Monday, December 22, 2025

নির্বাচনী বন্ড বন্ধের পরও অনুদান বিতর্ক, সরকারি তথ্যে বিজেপির দখলে ৮২ শতাংশ 

Date:

Share post:

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে নির্বাচনী বন্ড ব্যবস্থা বন্ধ হওয়ার পরও রাজনৈতিক অনুদান ঘিরে নতুন করে বিতর্ক দানা বাঁধল। সরকারি তথ্য বলছে, ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে রাজনৈতিক দলগুলির প্রাপ্ত মোট অনুদানের সিংহভাগই গিয়েছে বিজেপির ঝুলিতে। মোট ৩৮১১ কোটি টাকার অনুদানের মধ্যে ৩১১২ কোটি টাকা, অর্থাৎ প্রায় ৮২ শতাংশই পেয়েছে বিজেপি। এই তথ্য সামনে আসতেই বিরোধী শিবিরে প্রশ্ন উঠেছে কেন্দ্রের শাসক দলের ভূমিকা ও নৈতিকতা নিয়ে।

উল্লেখ্য, সুপ্রিম কোর্ট নির্বাচনী বন্ড ব্যবস্থাকে অসাংবিধানিক ঘোষণা করে ২০২৪ সালে তা বন্ধ করার নির্দেশ দেয়। কিন্তু তার পরেও ইলেক্টোরাল ট্রাস্টের মাধ্যমে অনুদান সংগ্রহে কোনও ভাটা পড়েনি। বরং সরকারি হিসেব অনুযায়ী, এই খাতে অনুদান বেড়েছে প্রায় ২০০ শতাংশ। ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে যেখানে অনুদানের অঙ্ক ছিল ১২১৮ কোটি টাকা, সেখানে ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৮১১ কোটি টাকায়।

নির্বাচন কমিশনের কাছে ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত জমা পড়া তথ্য অনুযায়ী, ১৯টি নিবন্ধিত ইলেক্টোরাল ট্রাস্টের মধ্যে ৯টি ট্রাস্টের অনুদান সংক্রান্ত রিপোর্টে এই বিপুল অঙ্কের উল্লেখ রয়েছে। এর মধ্যে বিজেপিই সবচেয়ে বেশি লাভবান হয়েছে। কংগ্রেস পেয়েছে প্রায় ২০০ কোটি টাকা, আর অন্যান্য বিরোধী দলগুলি মিলিয়ে পেয়েছে আনুমানিক ৪০০ কোটি টাকা।

সবচেয়ে বেশি অনুদান সংগ্রহকারী ট্রাস্ট হিসেবে উঠে এসেছে প্রুডেন্ট ইলেক্টোরাল ট্রাস্ট। এই ট্রাস্টের মাধ্যমে ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে মোট ২৬৬৮ কোটি টাকা অনুদান দেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে ২১৮০.০৭ কোটি টাকাই গিয়েছে বিজেপির তহবিলে। বিভিন্ন নামী বহুজাতিক সংস্থার অনুদান এই ট্রাস্টের মাধ্যমেই এসেছে বলে জানা গিয়েছে।

এর আগের অর্থবর্ষেও অনুদান সংগ্রহে শীর্ষে ছিল বিজেপি। ২০২৩-২৪ সালে দলটি মোট ৩৯৬৭.১৪ কোটি টাকা অনুদান পেয়েছিল, যার মধ্যে ১৬৮৫.৬২ কোটি টাকা, অর্থাৎ প্রায় ৪৩ শতাংশ এসেছিল নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে। এই পরিসংখ্যান সামনে আসতেই বিরোধীদের অভিযোগ, নির্বাচনী বন্ড বন্ধ হলেও কার্যত অন্য পথে একই ব্যবস্থাই চালু রেখেছে কেন্দ্রের শাসক দল। তাদের দাবি, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার ভয় দেখিয়ে বেসরকারি সংস্থাগুলিকে অনুদান দিতে বাধ্য করা হচ্ছে এবং বিরোধী দলগুলিকে আর্থিক দিক থেকে কোণঠাসা করা হচ্ছে। বিজেপির পক্ষ থেকে যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। তবু সরকারি তথ্যেই অনুদানের বিপুল বৈষম্য স্পষ্ট হওয়ায় বিতর্ক যে আরও তীব্র হবে, তা বলাই বাহুল্য।

আরও পড়ুন – বিহার থেকে বিজেপি নেতাকে পাঠানো বাইক ঘিরে উত্তেজনা! প্রতিবাদে সরব তৃণমূল

_

 

_

 

_

 

_

 

_

spot_img

Related articles

বিহার থেকে বিজেপি নেতাকে পাঠানো বাইক ঘিরে উত্তেজনা! প্রতিবাদে সরব তৃণমূল

বিধানসভা নির্বাচনের আগে বর্ধমান শহরে রাজনৈতিক উত্তেজনা বাড়িয়েছে বিহার থেকে ট্রেনে করে পাঠানো ৫৫টি মোটরসাইকেল। শনিবার বর্ধমান স্টেশনে...

পোষ্য নিয়ে বিবাদ: ধাক্কাধাক্কিতে মৃত্যু প্রৌঢ়ের, গ্রেফতার ভাড়াটিয়া প্রৌঢ়

পোষ্য নিয়ে বিবাদ লেগেই থাকত। বাড়ির মালিকের পোষ্যের আদর বেশি না ভাড়াটিয়ার (tenant) পোষ্যের। সেই বিবাদে এবার প্রাণ...

দমদম উত্তরে সেবাশ্রয়ের উদ্বোধনে মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য 

সেবাশ্রয়ের উদ্বোধন করলেন রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। রবিবার থেকে শুরু হল দমদম উত্তর বিধানসভার মানুষের জন্য সেবাশ্রয়। উত্তর...

কেন্দ্রের ব্যর্থতায় হাতির মৃত্যু! ঢাকা দিতে ম্যানগ্রোভ-‘অভিযোগ’ কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর

প্রথম বাংলায়। এবার অসমে। মর্মান্তিকভাবে মৃত্যু হল হাতির দলের। একসঙ্গে ট্রেনের ধাক্কায় এত হাতির মৃত্যু দেশের ইতিহাসে বিরল।...