সংগীতজগতে দীর্ঘ চার দশকের সাফল্যের কাহিনি থাকলেও ব্যক্তিগত জীবনের বিতর্কে ফের শিরোনামে কিংবদন্তি গায়ক কুমার শানু। প্রাক্তন স্ত্রী রীতা ভট্টাচার্যের করা একাধিক অভিযোগকে মানহানিকর বলে দাবি করে মুম্বই হাইকোর্টে মামলা করলেন তিনি। সেই সঙ্গে ক্ষতিপূরণ হিসেবে ৩০ লক্ষ টাকা দাবি করেছেন গায়ক।
প্রায় দুই দশক আগে, ২০০১ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি বান্দ্রা ফ্যামিলি কোর্টে কুমার শানু ও রীতা ভট্টাচার্যের বিবাহবিচ্ছেদ হয়। সেই সময় দু’পক্ষের মধ্যে একটি চুক্তিও স্বাক্ষরিত হয়েছিল, যেখানে ভবিষ্যতে একে অপরের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ তোলা হবে না বলে স্পষ্ট উল্লেখ ছিল। কুমার শানুর আইনজীবীর দাবি, সাম্প্রতিক অভিযোগ সেই চুক্তির সরাসরি লঙ্ঘন।

কয়েক মাস আগে সমাজমাধ্যমে রীতা ভট্টাচার্য গায়কের বিরুদ্ধে একাধিক গুরুতর অভিযোগ তোলেন। তাঁর দাবি ছিল, দাম্পত্য জীবনে তাঁকে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে। এমনকি অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় দিনের পর দিন না খাইয়ে রাখার অভিযোগও করেন তিনি। সন্তানের জন্মের পরেও পরিস্থিতির কোনও পরিবর্তন হয়নি বলে দাবি রীতার। ছেলের জন্য আর্থিক সাহায্য চাইতে গিয়ে অপমানিত হতে হয়েছিল বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

রীতার বক্তব্যে আরও উঠে আসে, বিভিন্ন অজুহাতে তাঁকে ঘরে আটকে রাখা হত, গায়কের একাধিক বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক ছিল এবং সন্তানদের খাবারের ব্যবস্থাও ইচ্ছাকৃতভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। জীবনধারণের জন্য নিজের গয়না বিক্রি করতে হয়েছিল বলেও দাবি করেন তিনি। এই সব মন্তব্য দ্রুত সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

এর পরই এই মন্তব্যে ক্ষুব্ধ হয়ে কুমার শানু আদালতের দ্বারস্থ হন। তাঁর অভিযোগ, এই ধরনের মন্তব্যে তাঁর দীর্ঘদিনের সুনাম মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং তিনি মানসিক অবসাদের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন। ১৭ ডিসেম্বর মামলার শুনানিতে গায়ক জানান, শুধু ক্ষতিপূরণ নয়, তাঁর বিরুদ্ধে করা সমস্ত অভিযোগ ও মন্তব্য অবিলম্বে সরিয়ে ফেলার নির্দেশও চান তিনি।

কুমার শানুর হয়ে আদালতে সওয়াল করেন আইনজীবী সানা রাইস খান। তাঁর বক্তব্য, চার দশক ধরে কুমার শানু তাঁর কণ্ঠের জাদুতে কোটি কোটি শ্রোতাকে মুগ্ধ করেছেন। সস্তা প্রচারের উদ্দেশ্যে করা মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে একজন গুণী শিল্পীর সম্মান নষ্ট করা যায় না।

জানা গিয়েছে, চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে রীতার মন্তব্য ভাইরাল হওয়ার পর ২৭ সেপ্টেম্বর কুমার শানু তাঁর প্রাক্তন স্ত্রীকে আইনি নোটিস পাঠান। একই সঙ্গে যে সব ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে এই মন্তব্য প্রকাশিত হয়েছিল, সেগুলিকেও নোটিস পাঠানো হয়। সাক্ষাৎকার ও মন্তব্য সরানো না হলে আইনি পদক্ষেপের হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়েছিল। এই মামলার মধ্যেই গায়কের প্রাক্তন প্রেমিকা ও অভিনেত্রী কনিকা সদানন্দকে ঘিরে নতুন বিতর্কের সূত্রপাত হয়েছে। তবে এই বিষয়ে কুমার শানু এখনও কোনও মন্তব্য করতে চাননি।

আরও পড়ুন- বড়দিন ও বর্ষবরণে আইনশৃঙ্খলা আঁটসাঁট, পুলিশের ছুটিতে নিষেধাজ্ঞা রাজ্য জুড়ে

_

_
_


