ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান (Ghatal Master Plan) রূপায়ণের পথে আরও এক ধাপ এগোল রাজ্য সরকার। দীর্ঘদিন আটকে থাকা এই বন্যা-নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পের প্রস্তুতির অঙ্গ হিসেবে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার একাধিক গুরুত্বপূর্ণ নদী ও খালের উপর হাতে কলমে সমীক্ষা চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। জানা গিয়েছে, শিলাবতী নদী ও কাটান খালের নির্দিষ্ট অংশে এই সমীক্ষার কাজ করবে সেচ ও জলপথ দফতরের অধীন ইরিগেশন অ্যান্ড ওয়াটারওয়েজ ডিরেক্টোরেট।
প্রশাসনিক কর্তাদের মতে, ভবিষ্যতে ড্রেজিং ও ডি-সিল্টিংয়ের কাজ শুরু করার আগে নদীর তলদেশে পলি জমার পরিমাণ, নদীর গভীরতা এবং চ্যানেলের প্রস্থ সংক্রান্ত প্রাথমিক তথ্য সংগ্রহ করাই এই সমীক্ষার মূল উদ্দেশ্য। আপাতত এই পর্যায়ে কোনও ড্রেজিং বা নদী থেকে পলি তোলার কাজ হবে না বলেও স্পষ্ট করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, দাসপুর-১ ব্লকের রামদেবপুর থেকে সিমানা পর্যন্ত শিলাবতী নদীর প্রায় ১৪.১ কিলোমিটার অংশে সমীক্ষা চালানো হবে। পাশাপাশি ঘাটাল ব্লকের হিজলি থেকে পান্না পর্যন্ত কাটান খালের প্রায় ১৬.২ কিলোমিটার অংশও সমীক্ষার আওতায় থাকছে। এই দুই জলপথই পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার অন্তর্গত, যেখানে বর্ষা এলেই বিস্তীর্ণ নিচু এলাকায় নিয়মিত জল জমার সমস্যা দেখা দেয়। আরও পড়ুন: তৃণমূল কাউন্সিলর খুনে সাজা ঘোষণা, তিনদোষীর যাবজ্জীবন

উল্লেখযোগ্য ভাবে, এই সমীক্ষা কাজ রাজ্য সরকারের কোষাগারের উপর কোনও আর্থিক চাপ না ফেলেই করা হচ্ছে। প্রশাসনিক সূত্রে জানানো হয়েছে, ‘নো কস্ট টু স্টেট এক্সচেকার’ ভিত্তিতে এই সমীক্ষা চালানো হচ্ছে। সেচ ও জলপথ দপ্তরের কংসাবতী ক্যানালস ডিভিশন নম্বর–৪ এই কাজের বাস্তবায়নের দায়িত্বে রয়েছে। সমীক্ষার অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে এসডিএস প্রকল্পের আওতায়।

ঘাটাল মহকুমার বাসিন্দারা দীর্ঘদিন ধরেই নদী ও খালগুলিতে অতিরিক্ত পলি জমে থাকার অভিযোগ জানিয়ে আসছেন। তাঁদের বক্তব্য, জলপথগুলির স্বাভাবিক নিকাশি ক্ষমতা কমে যাওয়ায় বর্ষায় জল দ্রুত নামতে পারে না। ফলে বহু গ্রাম দীর্ঘ সময় ধরে জলবন্দি হয়ে পড়ে এবং কৃষিজমিতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়তে হয়। প্রশাসনের দাবি, এই সমীক্ষার মাধ্যমে কোন কোন অংশে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে পলি তোলার প্রয়োজন, তা চিহ্নিত করা সম্ভব হবে। এক বছরের মধ্যে সমীক্ষার কাজ শেষ করার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। তার পরেই ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের অধীনে পরবর্তী পদক্ষেপের রূপরেখা চূড়ান্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন আধিকারিকেরা।

প্রসঙ্গত, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই জানিয়েছিলেন, কেন্দ্র বারবার অনুরোধ সত্ত্বেও অর্থ বরাদ্দ না করায় রাজ্য সরকার নিজ উদ্যোগেই ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান কার্যকর করার পথে এগোচ্ছে। বর্তমান সমীক্ষা সেই দিকেই প্রস্তুতির একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলে মনে করছে প্রশাসনিক মহল।

–

–

–

–

–


