SIR থেকে পুশব্যাক- মোদি-শাহের বিরুদ্ধে একের পর এক ইস্যু তুলে তীব্র আক্রমণ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। বৃহস্পতিবার, বহরমপুর (Baharampur) স্টেডিয়ামের সভা থেকে বিজেপিকে শূন্য করার ডাক দেন মমতা। তাঁর অভিযোগ, মানুষের কাজ আটকে দিয়ে নির্বাচনমুখী রাজনীতি করতে চাইছে কেন্দ্র। তৃণমূল সুপ্রিমো প্রশ্ন তোলেন, কেন বিজেপিশাসিত রাজ্যে SIR হচ্ছে না।
এদিন ফের SIR নিয়ে ফের মোদি সরকার তথা অমিত শাহকে (Amit Shah) নিশানা করেন তৃণমূল (TMC) সুপ্রিমো। তাঁর অভিযোগ বলেন, প্রশ্ন তোলেন, “হিম্মত থাকলে দু’বছর আগেই এসআইআর ঘোষণা করেননি কেন? এখন কেন? কারণ ভোট সামনে!” মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, বেছে বেছে অবিজেপি রাজ্যগুলিতেই SIR করা হচ্ছে। তিনি বলেন, “তামিলনাড়ু, কেরালা, বাংলা , মাত্র চারটি রাজ্যে এসআইআর হচ্ছে। কেন? কারণ এই রাজ্যগুলোতে বিরোধী শক্তি আছে। তাই কেন্দ্রের নিশানায়। কিন্তু অসমে , ত্রিপুরায় হবে না কেন? কারণ ওখানেও ওরা বসে আছে!” মমতার কথায়, “যদি দেশসুরক্ষার এতই চিন্তা থাকে, তাহলে সর্বভারতীয়ভাবে এটাকে চালু করুন। কিছু রাজ্যে আলাদা করে ঘোষণা মানে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ছাড়া আর কিছুই নয়”।
এর পরেই সরাসরি বিজেপিকে শূন্য করার ডাক দেন তৃণমূল সভানেত্রী। বলেন, ”বিজেপি বাংলা বিদ্বেষী। বাংলা ও বাঙালিকে নিশানা করছে। ওরা পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর অত্যাচার করছে। কেউ বাংলায় কথা বললেই ভিন রাজ্যে তাদের বাংলাদেশী বলে দাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে। বাংলা সব ধর্মকে সম্মান করে। কিন্তু সাম্প্রদায়িক শক্তিকে মানবে না। যারা সাম্প্রদায়িকতার রক্তের হোলি খেলছে, তাদেরও সতর্ক করছি। এবার বিজেপিকে শূন্য করে দিন একটিও ভোট দেবেন না।”
মমতা বলেন, বাংলায় এসআইআর নিয়ে ধর্মের রাজনীতি চলছে। SIR-এর জন্য ৪০জনের মৃত্যু হয়েছে জানান মুখ্যমন্ত্রী। বিজেপিকে কটাক্ষ করে বলেন, ”যাঁরা এসআইআর আবহে মারা গিয়েছেন, তার মধ্যে তো অর্ধেকের বেশি হিন্দুও রয়েছেন। যে গাছের ডালে বসেছেন, সেই ডাল কাটবেন না!”
মালদহের পরে মুর্শিদাবাদ থেকেও মানুষকে আশ্বস্ত করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “চিন্তা করবেন না। বাংলায় কোনও ডিটেনশন ক্যাম্প হতে দেব না। আপনাদের নিরাপত্তার দায়িত্ব আমার। আমি থাকতে বাংলা থেকে কাউকে তাড়াতে দেব না।”
মোদি সরকার ও নির্বাচন কমিশনকে এক তিরে নিশানা করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “বিরোধী রাজ্যগুলোর সরকারকে কাজ করতে না দিয়ে নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে চাইছে বিজেপি। আর কমিশন সব দেখেও কিছু বলছে না”।
আরও খবর: একটা ধান পচে গেলে সরিয়ে দিতে হয়: নাম না করে হুমায়ুনকে নিশানা মমতার, বহরমপুরের সভায় সম্প্রীতির বার্তা
বাংলার বঞ্চনা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী সরব হন। বলেন, “মানুষকে দু’মুঠো অন্ন জোগানোর জন্য টাকা দেয় না। রাস্তা, ঘর, সেচ- কোনও উন্নয়নের টাকা দেয় না। অথচ ভোটের ছ’মাস আগে হঠাৎ এসআইআর! সরকার যাতে কাজই না করতে পারে, সেই জন্যই এই ঘোষণা।” কেন্দ্রকে নিশানা করে মমতা বলেন, “ভেবেছিলে ১০০ দিনের টাকা আটকে আমাদের জব্দ করবে। মা, বোনেদের হাতা খুন্তি দেখেছো তো! রান্নাও করে, প্রয়োজনে অন্যভাবেও কাজে লাগানো যায়!”
একই সঙ্গে রাজ্যবাসীকে সতর্ক করে মুখ্যমন্ত্রী পরামর্শ দেন, “হেয়ারিংয়ে ডাকলে যাবেন, না গেলে নামটা কেটে দিয়ে বলবে তুমি এ দেশের নাগরিক নও।” হেয়ারিংয়ে যাওয়ার জন্য যাতে কোনও সমস্যা না হয়, তার জন্য প্রতিটি বুথে তৃণমূলের তরফে ক্যাম্প এবং প্রতি গ্রাম পঞ্চায়েতে সরকারের তরফে ‘মে আই হেল্প ইউ’ ক্যাম্প থাকবে জানিয়েছেন দলনেত্রী।
–
–
