রাজ্যে এসআইআরের খসড়া তালিকা ইতিমধ্যেই প্রকাশিত হয়েছে। যা নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্ক তুঙ্গে। এরইমধ্যে ইআরওদের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। ইআরও–দের না জানিয়েই ভোটার তালিকা থেকে একসঙ্গে বহু নাম বাদ দেওয়া হচ্ছে—এই অভিযোগ তুলে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক মনোজ আগরওয়ালকে(Manoj Agarwal) চিঠি দিল ডব্লুবিসিএস (এক্সিকিউটিভ) অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন(WBCS Officers Accociatation)।

সংগঠনের অভিযোগ, বাস্তবে জীবিত বহু ভোটারের নাম মৃত হিসেবে চিহ্নিত করে ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে এই ভোটাররা যদি আদালতের দ্বারস্থ হন, তাহলে সরাসরি সমস্যায় পড়বেন ইআরও–রাই।

ডব্লুবিসিএস (এক্সিকিউটিভ) অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের (WBCS Officers Accociatation) তরফে চিঠিতে দাবি করা হয়েছে, ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ যাওয়ার ক্ষেত্রে ইআরও–রা দায়ী নন—এ কথা রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিককে লিখিতভাবে স্পষ্ট করতে হবে। সংগঠনের বক্তব্য, এই পুরো প্রক্রিয়ার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশন এবং মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের। পাশাপাশি ভোটার তালিকা থেকে কোনও নাম বাদ দেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট ভোটারকে শুনানির সুযোগ দেওয়ার দাবিও তোলা হয়েছে।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, আইন অনুযায়ী কাউকে ভোটার তালিকা থেকে বাদ দিতে হলে তাঁর বক্তব্য শোনা বাধ্যতামূলক। কিন্তু সেই আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ না করেই তথ্য–প্রযুক্তির মাধ্যমে একযোগে বহু নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হচ্ছে। এর ফলে ভোটারের অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে এবং বহু যোগ্য মানুষ ভোট দেওয়ার সুযোগ হারাচ্ছেন বলে দাবি সংগঠনের।

সংগঠনের আরও বক্তব্য, ইআরও হিসেবে মূলত ডব্লুবিসিএস (এক্সিকিউটিভ) আধিকারিকরাই কাজ করেন। কিন্তু ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ পড়ার জন্য সাধারণ মানুষ ইআরও–দেরই দায়ী মনে করছেন। এর জেরে মাঠপর্যায়ে ইআরও–দের বিরুদ্ধে ক্ষোভ বাড়ছে। অথচ বাস্তবে নাম বাদ দেওয়ার বিষয়ে অনেক ক্ষেত্রেই ইআরও–দের কিছু জানানোই হয়নি।

ডব্লুবিসিএস (এক্সিকিউটিভ) অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের দাবি, ইআরও–দের তাঁদের আইনগত ক্ষমতা ও দায়িত্ব অনুযায়ী কাজ করতে দিতে হবে। যদি কোনও ইআরও–র বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে, তাহলে আগে তাঁর বক্তব্য শোনার সুযোগ দেওয়া হোক। আগাম শাস্তিমূলক ব্যবস্থা যেন না নেওয়া হয়। অতীতে এমন নজির রয়েছে, যেখানে দায় না থাকা সত্ত্বেও সামান্য ভুলের জন্য ইআরও–দের সাসপেন্ড করা হয়েছে বা তাঁদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়েছে বলেও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

সংগঠনের আশঙ্কা, যুক্তিসঙ্গত প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ দেওয়ার দায় ভবিষ্যতে ইআরও–দের ঘাড়েই এসে পড়তে পারে। অথচ চূড়ান্ত ভোটার তালিকায় শেষ পর্যন্ত স্বাক্ষর করতে হয় ইআরও–দেরই। তাই গোটা বিষয়টি বিবেচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন জানানো হয়েছে।

প্রসঙ্গত, নির্বাচন কমিশনের তরফে আগেই জানানো হয়েছিল, ভোটার তালিকায় অবৈধ ভোটারের নাম থাকলে তার দায় ইআরও–দের নিতে হবে এবং প্রয়োজনে শাস্তিমূলক ব্যবস্থাও নেওয়া হতে পারে। কমিশনের এই বক্তব্যের প্রেক্ষিতেই সংগঠনের তরফে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক মনোজ আগরওয়াল–কে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

–

–
–


