এসআইআরের কাজের চাপ ও আতঙ্ক ঘিরে ফের মৃত্যু এবং অসুস্থতার ঘটনা। সোমবার রাতে পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথির দেশপ্রাণ ব্লকে মারা গেলেন তৃণমূলের প্রাক্তন পঞ্চায়েত সদস্যা সুষমারানি মণ্ডল। বাড়ি পূর্ব আমতলিয়া গ্রামে। পরিবারের দাবি, এসআইআর সংক্রান্ত সমস্যার জেরেই বাড়ছিল উদ্বেগ। ফর্মে তাঁর কিউআর কোড মেলেনি। ফলে নাম বাদ যাওয়ার আশঙ্কা দিন কয়েক ধরেই তাঁকে মানসিকভাবে চেপে ধরছিল। সোমবার রাতে হঠাৎ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় তাঁর। স্বামী প্রসূন মণ্ডলের অভিযোগ, ‘‘এসআইআরের জন্যই স্ত্রীকে হারালাম। দিনরাত দুশ্চিন্তায় ছিলেন। ওঁর নাম বাদ যাবে—এই ভয় সহ্য করতে পারেননি।’’

এদিকে একইদিন অতিরিক্ত কাজের চাপে অসুস্থ হয়ে পড়লেন বাঁকুড়ার পাত্রসায়রের এক মহিলা বিএলও, সবিতা সর্দার। পেশায় আইসিডিএস সুপারভাইজার। দায়িত্ব পড়েছে পাত্রসায়র ব্লকের ২২৪ নম্বর বুথের নারায়ণপুর গ্রামে। মঙ্গলবার সকালে বাড়ি বাড়ি ঘুরে এনুমারেশন ফর্ম সংগ্রহের সময় আচমকাই বুকে ব্যথা অনুভব করেন তিনি। দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে ভর্তি করেন চিকিৎসকেরা।

হাসপাতালের ভিতরেই ভেঙে পড়ে কেঁদে ফেলেন তিনি। তার অভিযোগ, ‘‘অসুস্থ থাকলেও সারা রাত আপলোডের কাজ করতে হয়। দিনে বাড়ি বাড়ি ঘুরে ফর্ম বিলি করতে হয়। শরীর-মন দু’দিক থেকেই ভেঙে পড়ছি।’’ সংশ্লিষ্ট বুথে মোট ভোটারের সংখ্যা ১০৯৮। কর্মসূত্রে নারায়ণপুর অঞ্চলে ভাড়াবাড়িতে থাকেন সবিতা। বাড়িতে রয়েছে তাঁর ছোট শিশু। এলাকাকে ভালভাবে চেনেন না। পারিবারিক সমস্যাও রয়েছে। দায়িত্ব দেওয়ার সময় থেকেই আপত্তি জানালেও লাভ হয়নি বলে দাবি তাঁর।

অসুস্থতার খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে যান তৃণমূলের বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সুব্রত দত্ত। তিনি পাশে থাকার আশ্বাস দিয়ে জানান, ‘‘এসআইআরের নামে নির্বাচন কমিশন প্রাণ নেওয়ার খেলায় নেমেছে। সাধারণ মানুষ ভিটেমাটি হারানোর আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। প্রতিদিন আসছে মৃত্যুর খবর। অতিরিক্ত চাপের ফলে বহু বিএলও অসুস্থ হয়ে পড়ছেন, মানসিক অবসাদে ভুগছেন, কেউ কেউ আত্মহননের পথও বেছে নিচ্ছেন।’’ এসআইআর সম্পর্কিত চাপ এবং দুশ্চিন্তায় ক্রমাগত বাড়ছে প্রশ্ন—এভাবে কতদিন চলবে?

আরও পড়ুন- দেশ চষবেন তৃণমূল সভানেত্রী: বিধানসভা ভোটের আগেই ২০২৯-এর পরিকল্পনা শোনালেন মমতা

_

_

_

_

_
_

