কলকাতা উত্তর ও দক্ষিণের অনেক জায়গায় SIR-এর রেজিস্ট্রেশন সঠিকভাবে হচ্ছে না। সোমবার, মেগা ভার্চুয়াল বৈঠকে উষ্মা প্রকাশ করেছিলেন তৃণমূলের (TMC) সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। তাঁর নির্দেশ মতো মঙ্গলবার, কলকাতার উত্তর ও দক্ষিণের (Kolkata North And South) বিএলএ (BLA) এবং কাউন্সিলর-সহ জনপ্রতিনিধি ও নেতাদের নিয়ে বৈঠক করেন দুই সাংগঠনিক জেলার নেতৃত্ব। সেখানে থেকে স্পষ্ট বার্তা, আর মাত্র ৯ দিন। দ্বিতীয় স্বাধীনতা আন্দোলন মনে করে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। শুধু তাই নয়, যদি কোনও বৈধ ভোটারের নাম বাদ যায়, তাহলে শুধু মাঠের লড়াই নয়, আইনি পথেও লড়বে রাজ্যের শাসকদল।

SIR ইস্যুকে দ্বিতীয় স্বাধীনতা আন্দোলন বলে মনে করে ঝাঁপিয়ে পড়ার বার্তা দিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। মঙ্গলবার, কলকাতা উত্তর ও দক্ষিণের সাংগঠনিক বৈঠক থেকে ফের সেই নির্দেশ দিলেন অরূপ বিশ্বাস, সুব্রত বক্সি, ফিরহাদ হাকিম, অতীন ঘোষরা।

কলকাতা দক্ষিণের বৈঠকে, অভিষেকের নির্দেশ মতোই অরূপ বিশ্বাস (Arup Biswas) বলেন, ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা আন্দোলন করেছিলেন স্বাধীনতা সংগ্রামীরা। আর বহিগাগত বাংলা বিরোধী বিজেপির বিরুদ্ধে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) নেতৃত্বে আন্দোলন করতে হবে। ভোটারদের অধিকারহরণের চক্রান্ত রুখে দিতে হবে। আর মাত্র ৯দিন বাকি। এই সময় দ্বিতীয় আর স্বাধীনতা আন্দোলন মনে করে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। ১০০ শতাংশ বৈধ ভোটারের (Voter) নাম যেন তালিকায় থাকে, সেটি সুনিশ্চিত করতে হবে।

তথ্যপ্রমাণের উপর জোর দেন সুব্রত বক্সি। মন্দিরে যেমন মূর্তি না থাকলে পুজো হয় না, তেমনই এসআইআর ফর্ম জমা দেওয়ার প্রমাণ প্রয়োজন। ফর্মের কপি রাখুন। প্রয়োজনে ছবি তুলে রাখুন। খসড়া প্রকাশের পরে যদি তালিকায় নাম না থাকে, তাহলে লড়াই করতে গেলে ফর্ম জমা দেওয়ার প্রমাণ লাগবে। অ্যাপে তুলে দেওয়ার উপরেও জোর দেওয়া হয়।

সোমবারের বৈঠকেও এই তথ্যপ্রমাণের উপর জোর দিয়েছেন অভিষেক। মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, মাঠে নেমে লড়াইয়ে যেমন অস্ত্র লাগে, তেমন এসআইআর-এর অস্ত্র হল ফর্মেপ কপি। কপি হাতে রাখুন। নির্বাচন কমিশনে দাবি জানাতে বা আইনি লড়াই করার জন্য কপি লাগবে। ফিরহাদ স্পষ্ট জানান, একজন বৈধ ভোটার বাদ গেলে প্রয়োজনে আইনি লড়াই করবে তৃণমূল (TMC)।

এদিন বিএলএ, ওয়ার্ডে নির্বাচনী দায়িত্বপ্রাপ্ত এবং তৃণমূল কর্মীদের প্রতিদিন সকালে বিএলও-র সঙ্গে দেখা করতে বলা হয়। নেতৃত্বের কথায়, তৃণমূল কর্মীরা অন্য কাজও করেন। সেই কারণে যদি কোনও দিন কোনও বিএলএ যেতে না পারেন, তাহলে রিলিভার সেই জায়গায় যান। বিএলএ-রা দু-তিনজন বন্ধুকে সঙ্গে নিন। প্রয়োজনে তাঁরাও সাহায্য করবেন।

এদিন একাধিক কাউন্সিলররা অভিযোগ করেন তোলেন, অনেক বিএলও-রা বলছেন, আজই শেষ দিন। দেবাশিস কুমার বলেন, এরকম কোনও নির্দেশ কমিশন থেকে দেওয়া হয়নি। বিএলও-রা এই ধরেনর কথা বললে চ্যালেঞ্জ করুন। মালা রায় পরামর্শ দেন, এলাকায় মাইকিং করে ভোটারদের দ্রুত ফর্ম জমা দিতে বলুন। কলকাতা দক্ষিণের বৈঠকে সুব্রত বক্সি, অরূপ বিশ্বাস, ফিরহাদ হাকিম, মালা রায় ছাড়াও ছিলেন, জাভেদ খান, বাবুল সুপ্রিয়, রত্না চট্টোপাধ্যায়, স্নেহাশিস চক্রবর্তীরা।

উত্তর কলকাতারের বৈঠক হয় মোহিত মঞ্চে। সেখানে ছিলেন অতীন ঘোষ, শশী পাঁজা, নয়না বন্দ্যোপাধ্যায়, পরেশ পাল, সুপ্তি পান্ডে, স্বপন সমাদ্দার। সেখানে কলকাতা উত্তরের বিভিন্ন জায়গা নিয়ে আলোচনা হয়। সোমবারের বৈঠকে করে বেলেঘাটা, কাশীপুর, চৌরঙ্গী-সহ বেশ কয়েকটি জায়গার কাজে অসন্তোষ প্রকাশ করেন অভিষেক। সেই সব জায়গার জন প্রতিনিধিদের সতর্ক করা হয়।

–

–

