নিরাপত্তাজনিত উদ্বেগের প্রেক্ষিতে সুন্দরবনের দু’টি গুরুত্বপূর্ণ সেতুর জরুরি সংস্কার ও মেরামতির পরিকল্পনায় অনুমোদন দিল রাজ্য সরকার। প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে সেতুগুলির বেহাল অবস্থার কারণে সাধারণ মানুষের যাতায়াত ও পণ্য পরিবহণে ঝুঁকি বাড়ছিল। সেই পরিস্থিতি মোকাবিলায় দ্রুত পদক্ষেপের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

সুন্দরবন উন্নয়ন পর্ষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, দক্ষিণ ২৪ পরগনার মথুরাপুর–২ ব্লকের অধীনে রায়দিঘি থানা এলাকার বারাদানগর ও দক্ষিণ কঙ্কনদিঘি মৌজার সংযোগকারী স্টিল কাঠামোর কার্ট ব্রিজটির জরুরি মেরামতির কাজ শুরু করা হবে। স্থানীয়ভাবে ‘দড়ি টানা খেয়া’ নামে পরিচিত এই সেতুটি নাগেন্দ্রপুর ও কঙ্কনদিঘি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার মধ্যে যোগাযোগের গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। দীর্ঘদিন ধরে সেতুটির অবস্থা খারাপ হওয়ায় এলাকাবাসীর মধ্যে আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল। এই প্রকল্পে প্রায় ৪১ লক্ষ ৩৭ হাজার ৭৬৪ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে এবং কাজ শুরু হওয়ার পর ৯০ দিনের মধ্যে তা শেষ করার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। ‘প্ল্যান হেড’-এর আওতায় প্রকল্পটি নেওয়ায় একে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বাস্তবায়ন করা হবে।

এর পাশাপাশি রায়দিঘি উপবিভাগের মধ্যেই মনী নদীর উপর অবস্থিত রায়দিঘি সেতুরও জরুরি সংস্কারের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। রায়দিঘি ও কঙ্কনদিঘি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার মধ্যে সংযোগ রক্ষা করা এই সেতুটিতে ক্ষতিগ্রস্ত আরসিসি রেল পোস্ট, রেলিং ও হুইল গার্ড মেরামত করা হবে। পাশাপাশি নষ্ট হয়ে যাওয়া দু’টি এক্সপ্যানশন জয়েন্ট নতুন করে বসানো হবে। এই প্রকল্পের আনুমানিক ব্যয় ধরা হয়েছে ৪ লক্ষ ৬৬ হাজার ৮১০ টাকা এবং এখানেও কাজ শেষ করার সময়সীমা ৯০ দিন নির্ধারণ করা হয়েছে।
সুন্দরবন বিষয়ক দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, পরিবেশগত প্রতিকূলতার কারণে এই অঞ্চলের সেতুগুলির উপর নিয়মিত চাপ পড়ে। সময়মতো মেরামতি না হলে যোগাযোগ ব্যবস্থা সম্পূর্ণভাবে ভেঙে পড়ার আশঙ্কা থাকে। সেই কারণেই ক্ষয়ক্ষতি আরও বাড়ার আগেই জরুরি সংস্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

দু’টি প্রকল্প মিলিয়ে মোট ব্যয় দাঁড়াচ্ছে প্রায় ৪৬ লক্ষ ৪ হাজার টাকা। কাজগুলি দু’দফার দরপত্র প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বাস্তবায়িত হবে। প্রথমে কারিগরি যোগ্যতা যাচাই এবং পরে আর্থিক দর খোলা হবে। সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারদের সরকারি প্রকল্পে পূর্ব অভিজ্ঞতা ও আর্থিক সক্ষমতা থাকা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। সূত্রের খবর, এই কাজের সঙ্গে যুক্ত অদক্ষ শ্রমিকদের জাতীয় গ্রামীণ কর্মসংস্থান নিশ্চয়তা প্রকল্পের জব কার্ড থাকতে হবে। রাজ্য প্রশাসনের লক্ষ্য, নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই সেতু সংস্কারের কাজ শেষ করে সুন্দরবনের নদীঘেরা গ্রামীণ এলাকার মানুষের দৈনন্দিন যাতায়াত ও পণ্য পরিবহণে স্বাভাবিকতা ফিরিয়ে আনা।

আরও পড়ুন- রাজ্যের প্রথম মহিলা মুখ্যসচিব নন্দিনী চক্রবর্তী: স্বরাষ্ট্র সচিব জে পি মীনা

_

_

_

_
_


