নির্বাচনের আগে সীমান্ত জেলায় ভার্চুয়াল সভায় ফের একবার অনুপ্রবেশ অস্ত্রে শান দেওয়ার চেষ্টা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির। তাহেরপুরে মোদির সভার আগেই বিভিন্ন এলাকায় গো ব্যাক মোদি পোস্টার দেখা যায়। তাতেই যে বেজায় খেপেছেন প্রধানমন্ত্রী (Prime Minister), তা স্পষ্ট তাঁর ভাষণে। গো ব্যাক মোদি পোস্টারের পিছনে তৃণমূলের হাত রয়েছে, এমন ইঙ্গিত করে বাংলায় অনুপ্রবেশকারী (infiltration) ইস্য়ুতে তৃণমূলকে বিঁধবার চেষ্টা চালান নরেন্দ্র মোদি। আর সেটা যে আত্মঘাতী গোল (same side goal) তা স্মরণ করিয়ে দিতে দেরি করেনি বাংলার শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। সেই সঙ্গে সাম্প্রতিক এসআইআর-এর (SIR) খসড়া ভোটার তালিকার (draft voter list) উল্লেখ করে চ্যালেঞ্জ জানানো হয়, বাংলায় অনুপ্রবেশকারীর তথ্য পেশ করার।
অনুপ্রবেশকারীরা বাংলা দখলের চেষ্টা চালাচ্ছে, এমন অভিযোগ তুলে নরেন্দ্র মোদি ভার্চুয়াল সভায় দাবি করেন, বিজেপির চেষ্টা থাকে ‘গো ব্যাক অনুপ্রবেশকারী’ লেখার। কিন্তু দুর্ভাগ্য ‘গো ব্যাক মোদি’ (Go Back Modi) লিখে বাংলার জনবিরোধী স্লোগান দিচ্ছে। কিন্তু ‘গো ব্যাক অনুপ্রবেশকারী’ তারা লিখতে পারে না। যাঁদের সাথীরা বাংলা দখল করার চেষ্টা করছে, তারা তৃণমূলের সব থেকে বেশি প্রিয়। এটাই তৃণমূলের চেহারা। তৃণমূল অনুপ্রবেশকারীদের বাঁচাতে বাংলায় এসআইআরের বিরোধিতা করছে।

অনুপ্রবেশ ইস্য়ু নিয়ে মোদি মুখ খুললেই যে আত্মঘাতী গোল হবে, স্মরণ করিয়ে তৃণমূল রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের দাবি, নরেন্দ্র মোদি আপনার মুখ থেকে যতবার অনুপ্রবেশের (infiltrators) কথা বেরোবে, সেটা গিয়ে অমিত শাহর (Amit Shah) সঙ্গে বলুন গিয়ে সীমান্ত তো দেখে না রাজ্যের পুলিশ। সেটা কেন্দ্রের দায়িত্ব।

নরেন্দ্র মোদি নিজের ভাষণে বাংলার অনুপ্রবেশের সঙ্গে ত্রিপুরার তুলনা করেন। সেই প্রসঙ্গে দাবি করেন, বাংলার বোগলে ত্রিপুরায় আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা হয়েছে। ত্রিপুরায় ৩০ বছরের লাল ঝাণ্ডার সরকার সরিয়ে দিয়েছি। সেখানে উন্নয়ন হচ্ছে। সেখানেই পাল্টা ত্রিপুরার প্রসঙ্গ তুলে কুণাল ঘোষের প্রশ্ন, আপনার সরকার ত্রিপুরায়। সেখানে কী করে রোহিঙ্গা, বাংলাদেশি ধরা পড়ে। আপনার সরকারের দায়িত্ব সীমান্ত রক্ষা করা। আপনি সেখানে ব্যর্থ। মুখে ফাটা রেকর্ডের মতো যতবার বলবেন অনুপ্রবেশকারী, ততবার সেটা আত্মঘাতী গোল হবে।

রাজ্যে বিজেপির নেতারা বারবার বাংলায় অনুপ্রবেশকারী, বাংলাদেশী থাকার অভিযোগ তুলেছেন। তাঁদের সব অভিযোগ বন্ধ হয়ে গিয়েছে এসআইআর-এর খসড়া তালিকা প্রকাশের পরে। তবে নরেন্দ্র মোদির মুখে ফের অনুপ্রবেশকারী প্রসঙ্গ উঠে আসায় এবার পাল্টা প্রশ্ন তৃণমূলের। মোদি অভিযোগ করেন, তৃণমূল অনুপ্রবেশকারীদের বাঁচানোর জন্য এসআইআর-এ বাধা দিয়েছে। পাল্টা তৃণমূলের প্রশ্ন, যদি এসআইআর (SIR) বেআইনি অনুপ্রবেশকারীদের (infiltrators) তাড়ানোর জন্য হয়ে থাকে, তবে নির্বাচন কমিশন (EC) কেন সেই তালিকা প্রকাশ করছে না, যেখানে ভোটার তালিকা থেকে বাদ পড়া বাংলাদেশি বা রোহিঙ্গাদের নাম রয়েছে? কোথায় গেল সেই অনুপ্রবেশকারীরা? কেন তাঁদের আলাদা করে চিহ্নিতকরণ হল না? যদি সত্যিই সেরকম মানুষ থেকে থাকে, তবে তাঁদের তথ্য কেন লুকানো হচ্ছে?

আরও পড়ুন : We want East Bengal Back: মোদির সভায় কী বাংলাদেশ দখলের ডাক!

মোদির সভার বক্তব্যের পাশাপাশি বঙ্গ বিজেপির নেতাদের চ্যালেঞ্জ করে তৃণমূলের তরফে কেন্দ্রের সরকারেরই তথ্য পেশ করা হয়। প্রশ্ন তোলা হয়, কয়েকমাস ধরে বিজেপির নেতারা দাবি করে চলেছে, বাংলায় ১ কোটি অনুপ্রবেশকারী লুকিয়ে রয়েছে। তা সত্ত্বেও সংসদে কেন্দ্রীয় বিদেশ মন্ত্রক (MEA) যে তথ্য পেশ করছে সেখানে জানানো হচ্ছে, গত ১০ বছরে গোটা দেশে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে ১৮,৮৫১ জন অনুপ্রবেশকারী ও ভারত-মায়ানমার সীমান্ত দিয়ে ১,১৬৫ জন অনুপ্রবেশকারী ধরা পড়েছে।

If SIR was genuinely meant to weed out illegal infiltrators, why has @ECISVEEP failed to disclose how many Bangladeshis or Rohingyas were actually detected in the voter rolls? Where are they? Why were they not identified? And if they were, why is this data being concealed?
For… https://t.co/UydHaHx9JL pic.twitter.com/AcWcCNyHAE
— All India Trinamool Congress (@AITCofficial) December 20, 2025
–

–



