উদ্দেশ্য আজকের ছাত্রদের মধ্যে বই পড়ার অভ্যেসকে উৎসাহিত করা। বই কেনার ইচ্ছেকে বাড়িয়ে তোলা। বিশেষত বাংলা বই, বাংলা শিশুসাহিত্যের প্রতি ছেলেদের আকর্ষণ বাড়ানো।

এই লক্ষ্য নিয়ে এই প্রথম কোনো স্কুলের মাঠে হতে চলেছে বইমেলা।

স্থান: মধ্য কলকাতার টাকি বয়েজ স্কুল।
তারিখ: 12/1/20
আয়োজক: টাকি বয়েজ অ্যালুমনি অ্যাসোসিয়েশন কলকাতা বা টিব্যাক।

নাম: টিব্যাক বইমেলা 2020।
থাকবে: শিশু সাহিত্য সংসদ, দেব সাহিত্য কুটির, লালমাটি, বর্ণপরিচয়, কিশলয়, নোশন, গুরুচন্ডালী থেকে শুরু করে বহু প্রকাশকের স্টল। গল্প, কমিকস, উপন্যাস, প্রবন্ধসহ সব রকম সম্ভার।

উদ্বোধন করে ছাত্রদের বইমাহাত্ম্য বোঝাবেন লেখক, সঙ্গীতকার ও পরিচালক অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়।

সঙ্গে বাড়তি আকর্ষণ জয়নগরের মোয়া মেলা। সহযোগিতায়: জয়নগর পুরসভা। টাটকা নলেন গুড়ের মোয়া, নলেন গুড়ের সিঙাড়াসহ ঐতিহ্যশালী বিভিন্ন পদ । এবং খাদ্যবস্তুর আরও আয়োজন।

সেই সঙ্গে ম্যাজিক শো এবং গান।

সেদিন টাকির প্রাক্তনী সংগঠন টিব্যাক আয়োজিত কার্নিভাল। স্কুলে উৎসব। অতীত ও বর্তমানের সেতুবন্ধন। সকাল থেকে এখনকার ছাত্র, অভিভাবক, শিক্ষকশিক্ষিকাদের কর্মযজ্ঞ। বিকেলে প্রাক্তনীদের মিলনমেলা।

এবারই প্রথম এই বারো বছরে পা দেওয়া উৎসবে শুরু হচ্ছে বইমেলা।
টিব্যাক সম্পাদক পার্থসারথি সাহা বলেন,” আমরা সরকারি বাংলা মাধ্যম স্কুলে পড়েছি। আমরা গর্বিত। সেই মূল্যবোধ টিকিয়ে রাখতে চাই। সময়ের সঙ্গে স্কুলে ইংরেজি মাধ্যমও শুরু হয়েছে। আমরা প্রাক্তনীরা এই স্কুলকে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করে চলি। স্কুলের শিক্ষকরাও ঐতিহ্য অটুট রাখতে বদ্ধপরিকর।”

প্রতিবার কার্নিভালে একজন বিশেষ অতিথি থাকেন যিনি এখনকার ছাত্রদের জীবনদর্শন বোঝান। প্রশ্নোত্তরে সামিল হন। মিঠুন চক্রবর্তী থেকে তৎকালীন নগরপাল গৌতম চক্রবর্তী; দেবশংকর হালদার থেকে শতাব্দী রায়; ফুটবলজগৎ থেকে জাদুজগৎ, তারকারা এসেছেন। এবার চন্দ্রবিন্দুর অনিন্দ্য।

টিব্যাক বছরভর কর্মসূচি চালায়। সকলের স্বাস্থ্যপরিষেবা, স্কুলের পরিকাঠামো উন্নয়নে সহযোগিতা করে। সম্পাদকের কথায়,” চারদিকে যখন বাংলা মিডিয়াম সংকটে, তখন আমাদের স্কুলে ভর্তির সময় প্রধানশিক্ষককে ঘেরাও থাকতে হয়, এটাই গর্বের। এই প্রাক্তনীতে 1969 থেকে 2019, পাশ করে বেরোন সবাই আছেন।”
পদাধিকারবলে টিব্যাক সভাপতি স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা স্বাগতা মল্লিক বসাক এক ভিডিওবার্তায় ছাত্রদের বলেছেন,” স্কুলের একমাত্র প্রাক্তনী সংগঠন টিব্যাক 12 জানুয়ারি যে দিনভর উৎসবের আয়োজন করেছে, তাতে সবাই সামিল হোক।”
তবে এটা স্পষ্ট, গতবার থেকে মোয়ামেলার সংযোজনে যে বাড়তি মাত্রা, এবার বইমেলা যোগ হয়ে সেই আকর্ষণ বহুগুণ বাড়তে চলেছে। বই পড়ায় উৎসাহ দিতে স্কুলের মাঠে নিজস্ব বইমেলা, একেবারে চমকে দিয়েছে টিব্যাক। সম্পাদক বলেন,” প্রক্শকরা আমাদের আবেগে সাড়া দিয়ে যেভাবে হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন, আমরা কৃতজ্ঞ। জায়গা আরও বেশি থাকলে, আরও অনেক বড় মেলা করা যেত।”
স্কুলেও ছোটদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ, বাঁটুল দি গ্রেট থেকে হাঁদাভোঁদা, সব পাওয়া যাবে হাতের মুঠোয়।
টিব্যাক অভিভাবকদের কাছে আবেদনে বলেছে: বই কিনতে ছেলেদের উৎসাহ দিন। বই পড়ুক। বই উপহার দিক। বই সংস্কৃতিতে অভ্যস্ত হোক।
সব মিলিয়ে যা প্রস্তুতি, তাতে আস্ত বইমেলার আয়োজন করে 12 তারিখ টাকি স্কুলের মাঠে ইতিহাস গড়তে চলেছেন প্রাক্তনীরা।