তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পকে আরও উৎসাহ দিতে সম্পত্তি করের ক্ষেত্রে বড় ছাড়ের সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য সরকার। পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর পশ্চিমবঙ্গ মিউনিসিপ্যাল আইন, ১৯৯৩ সংশোধন করে তথ্যপ্রযুক্তি এবং তথ্যপ্রযুক্তি-নির্ভর পরিষেবা শিল্পের জন্য সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ পর্যন্ত সম্পত্তি কর ছাড়ের ব্যবস্থা করেছে। রাজ্য সরকারের অনুমোদনের পরবর্তী ত্রৈমাসিক থেকে শুরু করে টানা বারো বছর এই ছাড় কার্যকর থাকবে বলে নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে।
প্রশাসনিক মহলের ধারণা, রাজ্যে তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে বিনিয়োগ বৃদ্ধির প্রেক্ষিতেই এই সিদ্ধান্ত। সাম্প্রতিক কালে রাজ্যে তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পে যে বিনিয়োগের ঢেউ দেখা যাচ্ছে, তা জাতীয় স্তরেও নজর কেড়েছে। চলতি বছরের ২১ জুলাই সংখ্যায় ইন্ডিয়া টুডে পত্রিকায় প্রকাশিত ‘এ নিউ আইটি সানরাইজ’ শীর্ষক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, মজবুত পরিকাঠামো এবং দক্ষ মানবসম্পদের জোরে দেশের একাধিক প্রথম সারির তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা কলকাতাকেই নতুন হাব হিসেবে বেছে নিচ্ছে।
নয়া সংশোধনী অনুযায়ী, শুধুমাত্র সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট এবং সফটওয়্যার প্রোগ্রামিংয়ে যুক্ত শিল্পগুলিই এই করছাড়ের সুবিধা পাবে। পাশাপাশি তথ্যপ্রযুক্তি-নির্ভর পরিষেবা শিল্পের আওতায় থাকা কল সেন্টার, বিমা দাবি নিষ্পত্তি, চিকিৎসা ও আইনি ট্রান্সক্রিপশন, কনটেন্ট ডেভেলপমেন্ট, কম্পিউটার অ্যানিমেশন, ডেটা প্রসেসিং, কম্পিউটার-সহায়তাপ্রাপ্ত ইঞ্জিনিয়ারিং ও নকশা, রিমোট মেইনটেন্যান্স, রাজস্ব হিসাব, সাপোর্ট সেন্টার, ওয়েবসাইট পরিষেবা এবং অ্যাকাউন্টিং, ডেটা প্রসেসিং ও ডেটা মাইনিংয়ের মতো সহায়ক পরিষেবাগুলিও এই ছাড়ের আওতায় থাকবে। ভবিষ্যতে রাজ্যের তথ্যপ্রযুক্তি দপ্তর যে সব পরিষেবাকে তথ্যপ্রযুক্তি-নির্ভর পরিষেবা হিসেবে নোটিফাই করবে, সেগুলিও এই সুবিধা পাবে।
যদিও রাজ্যের তথ্যপ্রযুক্তি কার্যকলাপের বড় অংশ এখনও প্রথম সারির শহরগুলিতেই কেন্দ্রীভূত, তবে ভারসাম্যপূর্ণ আঞ্চলিক উন্নয়নের লক্ষ্যে দ্বিতীয় সারির শহরগুলিতেও এই শিল্প ছড়িয়ে দিতে উদ্যোগ বাড়ানো হয়েছে। শিলিগুড়ি, কল্যাণী, দুর্গাপুর, কৃষ্ণনগর, আসানসোল এবং বোলপুরকে সম্ভাবনাময় কেন্দ্র হিসেবে চিহ্নিত করেছে তথ্যপ্রযুক্তি দফতর।
রাজ্য প্রশাসনের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, তথ্যপ্রযুক্তি রফতানির ক্ষেত্রেও উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি হয়েছে। ২০১১ সালে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার সময় যেখানে রাজ্যের তথ্যপ্রযুক্তি রপ্তানির পরিমাণ ছিল প্রায় ৪,৫০০ কোটি টাকা, সেখানে বর্তমানে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩৫,০০০ কোটি টাকায়। নতুন করছাড়ের সিদ্ধান্তে রাজ্যে তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পে বিনিয়োগ এবং কর্মসংস্থানের গতি আরও বাড়বে বলেই মনে করছে প্রশাসনিক মহল।
আরও পড়ুন- একই দিনে মুর্শিদাবাদের পর এসআইআই আতঙ্কে আত্মহত্যার অভিযোগ দুর্গাপুরে
_
_
_
_
_
