গোটা দেশের ১২ রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ১ মাসের মধ্যে তৈরি হবে খসড়া ভোটার তালিকা (draft voter list)। সবটাই রাজ্যগুলির সরকারি কর্মীদের ঘাড়ে বন্দুক রেখে, যাঁদের পোশাকি নাম দেওয়া হয়েছে বিএলও (BLO)। সেই চাপে তাঁদের প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অসুস্থ হয়ে পড়া বা মৃত্যুর খবর আসছে। এবার তাই নিয়ে সরব শ্রীরামপুরের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় (Kalyan Bandyopadhyay)।
বাস্তবে বিএলও-রা বর্তমানে কোন পরিস্থিতিতে তার পরিসংখ্যান তুলে ধরে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেন, বিএলও-দের উপর অসম্ভব চাপ তৈরী করা হচ্ছে, যার ফলে এখনও পর্যন্ত ৪৩ জন অ্যাফেক্টেড হয়েছে। যেভাবে নির্বাচন কমিশন (Election Commission) চাপ দিয়েছে। যার মধ্যে ২০ জন আত্মহত্যা করেছে। ১৪ জন মারা গেছে। তিনজন আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে। সারাদিন তাঁদের ফর্ম (enumeration form) বিলি করতে হচ্ছে। তারপর ফর্ম কালেকশন করতে হচ্ছে।
নির্বাচন কমিশন যে রাজ্যগুলির বাস্তবতা না জেনে কাজ চাপিয়ে দিয়েছে বিএলও-দের উপর, তা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে কল্যাণ জানান, পশ্চিমবঙ্গ কৃষি প্রধান রাজ্য। গ্রাম বাংলার চাষীরা এখন মাঠে রয়েছে। তাদের ফর্ম দেওয়া হচ্ছে। বিএলও-রা (BLO) সেই ফর্ম জোগাড় করে আপলোড করতে যাচ্ছেন। কিন্তু করতে পারছেন না। কোনও নেটওয়ার্ক (network) নেই। যে সব মধ্যবয়সী মানুষ বা তার উপরের তাঁরা এই ধরনের কাজে অভ্যস্ত ও নন। কোনও ওয়াইফাই-এর (Wi-Fi) ব্যবস্থা করেনি নির্বাচন কমিশন। একটা অসম্ভব জায়গায় চলে গেছে।
বাস্তবে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikary) যেভাবে বিএলও-দের হুমকি দিয়েছেন এবং ভয়ের পরিবেশ তৈরি করেছেন, তা নিয়ে সরব সাংসদ কল্যাণ। তাঁর দাবি, এমন একটা চাপ তৈরি করেছে যে পঞ্চায়েত অফিসে বসতে দিচ্ছে না বিএলও-দের। যে অফিসে অন্তত ওয়াইফাই এর সুবিধাটা পেতে পারতো বিএলওরা। চারিদিকের অবস্থা খুবই করুন।
কমিশনের ডেকে আনা এসআইআর (SIR) বিপদের পাকে শুধুমাত্র বিএলও-রা নন, পাকে পড়েছেন ভোটাররাও। সেই বাস্তব সমস্যা তুলে কল্যাণের অভিযোগ, প্রচুর ভোটার যাদের ২০০২-এ নাম ছিল না। পরবর্তীকালে এসেছেন। তাঁদের বাবা-মা মারা গেছে। বিভিন্ন জায়গায় চাকরি করত। এখন তাঁদের বাবা-মায়ের এপিক কার্ডের (epic card) নম্বর পাবে কোথায়। একটা অবাস্তব প্রক্রিয়া চালু হয়েছে।
আরও পড়ুন : হাসপাতালে আরও তিন BLO: মুখ্যমন্ত্রীর দাবি খতিয়ে দেখতে বার্তা রাজ্যপালের
আদতে কমিশনের এসআইআর প্রক্রিয়া বেআইনি দাবি করে তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট জানান, কীভাবে দুটো দিকে ভীতি সঞ্চার করা হচ্ছে। একটা বিএলও-দের উপর চাপ তৈরি করা হচ্ছে। আর যারা বৈধ ভোটার তাদের। এসআইআর এক মাসে করতে গেলে পুরনো এসআইআরের তালিকা ধরে করতে হবে, এটা কোথাও নেই। এটা বেআইনি কাজ হচ্ছে। যারা বিএলও আছে তাদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। ভয় পেয়ে তাঁরা আত্মহত্যা করছেন। মারা যাচ্ছেন। অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। আমি নির্বাচন কমিশনকে বলব, আপনি দিল্লিতে ঠান্ডা ঘরে বসে না থাকে পশ্চিমবঙ্গের গ্রামে গ্রামে ঘুরুন। ঠান্ডা ঘরে বসে অনেক জ্ঞান দেওয়া যায়।
–
–
–
