবে পড়বে বিএলওদের উপর। কমিশন কোনও দায়িত্ব নেবে না। সেক্ষেত্রে কী বাংলার বিএলওদেরও অবস্থা বিহারের বিএলও-দের মতো হবে?

Related articles

এনুমারেশন ফর্ম পূরণে হেল্পলাইন চালু হাওড়ায়, সপ্তাহভর সাহায্য মিলবে ভোটারদের 

হাওড়া জেলা নির্বাচনী দফতর সোমবার থেকে শুরু করে ভোটারদের এনুমারেশন ফর্ম পূরণে সহায়তার জন্য দুইটি হেল্পলাইন চালু করেছে।...

স্ত্রীর পরকীয়া সন্দেহে প্রতিবেশীকে কাঁচি দিয়ে আঘাত স্বামীর, হাসপাতালে যুবক 

স্ত্রীর বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক সন্দেহে প্রতিবেশী এক যুবককে কাঁচি দিয়ে এলোপাথাড়ি আঘাত করল পেশায় দর্জি শেখ শাহরুখ। ঘটনাটি ঘটেছে...

বাগুইআটিতে অ্যাপ ক্যাবে আকস্মিক আগুন, আতঙ্ক এলাকায় 

বাগুইআটি উড়ালপুলের নীচে সোমবার সন্ধ্যায় হঠাৎই আগুন ধরে যায় একটি অ্যাপ ক্যাবে। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, মুহূর্তের মধ্যেই আগুন দ্রুত...

শীর্ষ আদালতে এসএসসি–র জনস্বার্থ মামলা শুনানি থেকে সরে দাঁড়ালেন বিচারপতি সঞ্জয় কুমার 

স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)–র নিয়োগ সংক্রান্ত নতুন জনস্বার্থ মামলার শুনানি থেকে নিজেকে সরিয়ে নিলেন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সঞ্জয়...
Exit mobile version