মেঘালয়ের জীববৈচিত্র্যময় অরণ্যে সন্ধান মিলল দু’টি নতুন লাফানো মাকড়সার প্রজাতির। জুলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া (জেডএসআই)-এর বিজ্ঞানীরা সম্প্রতি আবিষ্কার করেছেন আসেমোনিয়া ডেনটিস এবং কোলিটাস নংওয়ার নামের এই দু’টি প্রজাতি। আন্তর্জাতিক মহলে ইন্দো-মায়ানমার জীববৈচিত্র্য অঞ্চলের গুরুত্ব আরও একবার প্রতিষ্ঠা করল এই সন্ধান। নতুন প্রজাতিগুলি সালটিসিডি বা লাফানো মাকড়সা পরিবারের অন্তর্গত। চটপটে গতি, সূক্ষ্ম দৃষ্টি এবং জাল না বুনেও শিকারকে লাফিয়ে ধরার ক্ষমতার জন্য এই পরিবার অন্যদের থেকে আলাদা।
আসেমোনিয়া ডেনটিস: দেশে তৃতীয় প্রতিনিধির সন্ধান
ভারতে আসেমোনিয়া গণের মাত্র তৃতীয় প্রতিনিধি হল আসেমোনিয়া ডেনটিস। আকারে ছোট হলেও প্রজাতিটি বৈশিষ্ট্যে অনন্য। পুরুষ মাকড়সার ‘পালপাল ফিমার’-এ দাঁতের মতো গঠন থাকার কারণে ‘ডেনটিস’ নাম রাখা হয়েছে। এই অংশই প্রজাতিটির প্রধান পরিচয়চিহ্ন। পুরুষের দেহ সবুজ-বাদামি, পেটের অংশে উল্টো ভি আকৃতির হালকা হলুদ দাগ। স্ত্রী মাকড়সার গায়ে থাকে সাদা দুধসরের রঙ, কালচে নকশাবিহীন।

কোলিটাস নংওয়ার: মেঘালয়ের গ্রামের নামে নামকরণ
কোলিটাস পরিবারের দ্বিতীয় প্রাচ্যের প্রজাতি হিসেবে ভারতের নথিবদ্ধ তালিকায় যুক্ত হল কোলিটাস নংওয়ার। মেঘালয়ের নংওয়ার গ্রাম থেকেই এর আবিষ্কার হওয়ায় সেই নামেই প্রজাতিটির পরিচয় স্থির হয়েছে। পুরুষ-স্ত্রী উভয়ের শরীরে লালচে বাদামি ডিম্বাকৃতি ‘ক্যারাপেস’ এবং হালকা বাদামি পেট। সামনে সাদা ডোরা এবং পিছনে পাঁচটি সেভ্রন আকৃতির দাগ তাদের বিশেষ বৈশিষ্ট্য।

উত্তর-পূর্বের অরণ্যে আরও অজানা প্রজাতির সম্ভাবনা
গবেষণা দলের প্রধান ডঃ সৌভিক সেন এবং ডঃ সুধীন পি পি জানান, উত্তর-পূর্ব ভারতে এখনও বহু অঞ্চল সঠিকভাবে জরিপ হয়নি। তাই আরও বহু অজানা প্রজাতি আবিষ্কারের সম্ভাবনা প্রবল। জেডএসআই-এর পরিচালক ডঃ ধৃতি বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, উত্তর-পূর্বের পবিত্র অরণ্যভূমি ও পর্বতমালা ভারতের প্রাকৃতিক ঐতিহ্যের বিশাল ভাণ্ডার। এই ধরনের আবিষ্কার দেখিয়ে দেয়, জীববৈচিত্র্য নথিভুক্ত করতে আরও বিস্তৃত জরিপের প্রয়োজনীয়তা কতটা জরুরি। দু’টি প্রজাতির পূর্ণ বৈজ্ঞানিক বিবরণ প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক সাময়িকী জুটাক্সা-র সাম্প্রতিক সংখ্যায়।

আরও পড়ুন- সমবায় নির্বাচনে সবুজ ঝড়! সন্দেশখালিতে বিজেপিকে উড়িয়ে ৯ আসনেই জয়ী তৃণমূল

_

_

_

_

_
_


